উত্তর কলকাতার কর্ণওয়ালইস স্ট্রিট। চারিদিক লোকের মাথা, গাড়ি, ট্রাম, বাস ইত্যাদি। যেদিকে ট্রাম লাইন চলছে শ্যামবাজারের দিকে, সেদিকে দু পা এগোলেই পরবে নরেন দত্তর বাড়ির সিংহ দরজা তারপর দু পা এর মধ্যে এক মস্ত গাড়ি বারান্দা। নীচে ফুটপাতে কিছু অস্থায়ী ঝুপড়ি। বাড়ির দেয়ালের দিকে তাকালে দেখতে পাওয়া যাবে বাংলা হরফে লেখা ঃ বসাক'স পুয়োর ফার্মেসি। জরাজীর্ণ এই বাড়িটি স্তাপিত ১৯১৯ সালে। গেটের পাসে এক ফলকে ডাক্তারের নাম লেখা।
এবার আসা যাক বাড়িটির ইতিহাসে। সালটা ১৭৬৪। ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির হাজার হাজার জাহাজ তখন আসছে ভারতে, সাথে আসছে ডাক্তারের দল। ডাক্তারেরা 'ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল সার্ভিস' এর অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু ইংরেজরা বুজল যে এতো ডাক্তার আনা সম্ভভ নয় তাদের পক্ষে। তাই ঠিক হল ২০ জন নেটিভ ডাক্তার নিয়োগ করা হবে। এর ফলে গড়ে উঠল মেডিক্যাল কলেজ। পাশাপাশি এল এক নতুন পেশা- ডাক্তারের সহায়ক বা কম্পউণ্ডার। রটে গেল কম্পউণ্ডারের দুটি পুরিয়াতেই সব রগ সেরে যাবে। বাংলা হয়ে উঠল দক্ষ কম্পউণ্ডারদের আঁতুড় ঘর।
ধীরে ধীরে কম্পউণ্ডাররা হয়ে উঠল অপরিহার্য। টাকার অভাব? ডাক্তারের ফিস এর টাকা নেই? সামনে ডাক্তার নেই? চাপ কি? কম্পাউন্দার আছেতো! এই ভাবেই কিছু কম্পউণ্ডাররা খুললেন 'পুয়োর ফার্মেসি'। সেখানে মিলত ইউরোপিয় ওষুধ। বাসাক'স ফার্মেসি আজোও বয়ে নিয়ে চলেছে সেই ইতিহাস। জীর্ণ হলেও অনেক জিবন্ত।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন