সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"যোগাসনের বিকল্প কিছু নেই" :শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায়


 

আজকাল সুস্থ থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকি। ইদানীং কালে খুব কম বয়সে হৃদরোগের কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে আরও জটিল প্রাণঘাতী রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। প্রতিদিন সময়ের তালে ছুটে চলার তাগিদে আমাদের জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। আর এই কঠিন সময়ে শরীরচর্চার যে সময়টুকু পাওয়া যায়, আমরা অনেকেই জিমে গিয়ে ভারী ভারী লোহালক্কর তুলে থাকি আবার অনেকেই ভোরবেলা হেঁটে থাকেন। প্রাচীন কাল থেকে যোগঅভ্যাস আর প্রাণায়ামের সুখ্যাতি আছে। অনেকেই অভ্যাস করে থাকেন। অনেকের জীবনে বদলে দিয়েছে যোগঅভ্যাস। তবে জিম না যোগঅভ্যাস এই নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক আছে। নাকি শুধুমাত্র হাঁটলেই মিলবে অনেক রোগ থেকে মুক্তি? তর্ক চলবেই। অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক পরামর্শ দিয়েই থাকেন তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে যোগঅভ্যাসের একটা বিরাট প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশেষত একটা সময় বয়স্করা প্রতিনিয়ত যোগঅভ্যাস করে থাকলেও ইদানীং সববয়সীদের মধ্যে এই প্রচলন দেখা যাচ্ছে। যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে জানালেন যে," যোগব্যায়ামের বিকল্প কিছু নেই। প্রাণায়াম এবং যোগব্যায়াম একজন মানুষকে সম্পূর্নরূপে বদলে দিতে পারে। মন এবং মস্তিষ্কের সংযোগ তৈরি করতে পারে।" যোগী শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে বললেন যে কোন কোন যোগঅভ্যাস এবং প্রাণায়াম করলে প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে ফিট থাকা যাবে।




প্রাণায়াম:-

অনুলোব বিলোব-শ্বাসপ্রশ্বাসের অন্যতম সেরা প্রাণায়াম হলো অনুলোব-বিলোব। সোজা হয়ে বসে, ঘাড় এবং মাথা সোজা রেখে এই প্রাণায়াম অভ্যেস করা উচিত। বাঁ নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ডান নাক দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়া উচিত। মূলত চার গুনে নিঃশ্বাস নেওয়া  তারপর আট গোনা অবধি অপেক্ষা করা এবং আট গুনতে গুনতে নিঃশ্বাস ছাড়া। এই প্রাণায়াম প্রতিদিন অভ্যাস করলে ফুসফুস সতেজ থাকে, রক্তচলাচল সতেজ থাকে। এছাড়াও ব্লাড প্রেসার ঠিক থাকে। দুঃচিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ভাসত্রিকা- বজ্রআসনে বসে এই প্রাণায়াম অভ্যাস করা ভাল। নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাত দুটো মাথার উপরের দিকে তুলতে হবে আবার জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাত দুটো নামাতে হবে।

কাপল ভাতী -এই প্রাণায়ামের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট আসনে বসে শরীরের উপরিভাগের অংশ সোজা রেখে নাক এবং মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়া এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে পেটটা ভিতরের দিকে ঢোকানো। এই প্রাণায়াম সঠিক ভাবে অভ্যাসের ফলে লিভার এবং কিডনি সুস্থ থাকে।

ভ্রামরী-
মাটিতে কিংবা চেয়ারে সোজা হয়ে বসে পায়ের উপর পা দিয়ে শরীরের ওপরের অংশ সোজা রেখে নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে হবে। তারপরে হাতের আঙ্গুল দিয়ে প্রথমে কান তারপরে চোখ এবং মুখ বন্ধ করতে হবে। এবার ধীরে ধীরে নাক দিয়ে নিঃশ্বাস বের করতে করতে ভ্রমেরর মতো আওয়াজ করতে হবে। কানের জন্য এই প্রাণায়াম খুব উপযুক্ত। শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় কথায়, " মূলত সকালে খালি পেটে প্রাণায়াম করা ভাল। যদি তা না সম্ভব হয় তাহলে অন্তত খাবার পরে দুঘন্টা বিরতি দিয়ে করলে বেশী উপকার পাওয়া যাবে।"
প্রাণায়াম দেহের বর্জ্য এবং বিষাক্ত পদার্থ নির্গত করতে সাহায্য করে। দেহের ভারসাম্য বজায় রাখে। প্রতিদিন এই প্রাণায়ামগুলো করলে দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল পাওয়া যায়। তবে শুধু প্রাণায়াম নয় এর সঙ্গে সঙ্গে নিন্মলিখিত যোগব্যায়ামগুলি করলে শরীর সুস্থ থাকবে।

শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, " সকালে উঠে কেউ যদি সূর্য প্রণাম করতে পারে তাহলে এর চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না। কারণ এতে ১২টি আসন আছে যা সমস্ত শরীরকে সুস্থ রাখে। তবে এটা সূর্য নমস্কার যদি করা সম্ভব না হয়ে থাকে তাহলে এই ছয়টি যোগ ব্যায়াম করলে খুব ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে।"  টাডাসনা ,ভীরভদ্রাসনা, ধনুরাসন, পবনমুক্ত আসন, অর্ধমৎসয়েন্দ্র আসন এবং বাধ্যাকসনা।

দীর্ঘ আট বছরের অভিজ্ঞতায় তিনি সুস্থ করেছেন স্পন্ডিলাইটিসিস, পিসিওস, ডিপ্রেশন এর মত জটিল সমস্যা। অনলাইনে ক্লাস করানোর পাশাপাশি তিনি সুশীলা বিড়লা গার্লস স্কুল এবং ক্যালকাটা পাবলিক স্কুলের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়াও তার নিজস্ব যোগা স্টুডিও রয়েছে, স্টুডিও আর্টিমিস।






মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভূতে ভয় পেলেও, ‘ সেক্সি ভূত’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় পাননি সায়ন্তনী

টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ডেবিউ করে ফেললেন দক্ষিণী সিনেমায়। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি আটপৌরেকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই হোলিতে সিনেমাটি রিলিজ করার পর থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। যদিও তার কারণ, তিনি এই প্রথম একটি ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি ‘ সেক্সি’ ভূতের চরিত্রে এবং তাঁকে নিয়েই গল্পটা গড়ে উঠেছে।  সিনেমার নাম, ‘ চিকাটি গাডিলু চিঠাকোটুন্ডু’। তেলেগু সিনেমায় কাজ করে বেশ উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনী। এখানেই শেষ নয়, তেলেগু ইন্ড্রাস্টির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে । ইতিমধ্যে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গল্পটিতে দেখা যায় দুই যুগল জুটি ছুটি কাটাতে গিয়ে আটকে যায় একটি ভৌতিক বাড়িতে।  সেখানে তারা একটি সেক্সি ভূতের পাল্লায় পরে। তারপর গল্প আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেই।  সায়ন্তনী আটপৌরেকে জানালেন , ‘’ আমাকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজ করে এই সিনেমার ব্যাপারে জানিয়েছেন! তাঁদের আমার চরিত্রটাও ভাল লেগেছে।‘’ ‘’ আপনাকে কেউ যদি রিয়েল লাইকে সেক্সি বলেন, সেটা আপনি কীভাব...

পুজো মিটলে কী করে থাকবেন ফিট, উপায় বাতলে দিলেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক ডাক্তার অনন্যা ভৌমিক

  আশ্বিনের শারদপ্রাতে বাঙালির পাতে ভরে উঠেছে হরেক রকমের খাবার। ঠাকুর দেখার সঙ্গে হরেক রকমের খাবার খেতেই হবে। রোল, চাউমিন, মোগলাই, চাইনিজ, বিরিয়ানি, ফুচকা এবং আরও কত কী! সারাবছর যারা শরীরচর্চায় মেতে থাকেন, খুব নিয়ম করে খাবার খান তারাও এই সময়টা একটু বেনিয়ম হয়ে পড়েন। তবে কুচ পরোয়া নেহি, পুজো মিটলেই আবার কী করে নিজের শরীরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন সেই কথায় আটপৌরেকে জানালেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক ডাক্তার অনন্যা ভৌমিক।  ১) পুজো মিটলেই আমাদের ফিরতে হবে আবার স্বাভাবিক জীবনে।  তাই পুজোর হ্যাংওভার কাটিয়ে নিতে ভীষণভাবে দরকার পড়বে প্রচুর পরিমাণ জলের। জল শরীরের বিষক্রিয়া দূর করতে সাহায্য করে। শরীরের প্রয়োজন মতো দিনে অন্তত তিন থেকে চার লিটার জল খেলে শরীর সুস্থ থাকবে। তবে যাদের বেশী জল খাওয়া বারণ আছে তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এছাড়া বাকিরা দিনে চার লিটার পর্যন্ত জল পান করলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রিত থাকবে।  ২) মরশুমি ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন। এছাড়াও নিয়মিত শাকসবজি খেতে হবে। ফল এবং শাকসবজিতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার এবং আন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরকে আবার স...

পনেরো মিনিটেই ফিট থাকার রহস্য, উপায় বাতলে দিলেন যোগগুরু

  আটপৌরের নিজস্ব প্রতিবেদন, নৈহাটিঃ  শরীরকে মন্দিরের আখ্যা দেওয়া হয়। আর সেই শরীরকে সর্বদা ঠিক রাখতে আমরা কত পন্থায় না অবলম্বন করে থাকি। আজকাল ইঁদুর দৌড়ের যুগ, আর এই যুগে সময় পাওয়া একটা বিরাট চ্যালেঞ্জিং বিষয়। সময় বের করে শরীর চর্চা করার মতো সময় আমাদের কতজনের হাতেই বা আছে? মনের সুখে ছুটির দিন হাঁটলেই কি আমাদের শরীর ঠিক থাকবে নাকি সপ্তাহে প্রতিদিন জিমমুখী হতেই হবে ? যেমন আইটি সেক্টরে কর্মরত পার্থ সারথী চক্রবর্তী সোম থেকে শুক্র অবধি দম ফেলার সময় পায় না, অথচ কিছুদিন হল সে ঘাড়ের ব্যথায় কাবু। আবার সদ্য বিয়ে করা কৌশিক ভট্টাচার্য ইদানীং অফিস ফেরত সস্ত্রীক হাঁটতে বেরিয়ে নিজেকে ফিট ভাবছেন অথচ গত তিনমাসে তার দশ কেজি ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও সে নিরুপায়, অফিস ফেরত ছাড়া তার সময় নেই। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে শরীর চর্চা আর হবে না। এই সময়ের অভাব অনেকেরই তা বলে কী শরীর সে কথা শুনবে। শরীরে বাসা বাঁধছে জটিল রোগ। দিনের পর দিন ওষুধ খেয়েও সেই রোগ সারছে না। তবে ইচ্ছে থাকলে উপায় আছে, বলছেন বিশিষ্ট যোগ গুরু রাহুল তিওয়ারী। আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানালেন যে খুব স্বল্প সময়ে ফিট থাকার জন্য কিছু প...