পুজো মিটলে কী করে থাকবেন ফিট, উপায় বাতলে দিলেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক ডাক্তার অনন্যা ভৌমিক
আশ্বিনের শারদপ্রাতে বাঙালির পাতে ভরে উঠেছে হরেক রকমের খাবার। ঠাকুর দেখার সঙ্গে হরেক রকমের খাবার খেতেই হবে। রোল, চাউমিন, মোগলাই, চাইনিজ, বিরিয়ানি, ফুচকা এবং আরও কত কী! সারাবছর যারা শরীরচর্চায় মেতে থাকেন, খুব নিয়ম করে খাবার খান তারাও এই সময়টা একটু বেনিয়ম হয়ে পড়েন। তবে কুচ পরোয়া নেহি, পুজো মিটলেই আবার কী করে নিজের শরীরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন সেই কথায় আটপৌরেকে জানালেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক ডাক্তার অনন্যা ভৌমিক।
১) পুজো মিটলেই আমাদের ফিরতে হবে আবার স্বাভাবিক জীবনে। তাই পুজোর হ্যাংওভার কাটিয়ে নিতে ভীষণভাবে দরকার পড়বে প্রচুর পরিমাণ জলের। জল শরীরের বিষক্রিয়া দূর করতে সাহায্য করে। শরীরের প্রয়োজন মতো দিনে অন্তত তিন থেকে চার লিটার জল খেলে শরীর সুস্থ থাকবে। তবে যাদের বেশী জল খাওয়া বারণ আছে তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এছাড়া বাকিরা দিনে চার লিটার পর্যন্ত জল পান করলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
২) মরশুমি ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন। এছাড়াও নিয়মিত শাকসবজি খেতে হবে। ফল এবং শাকসবজিতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার এবং আন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরকে আবার সতেজ রাখতে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয় হজম প্রক্রিয়াকেও তরান্বিত করবে। সবুজ শাকসবজি, বেরিস অর্থাৎ জামের মতো রসাল ফল কিংবা আমলকি, সাইট্রাস জাতীয় ফল অর্থাৎ কমলা লেবু, লেবু ইত্যাদি ক্রুসিফেরাস জাতীয় সবজি যেমন ব্রকোলি, ফুলকপি ইত্যাদি আর এভোগ্রাডো ফল খেলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পূরণ হবে।
৩) প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্য একদম ত্যাগ করুন। এতে প্রচুর পরিমানে নুন, চিনি এবং রাসায়নিক বস্তু থাকে থাকে যা দেহের পক্ষে ক্ষতিকর।
৪) পরিমাপ মতো চিকেন, মাছ ইত্যাদি লিন জাতীয় প্রোটিন শরীরে কোষের পুননির্মাণে সাহায্য করে। এছাড়াও লেগুমেস অর্থাৎ ডাল, মটর, বিনস, সোয়াবিন, বাদাম ইত্যাদি খাবার তালিকায় রাখুন। তাহলে শরীর একদম সতেজ থাকবে।
৫) হোল গ্রেন অর্থাৎ কুইনোওয়া, ওটস, ব্রাউন রাইস ইত্যাদি খাবার খাওয়া উপকারী।
৬) মদ্যপান কিংবা বিভিন্ন ঠান্ডা পানীয় একদমই খাওয়া ভাল নয়। প্রথমত মদ কিংবা এইসব ঠান্ডা পানীয় শরীরে জলের ঘাটতি তৈরি করে এছাড়া মারাত্মক ভাবে লিভারের ক্ষতি করে।
৭)গ্রীন টি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। গ্রীন টি শরীর থেকে বিষক্রিয়া দূর করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় গ্রীন টি খেলে শরীরের মেটাবলিজম রেট ঠিক থাকে।
৮) প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে প্রোবায়োটিক রাখুন। প্রোবায়োটিক দেহের খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে নষ্ট করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। যেমন টক দই, কিমচি, কেফির, সাউরকার্ট ( বাঁধাকপি থেকে তৈরি হয়) ইত্যাদি ডায়েটে রাখলে হজমে সাহায্য হবে।
৯) এছাড়া সঠিক সময়ে খাদ্য গ্রহণ করা। খাবার সময় নিয়ে চিবিয়ে খাওয়া। খাওয়ার সময় ফোন কিংবা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম থেকে বিরত থাকা। নিয়ম করে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুম জরুরী।
( ডাক্তার অনন্যা ভৌমিক
বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক
কোড ওয়েলনেস প্রাইভেট লিমিটেডের ফাউন্ডার)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন