বছর দশেক পর – (পর্ব
৩)/ আদিত্য
_” তোমার হাতটা বাড়িয়ে দাও “
-“কেন ? কি করবি ? “
- “দাও না “
- “কেন ? আগে বল কি করবি ? “
-“ ছুঁয়ে দেখব! একটা চুমু খাব তোমার
হাতে “
তুমি হাতটা কিন্তু বাড়িয়ে দিয়েছিলে।
আমি ছুঁয়ে দেখেছিলাম তোমাকে। একটা শিহরণ ছড়িয়ে পড়েছিল সারা শরীর জুড়ে। তারপর বহুবার
তোমায় ছুঁয়ে দেখেছি। কখন দালানে, কখন একলা ঘরে, কখন ঘুম না আসা রাতে। এরপরে আরও গভীর ভাবে ছুঁয়ে দেখেছি। মনে পরে জয়ী সেদিনের কথা। তোমার হাতের রান্না আমার
খুব প্রিয়। সেদিন মোগলাই করেছিলে আমার জন্য। সৃজা তখন আমার কোলে। ওকে জড়িয়ে ধরে চুমু
খেলে। আমারও খুব লোভ হচ্ছিল। বললাম,” আমি কি পাব না ? “ তুমি সেদিন আমায় খালি হাতে
ফেরাওনি। সেদিন আমার প্রচণ্ড আনন্দ হয়েছিল। একটা অসমবয়সী প্রেম যে আনন্দটা দিতে পারে,
সেটা আর কেউ দিতে পারবে না।
এরপরেও বহুবার আমরা অনুভব করেছি সেই
আনন্দটা। একটা ফ্যাকাসে বিকেল ঠিক যে ভাবে সন্ধ্যেকে কাছে পেলে আনন্দ পায়, ওকে জড়িয়ে
ধরে সব ব্যথা ভুলে যায়, ঠিক সেইভাবে।
জয়ী, আমরা জানতাম এই সময়টা আমাদের হারিয়ে
দেবে। আমাদের ভুলিয়ে দেবে একটা বিচ্ছন্ন প্রেমের গল্প। তুমি চিরকালই বয়সে বড় হওয়ার
সুযোগ নিয়েছ। তুমি জানতে কখন কোনটা করা উচিত। আমি এর কিছুই বুঝতে চাইনি । আমি সবসময়
তোমাকে কাছে পেতে চেয়েছি। জানো, তুমি অন্য কারুর সঙ্গে কথা বললেই আমার হিংসা হত। তুমি
সময়মত না এলে আমার রাগ হত। রাত্রিবেলায় ফোন না করলে তোমার সঙ্গে ঝগড়া করার ইচ্ছে হত।
সেদিন ২৫শে ডিসেম্বর,আমি আর সোহম মদ
খাচ্ছি। তোমার সঙ্গে কথা বলছি না। আমি রাগ করেছি তোমার ওপর। হঠাৎ টেক্সট করে বললে,” কাল চলে যাচ্ছি ।“ আমার পৃথিবীটা
একদিকে হেলে গেল। সব রাগ উবে গেল, আমি তখন অন্য নেশায় আচ্ছন্ন। ফোন করলাম। তারপর আমরা
দীর্ঘ একঘণ্টা কথা বলি। তারপর তেমন কিছু একটা মনে নেই। পরে শুনেছিলাম আমি নেশার ঘোরে
বমি করেছি। উল্টো-পাল্টা বকেছি। আসলে কোন নেশার ঘোরে এই কাণ্ডটা হয়েছে, সেটা তুমি চলে
যাওয়ার পর বুঝেছিলাম। জয়ী , তুমি আমার কাছে একটা নেশার মত। তুমি ছিলে বলেই আমি এখন
লেখার রসদ পায়, তুমি ছিলে বলেই একটা অধ্যায় সারাজীবন থেকে যাবে এই বাড়িতে। জয়ী, কেমন
আছ ? কেমন আছে কবিতারা ?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন