বছর দশেক পর- (শেষ পর্ব)/ আদিত্য
শেষের
থেকেই আবার শুরু করব। ঠিক যেখানে দাঁড়িয়ে তুমি সব শেষ করেছিলে, ঠিক সেখানেই। আমি দাঁড়িয়ে
ছিলাম তোমার অপেক্ষায়, তুমি জেগে ছিলে প্রতিদিনের মতো, কিন্তু এলে না। বাড়ির সামনে
প্রতিদিনের মতো আবর্জনা পরে, কূটনৈতিক সম্পর্কের তাগিদে হয়ত এখন বাড়িটা ভাগ হয়নি। মনে
পরে জয়ী, তুমি আসার পর কিন্তু এই দুই পরিবার এক হয়ে যায়। তারপর দেখতে দেখতে ছটা বছর
কেটে গেছে। হাসি-কান্নায় আমরা কাটিয়েছি অনেক দশমী! জয়ী, আমরা লতায়-পাতায় আত্মীয়। এটাই
আমাদের পরিচয়।
আমি
জানি , এর বাইরে আমাদের মধ্যে কোনও সম্পর্ক সম্ভব নয়। কিন্তু আমি মেনে নিতে পারি না।
আমি মেনে নিতে পারি না, তুমি অন্য কারুর কাছে থাক। এটা হিংসা নয়, এটা একটা ভালোবাসা।
নামহীন, প্রেমহীন একটা ফ্যাকাসে গল্পের অন্তঃসার।
তোমাকে
যেদিন প্রথম বলেছিলাম , আমাদের গল্পটা, সেদিন তোমার গালে টোল পরেছিল, মুখে ছিল অবুজ
প্রেমের হাসি। সেই দুপুরটা বড্ড আপন।
তুমি
নিজেই প্রত্যেকটা ব্যাপারকে জটিল করেছো। আমি এর কিছুই বুঝতে চাইনি। আসলে এখানেই
তোমার আর আমার মধ্যে পার্থক্য। দশ বছরের বড় হওয়ার এটাই সুবিধা। তুমি আমার চেয়ে
অনেক এগিয়ে। অনেকটা বৃত্তের মতো।
জানো
জয়ী, এখন দিনগুলো বাজে গেলে মনে হয়, তুমি এই এসে বলবে,” সব ভাল হবে “ , এখন একটা
অবোধ শিশুর মতো তোমার জন্য অপেক্ষা করি। জয়ী, মাঝে মাঝে ভাবতাম, তুমি যদি চলে যাও
তাহলেও তোমার কিছু এসে যায় না। কারণ তোমার একটা সংসার আছে, একটা গল্পের মতো জীবন
আছে। উল্টো দিকে আমার কাছে কিছুই নেই। ভয়
পেতাম, যদিও এখন পায়। না, তোমাকে হারানোর ভয় না। আমাদের সম্পর্কের ভয়। চিরকালই
আমরা সাস্পেক্ট ছিলাম, আছি এবং থাকব।
জয়ী,
তুমি যেখানেই দাঁড়াবে, সময়টা শুধু তোমাকেই খুঁজবে। সবকিছুই পাল্টে যাচ্ছে,
অভ্যাসটাও পাল্টে ফেলেছি। এখন তোমার রোদ ভেজা শহর অন্য গল্পের খোঁজে হাহুতাশ করছে।
মুম্বই আর কলকাতার সম্পর্কটা অনেক পুরনো। ওটা এর সহজে ভাঙবে না জয়ী।
আর
কিছু লেখার ক্ষমতা নেই! বাকিটা ঐশী লিখবে। সবটা জানে। একটা নতুন ভোরের খোঁজ করছে
ওর লেখা। কাঁচা হাতে অনেক কিছু পাবে, যা আমার মতো সাংবাদিকের লেখায় পাবে না। তোমার
জন্য শুধু রেখে গেলাম অনেক শ্রদ্ধা। আমি আর থাকব কিনা জানি, জানি না আর লিখতে পারব
কিনা, হয়ত বাকিটা ঐশী জানে। শুধু তোমার
নামটা বাদে । কোনওদিন প্রয়োজন পড়লে ওকে
বাকি গল্পটা বলে দিও! তোমার নম্বরও আছে ওর কাছে! ভালো থেকো জয়ী, ভালো থাক আমার
আদরের দাগ আর বৌঠান !
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন