বছর দশেক পর-(পর্ব ৪ ) / আদিত্য
আমি বারবার বলেছি, আমারা
খুবই আপেক্ষিক। আমরা খুবই অল্প। কিন্তু প্রত্যেকটা প্রেম কিছু না কিছু রেখে যায়।
কিছু না কিছু শিখিয়ে দিয়ে যায়। কিছু না কিছু থমকে দিয়ে যায়। জয়ী, আমাদের গল্পে
সৃজা কিন্তু একটা অধ্যায়। জানো, এই ছোট্ট মেয়েটা ছিল বলেই গল্পটা এত রোমাঞ্চকর,
এতটা রহস্যের। আমাদের বাড়িতে শেষ কবে এত আনন্দ এসেছে কে জানে ? কে জানে বাড়িটা এত
মুখর হয়েছে শেষ কবে ? সারাদিন একটা খুশির হাওয়া বয়ে চলত, সারাদিন আমরা ওকে নিয়ে
খুব ব্যস্ত থাকতাম। দাদু, দিদা, পিপি আর কাকাই এর মিষ্টি ডাকটা শুনতে শুনতে আমরা
সবাই এক হয়ে গেছিলাম। সৃজার কাছে কোন দরজায় বন্ধ থাকত না। কোন সিঁড়ি ওর কাছে বাঁধা
হয়ে দাঁড়ায়নি। ওর মত নিষ্পাপ মনটা আমাদের সব কিছু ভুলিয়ে দিয়েছিল। ছাদে গিয়ে
প্রতিদিন ফুল তুলত। ঠাকুরঘরে প্রতিদিন প্রনাম করত। আমার মোবাইলে “ আয় আয় টিয়ে ” না
শুনলে ওর হয়ত ঘুম আসত না। জানো জয়ী, সিঁড়ির একটা ধাপে আমার পাশে বসে ওযে কি আনন্দ
পেত, সেটা বলে বোঝাতে পারব না। মিচকি মিচকি হাসত। মনে হত আমরা যে কতদিনের প্রেমিক-
প্রেমিকা।
হয়ত ওর জন্যই তোমার তিনমাসের
গন্তব্য ছিল ঘোষবাড়ি। হয়ত সৃজাই বিভিন্ন অজুহাত ছিল আমাদের প্রেমের। জানো জয়ী,
একমাত্র সৃজাই আমাদের প্রেম করতে দেখেছে। আমি যখন তোমার গাল টিপতাম কিংবা তোমায় ছুঁয়ে দেখতাম, ও কিন্তু আমাদের
পাশে থাকত। কতবার আমাকে সৃজা নিজে হাতে খায়িয়ে দিয়েছে, কতবার আমাকে জড়িয়ে ধরে
ঘুমিয়ে পড়েছে, কে জানে ! ওকে খুব ভালবেসে ফেলেছিলাম জয়ী। হয়ত তোমার জন্যই আমি আবার
ভালবাসতে শিখেছি।
প্রতিদিন অফিস থেকে তাড়াতাড়ি
ফিরতাম শুধু তোমাদের জন্য। জানো জয়ী, আমি বলতাম না, একদিন আমাদের গল্পটা কেউ
লিখবে। জানো, ঐশী লিখছে আমাদের সম্পর্কের কথাটা। একমাত্র ঐশী বুঝতে পরেছে আমাদের
মধ্যে শুধু শ্রদ্ধা ছিল, আর কিছু নই।
জয়ী, আমি তোমাকে জন্ম দিয়েছি
অন্য রূপে। জানি, এর আগে তোমায় নিয়ে কেউ কাব্য করেনি। কেউ তোমার পথ চেয়ে বসে থাকেনি। কিন্তু তাও আমি
কোনদিনই তোমায় বুঝতে দিইনি আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। জয়ী আমরা তো প্রায় শেষ পর্বে
দাঁড়িয়ে, কিছু বলবে না ?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন