----------------------------------------------------------------------------------------------আদিত্য
অনেকটা জল বয়ে গেছে নদী দিয়ে। পাথরগুলো আরও ক্ষয়ে গেছে। মরছে ধরেছে ব্রেনে। আমি তখন উদাসী এবং একা। কাজ নেই। একটা বাঙালি মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে হয়ে ঠিক এই সময়ে যে চাপটা আসে, সেটাই আমায় তখন সূক্ষ করে দিয়েছিল। আটপৌরেও দিনে দিনে থমকে যাচ্ছিল। কোন শো নেই। রোজগারের রাস্তাটা প্রায় বন্ধ। শুধু হাতে গোনা কয়েকটা সেলিব্রিটি ইনটারভিউ ছাড়া। আদতে যতই ব্যস্ততা দেখাই, আমি কিন্তু চূড়ান্ত মনমরা। কিন্তু কাউকেই বুজতেই দিতাম না। এমনকি তোমাকেও না।
প্রায় এক বছর পর আমাদের দেখা হ্ল। ঠিক যেমনটা হয় প্রতিবছর পুজোর সময়। তবে এবারে নতুন সংযোজন সৃজা। এই ছোট্ট মেয়েটা আমাদের গল্পের একটা নতুন অধ্যায়। প্রথম কয়েকটা দিন একটা আত্মীয়তার ঘোরে কেটে গেছিল। তারপর শুরু হ্ল একটা কঠিন পথ।
একদিন জিজ্ঞাসা করলাম, “ আজ বিকেলে বেরোবে নাকি ? “
-“ হ্যাঁ! কিন্তু কি বলে বেরোব ? “
-‘’ বলবে আমার সঙ্গে যাচ্ছ “
একটু ইতস্তত হয়ে বললে , -“ মা কি ভাববে ? “
- “ কিছুই ভাববে না “
- “ আচ্ছা, তুই আগে বেরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকিস । আমি পরে বেরিয়ে দেখা করে নেব “
- “ আচ্ছা, তাই হবে “
সেদিন থেকেই আমাদের লুকিয়ে দেখা করা শুরু। এখন ভাবলে আশ্চর্য লাগে, একই বাড়ির মধ্যে থেকে আমরা লুকিয়ে দেখা করতাম। প্রথম উদ্দেশ্য ছিল আমরা রোগা হব। তাই হাঁটতে বেরচ্ছি। আসলে ওটা দুজন দুজনকে সান্তনা দিতাম। পরে এই লুকিয়ে দেখা করাটায় আমাদের পেয়ে বসল। সারাদিনের জমানো কথা গেল মুক্তি পেত এই বিকেল বেলায়। পরের দিকে যত রাগ, অভিমান সবই নাম পেত এই বিকেগুলোয়।
জানো জয়ী আমাদের একসঙ্গে হাঁটতে দেখে অনেকেই বলেছে, “ তুই কি বিয়ে কিরেছিস ? ওটা তোর বউ ? “
আমি উত্তর দিতাম না। এরিয়ে যেতাম। জানি না, ঠিক কতটা রোগা হয়েছি, তবে মাথার মধ্যে যে মেদগুলো জমেছিল, সেগুলো এখন গলে গেছে।
আমি কোনওদিনই ব্ল্যাক কফি খেতাম না, তাও আবার চিনি ছাড়া। তোমার সঙ্গে যে সন্ধ্যেগুলো কাটিয়েছি, সেগুলো আমার অভ্যাসকে পাল্টে দিয়েছে জয়ী। তুমি আমাকে বদলে দিয়ে চলে গেছো। এই পারিবারিক পলিটিক্সে তুমি জিতে গেছো।
জানো, তোমার প্রতি যে ভালবাসা ছিল, সেখানে শুধু শ্রদ্ধা ছিল। আমি কোনদিনই তোমার গায়ে আঁচড় লাগতে দিইনি।
আমারা কথা বলতাম সাহিত্য নিয়ে। কথা বলতাম কবিতা নিয়ে। আস্তে আস্তে আমারা একে অপরের অবসরের সঙ্গী হয়ে গেছিলাম। একদিন বললে, “ এই তিনমাস কি করব ? “ আমাকে নাটক দলে একটা সুযোগ দিবি ?” আমি বললাম, “ নাটকের দলে সুযোগ দিতে পারব কিনা জানি না , তবে আটপৌরেতে ভয়েস ওভার দিতে পার “ । তুমি বললে “সেটা কি ?” “ কিছুই না। কোন গল্প কিংবা কবিতাকে রেকর্ড করে আপলোড করা ।“
তুমি এককথায় রাজি হয়ে গেলে। জানো, আমারা আস্তে আস্তে এক হয়ে যাচ্ছিলাম। আমারা একটা নতুন উপন্যাস শুরু করতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু………………
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন