পর্ব-৪,
পুপুর সাহেব অর্থাত্ বাবাই ছিল পুপুর পাশের কলোনি র বাসিন্দা।
তার বাবা ওখানকার ই এক হাইস্কুল র বাংলার খুব নাম করা শিক্ষক , রাগী ও ছিলেন শোনা যায়।
পুপুর পরিবারের সাথে তার বাবার ভাল সম্পর্ক থাকলেও বাবাই এর সাথে তার কোনদিন যোগাযোগ হয়নি, তবে ছোটবেলায় পুপুর পাড়ার এক অনুষ্ঠানে সে কয়েকবার আসত অঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে বলে সেখানেই বার কয়েক দেখা হয়েছে তার সাথে পুপু র।
ছোটবেলা থেকেই মারকুটে দস্যু স্বভাব র পুপু
প্রতিবার অঙ্কনে প্রথম হত বাবাই, পুপুর ৯ বছরের ভাইটি বাবাই এর সাথে টক্কর দিতে না পারায় দ্বিতীয় হত সে,এটাই পুপু র সহ্য হয়না তাই সে বছর তুমুল ঝগড়া করে কমিটি র সবার সাথে "আমাদের পাড়ার অনুষ্ঠান বাইরের বড়ো ছেলেরা কেন পার্টিসিপেট করবে" বেচারা এসব শুনে মাথা নিচু করে চলেই যাচ্ছিল প্রতিযোগিতা ছেড়ে কমিটি র মেম্বার রা বুঝিয়ে বলে বাবাই কে পুপু কে ইটটু বকা দিয়েই শুরু হয় প্রতিযোগিতা,এবং পরের বছর দিয়ে করা হয় দুটি গ্রুপ। কিন্তু আর আসেনি আঁকতে বাবাই। তারপর কেটে গেছে ৭ ৮ বছর বাবাই কে আর দেখিনি সে।কিন্তু সে সুখ বেশিদিন তার কপালে সইল না , মাধ্যমিক এ দুর্দান্ত রেজাল্ট করে কলোনি র সোনার ছেলে হয়ে উঠেছিল সে , পুপু ভৌতবিজ্ঞান এ ৭০,সেখানে বাবাই ১০০/১০০ পাওয়ায় বাড়িতে পুপু আর তার কাকা র মেয়েকে বেশ হেনস্থা হতে হয়েছে।মনে মনে ভীষণ রাগ হয়েছিল পুপুর ,ছেলে টা জালিয়ে মারল তো এত বছর পর আবার...
ওসব মিথ্যে ওরা বাড়িয়ে বলছে বলে ব্যাপার টা ধামা চাপা দিতে চাইলেও শেষ রক্ষা হয়না, পুপুর দাদু বলে সে নিজে মার্কশিট দেখেছে। পুপুর রাগ আরও বাড়তে থাকে তার প্রতি। কিন্তু দুই বিপরীত মেরু ই যে পরস্পর পরস্পরের দ্বারা আকৃষ্ট হয় ফিজিক্স এর এই সূত্র টিকে সঠিক প্রমাণ করে নিজেরা এক ভালবাসায় আবদ্ধ হয়ে পড়ে। উচ্চ মাধ্যমিক র পর,
মুখপুস্তিকা র মাধ্যমে আলাপ তাদের। নানান রকমের কথোপকথনে কখন যে দুজন দুজনের কাছে আসতে শুরু করছিল বোঝেনি তারা। ১ লা সেপ্টেম্বর ভালবাসার কথা জানায় পুপুকে বাবাই।কি যে উওর দেবে সে ভেবে পায়না ,এই প্রথম ইকটু লজ্জা পেল সে... ফেরাতেও পারেনা তাকে এককথায় হয়তো চায়না ফেরাতে তাকে , কিছুদিন পর ১৫ই সেপ্টম্বর পুপুর সম্মতি জানিয়ে শুরু হয় তাদের ভালবাসার যাত্রার পথ শুরু।
বাবাই ছিল প্রাণিবিদ্যা র অনার্স এর স্টুডেন্ট। পুপুর
সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ার ইচ্ছে থাকলেও মেয়েদের ক্ষেত্রে তা রিস্কি নাকি, তাই এল.এল.বি নিয়ে সে সটাডি করতে শুরু করে সে।মেয়ে হয়ে জন্মানোর সাইড এফেক্ট র স্বীকার সে আগে ও হয়েছে ১৪ বছর বয়সে তার নাচ ছাড়তে হয়েছিল যেদিন। যাইহোক পুপুর সাথে বাবাই সম্পর্কের পথ বেশ সুগম মাঝে মাঝে দেখা করে তারা বালিগন্জের ফ্লাইওভারে,কখন শপিংমলে,পুপুর বরাবরই ব্র্যান্ডেড জিনিসের উপর লোভ তাই শপিংমলের প্রতি প্রেম তার ইকটু বেশী।
বাবাই এর আবার পড়াশুনোর প্রতি প্রেম। ভবিষৎ এ বড়ো সাইন্টিস্ট্ হিসাবে নিজেকে দেখতে চায় সে, তাই কী সেদিন তাকে ফোন করল? আর বলল... ,
জোরে এক আচমকা ঝাঁকুনিতে থতমত খেয়ে গেল সে। কী হল?
দিদিমনি কোর্ট এসে গেছে যে নামবেনা।?
এতক্ষন ধরে কিসব ভাবছিল সে? কেনই বা ভাবছিল?
নিজেকে কেমন পাগোল পাগোল লাগছিল তার ।
স্মৃতি গুলোকে পিছনে ফেলে ই-7 গেট দিয়ে কোর্ট রুমে প্রবেশ করে সে, ফোনটা সাইলেন্ট করতে গিয়ে দেখল...
ঠিক তখনই ছুটতে ছুটতে,
ক্লাইন্টের মা- ম্যাডাম আজ রাজুকে ছাড়বে তো?
পুপু- মম? ও হ্যাঁ , ইয়েস হোয়াই নট্? কাম উয়িদ মী অ্যান লেটস সি...,
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন