সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

২২শে শ্রাবণ


------------------------------------------------------------------------------------------------মোহনা


ঘটনাটা হয়ে যাওয়ার কয়েক মাস পর থেকেই, মিলি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলো। বন্ধুদের সাথে হইহুল্লোর, বড়ো বড়ো রেস্তারাঁয় প্রত্যেক ছুটির দিনে খাওয়া- দাওয়া, সবই প্রায় তখন নর্মাল। অন্তত সবার চোখে তো তাই ছিল।
মিলি, কিন্তু তখনও মনের ওই গাঢ় নীল অন্ধকারে ডুবেছিলো। মৈনাকের কথা তখনো যেন মুছে ফেলতে পারেনি, পুরোপুরি।
এক এক সময় ঘৃণা হতো, আবার এক এক সময় ওর ছবি আঁকড়ে ধরে কেঁদে উঠতো মেয়েটা।
কতবার নিজেকে প্রশ্ন করেছে, তাদের অত বছরের সম্পর্কটা বাস্তবে কি সত্যিই একটা অভ্যেস ছিলো? ভালোবাসার এক ফোঁটা ছোঁয়াও ছিলো না?
মাঝে সাতটা বছর কাটিয়ে দিয়েছে মিলি। এখন মৈনাকের স্মৃতিও অনেকটাই ম্লান। তার কথা আর সে ভাবে মনে পরে না মিলির।
হঠাত্ একদিন, শ্রাবণ মাসের বৃষ্টি মুখর রাতে, সবে অফিস থেকে ফিরে ফ্রেস হয়ে টি-ভি চালিয়েছে মিলি, তখনই একটা অচেনা নম্বর থেকে ফোন আস্তে বাদ্যযন্রটা ভোঁ-ভোঁ করে উঠলো।
ধীর গলায়, কানে মোবাইলটা দিয়ে, মিলি বলে উঠলো,
-হাই, হু ইজ্ দিজ্?
ওপারে কেমন নিস্তব্ধ। হঠাত্ কে ভাড়ী, চেনা গলায় বলে উঠলো,
-মৈনাক বলছি। কেমন আছিস?
মিলি চুপ। গলা দিয়ে তার স্বর বেড়োচ্ছে না। মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করে উঠলো। টি-ভির পর্দায় রং-বেরংগি ছবিগুলোর আভা তার মুখের ওই গাঢ়  কালো রংটা সরাতে পারলো না।
-হ্যালো? মিলি?
কথাটায় স্তম্ভিত ফিরে পেয়ে ধীর গলায় বলল,
-কি চাই? কেন ফোন করেছিস?
-ভালো আছিস তুই?
-সেটা নিয়ে তোর মাথা ব্যাথা না করলেও হবে। দরকার আছে কোন?
-হ্যাঁ, মানে, বলছিলাম, সহেলী কে মনে আছে তোর?
চোখের সামনে তখনই কলেজের স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেলো মিলির। স্মৃতির পাতা উল্টে মনে করতে চাইল,
- সহেলী, ইউ মিন তোর ওই বাবার বন্ধুর মেয়েটি? যে আমাদের জুনিয়ার ছিলো কলেজে?
-সব ভুলে যাসনি দেখছি! হ্যাঁ ওই।
-বেকার কথা না বলে ম্যাটারটা সরাসরি বল।
-হুঁ
কিছুখন চুপ করে থাকার পর মৈনাকের স্বর গম্-গম্ করে উঠলো মিলির কানে,
-সহেলী আর আমি, মানে আমরা, বিয়ে করছি, পরের মাসের ২০ তারিখে। কলেজের সব বন্ধুদেরই নিমন্ত্রণ পাঠিয়েছি। তুই ও আসিস কিন্তু।
-কন্গ্রাচুলেশান।
এইটুকু বলে, ফোন কেটে, গুম হয়ে বসে রইলো মিলি। স্থির। পলক পড়ছে না। হঠাত্ নাক ফুলিয়ে, চোখ লাল করে, রাগে ছুঁড়ে ফেলে দিলো মোবাইলটা। টুকরো টুকরো হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো যন্ত্রটা।
তার পরই বাইরে বৃষ্টির আছরে পড়া কণাগুলোর তীব্র আর্তনাদ।
মিলি চিত্কার করে বলে উঠলো,
-ইউ আর এ চিটার মৈনাক।
এ ডেভিল!
বাইরে সেই শ্রাবণ মাসের বেপরোয়া বৃষ্টি, আর ভেতরে একটি মেয়ের তিক্ত কাহিনী।।


মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভূতে ভয় পেলেও, ‘ সেক্সি ভূত’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় পাননি সায়ন্তনী

টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ডেবিউ করে ফেললেন দক্ষিণী সিনেমায়। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি আটপৌরেকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই হোলিতে সিনেমাটি রিলিজ করার পর থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। যদিও তার কারণ, তিনি এই প্রথম একটি ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি ‘ সেক্সি’ ভূতের চরিত্রে এবং তাঁকে নিয়েই গল্পটা গড়ে উঠেছে।  সিনেমার নাম, ‘ চিকাটি গাডিলু চিঠাকোটুন্ডু’। তেলেগু সিনেমায় কাজ করে বেশ উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনী। এখানেই শেষ নয়, তেলেগু ইন্ড্রাস্টির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে । ইতিমধ্যে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গল্পটিতে দেখা যায় দুই যুগল জুটি ছুটি কাটাতে গিয়ে আটকে যায় একটি ভৌতিক বাড়িতে।  সেখানে তারা একটি সেক্সি ভূতের পাল্লায় পরে। তারপর গল্প আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেই।  সায়ন্তনী আটপৌরেকে জানালেন , ‘’ আমাকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজ করে এই সিনেমার ব্যাপারে জানিয়েছেন! তাঁদের আমার চরিত্রটাও ভাল লেগেছে।‘’ ‘’ আপনাকে কেউ যদি রিয়েল লাইকে সেক্সি বলেন, সেটা আপনি কীভাব...

পনেরো মিনিটেই ফিট থাকার রহস্য, উপায় বাতলে দিলেন যোগগুরু

  আটপৌরের নিজস্ব প্রতিবেদন, নৈহাটিঃ  শরীরকে মন্দিরের আখ্যা দেওয়া হয়। আর সেই শরীরকে সর্বদা ঠিক রাখতে আমরা কত পন্থায় না অবলম্বন করে থাকি। আজকাল ইঁদুর দৌড়ের যুগ, আর এই যুগে সময় পাওয়া একটা বিরাট চ্যালেঞ্জিং বিষয়। সময় বের করে শরীর চর্চা করার মতো সময় আমাদের কতজনের হাতেই বা আছে? মনের সুখে ছুটির দিন হাঁটলেই কি আমাদের শরীর ঠিক থাকবে নাকি সপ্তাহে প্রতিদিন জিমমুখী হতেই হবে ? যেমন আইটি সেক্টরে কর্মরত পার্থ সারথী চক্রবর্তী সোম থেকে শুক্র অবধি দম ফেলার সময় পায় না, অথচ কিছুদিন হল সে ঘাড়ের ব্যথায় কাবু। আবার সদ্য বিয়ে করা কৌশিক ভট্টাচার্য ইদানীং অফিস ফেরত সস্ত্রীক হাঁটতে বেরিয়ে নিজেকে ফিট ভাবছেন অথচ গত তিনমাসে তার দশ কেজি ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও সে নিরুপায়, অফিস ফেরত ছাড়া তার সময় নেই। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে শরীর চর্চা আর হবে না। এই সময়ের অভাব অনেকেরই তা বলে কী শরীর সে কথা শুনবে। শরীরে বাসা বাঁধছে জটিল রোগ। দিনের পর দিন ওষুধ খেয়েও সেই রোগ সারছে না। তবে ইচ্ছে থাকলে উপায় আছে, বলছেন বিশিষ্ট যোগ গুরু রাহুল তিওয়ারী। আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানালেন যে খুব স্বল্প সময়ে ফিট থাকার জন্য কিছু প...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...