সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আজ চিকিৎসক দিবস



                                                             চিকিৎসক দিবস/তমাল সাহা

আজ রাত বারোটার আগেই
সমস্ত চিকিৎসক ও শল‍্যবিদেরা জীবাণুনাশক সাবানে হাত ধুয়ে ফেলবেন, মুছে ফেলবেন  ধবধবে সাদা অ‍্যাপ্রোনে লেগে থাকা কোনো রক্তের দাগ।
পরে চেম্বারের গদিআটা হুইলচেয়ারে বসে জেনে নেবেন পেশেন্ট পার্টি সমস্ত চার্জ ঠিকমতো জমা দিয়েছেন কিনা অথবা বিলটির অর্থেরপরিমাণ কত লক্ষ টাকা।
কারণ,কাল চিকিৎসক দিবস।তার আগেই হিসেব নিকেশ বুঝে নিতে হবে। কেননা কোনো শুভদিনে ব‍্যবসায়িক মনোবৃত্তির পরিচয় দেওয়া ভালো নয়।
কাল তো আবার এই হাতেই রোগীদের মধ্যে কমলা বেদানা আপেল  বিতরণ  করতে হবে
রোগীদের হাতে তুলে দিতে হবে দুধের গ্লাস, যদি সম্ভব হয় মুখের কাছে নিয়ে খাইয়েও দিতে হবে।
তাহলে সেটি আরো শোভনসুন্দর দেখাবে।

আজ চিকিৎসক দিবস
যিনি বিশিষ্ট চিকিৎসক তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে আজ এক পৌর স্বাস্থ্য সেমিনারে বক্তব্য রাখবেন। উপস্থিত থাকবেন শহরের অন্যান্য চিকিৎসক, সুধীজন ও সাধারণ মানুষ।
তার বাড়ির চেম্বারে রয়েছে দুটি প্রতিকৃতি। একটি পরিব্রাজক বিবেকানন্দ,অন‍্যটি ডাঃ বিধান রায়। তিনি সকালে স্নান সেরে এই দুই মনীষীকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন, তাদের সামনে সুগন্ধি ধূপ জ্বেলে দেবেন।
এরপর তার স্ত্রী তার হাতে তুলে দেবেন আজকের জন্য বিশেষ ধবধবে সাদা ট্রাউজার।আজ অবশ্য সব ডাক্তার বাবুরাই সাদা প‍্যান্টশার্ট পরে আসবেন।
কারণ আজ চিকিৎসক দিবস। তার উপর ডাক্তার রায় নিজেই সাফসুতরো সাদা ধুতি পাঞ্জাবি পরে পুরো বাঙলি মেজাজে থাকতেন। পোশাকের মাধ্যমে তাকে শ্রদ্ধাও জানানো যাবে।

আজ চিকিৎসক দিবস
 তিনি সম্মেলনে উপস্থিত হলেন
বক্তব্যে বলেন, কিভাবে ডাঃ বিধান রায় রোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন, পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই রোগ নির্ণয় করে ফেলতেন নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে।
আরও বলেন,বিধান রায়ের এক ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতা ছিল, তিনি ছিলেন ম‍্যাজিক ডাক্তার।
ভারতবর্ষের প্রথম প্রধানমন্ত্রীও তার থেকে চিকিৎসার পরামর্শ নিতেন।
এমন চিকিৎসক বিশ্বে দুর্লভ।
হয়তো তখন তিনি মনে মনে ভাবছেন,আমার মতো কামাইবাজ ডাক্তারও তো দুনিয়ায় বিরল।

তিনি বলেন,
শিশুদের তো তিনি খুবই ভালোবাসতেন
হয়তো তখন আবার তার মনে পড়ে যাবে
গতকাল এক মা প্রসবযন্ত্রণায় কাতর হলে
স্বাভাবিক জন্মে বাধা দিয়ে তিনি দেবদূতের মতো শিশুটিকে সিজারিয়ান বেবী বানিয়ে ছেড়েছেন।
আহা!তাকে দেখিয়েছেন পৃথিবীর প্রথম আলো আর তারপর কড় গুণে গুণে নিয়েছেন তিরিশ হাজার টাকা।

এরপরেই তিনি বলেন,
মনে রাখবেন পৃথিবীতে চিকিৎসকেরাই দ্বিতীয় ঈশ্বর। তারাই মানুষকে সুস্থ জীবন দিতে পারেন, মানুষের জন্মমৃত‍্যু তাদেরই হাতে।এই সামাজিক দায়বোধে আমাদের উজ্জ্বল হতে হবে।
 ডাঃ বিধান রায়কে স্মরণ করুন।
উনি নিজের বাসগৃহটি রোগনির্ণয় গবেষণা কেন্দ্রের জন‍্য উৎসর্গ করেছেন এবং নিজেকেও। আরো শুনুন, মহাপুরুষদেরই শুধু জন্ম ও মৃত্যুর দিন মিলে যায়। বিধান রায়েরও জন্মমৃত‍্যু একই দিনে।

আজ চিকিৎসক দিবস!
ভাষণ দিতে দিতে কেঁদে ফেললেন তিনি,
রুমালে চোখ মুছলেন।
তখন তার চোখ বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের দিকে। তিনি ঘড়ি দেখলেন। অপারেশনের সময় হয়ে গিয়েছে।
তিনি পড়িমরি টয়োটা ইনোভা গাড়ি করে ছুটলেন কর্তব‍্যবোধে...

আজ চিকিৎসক দিবস
ভারতীয় উপমহাদেশে কর্কটক্রান্তি রেখার নিচে মানুষের সুস্বাস্থ্য ও মানসিক শান্তি কামনা করে সাড়ম্বরে পালিত হলো লোকদেখানো  চিকিৎসক দিবস

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভূতে ভয় পেলেও, ‘ সেক্সি ভূত’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় পাননি সায়ন্তনী

টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ডেবিউ করে ফেললেন দক্ষিণী সিনেমায়। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি আটপৌরেকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই হোলিতে সিনেমাটি রিলিজ করার পর থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। যদিও তার কারণ, তিনি এই প্রথম একটি ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি ‘ সেক্সি’ ভূতের চরিত্রে এবং তাঁকে নিয়েই গল্পটা গড়ে উঠেছে।  সিনেমার নাম, ‘ চিকাটি গাডিলু চিঠাকোটুন্ডু’। তেলেগু সিনেমায় কাজ করে বেশ উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনী। এখানেই শেষ নয়, তেলেগু ইন্ড্রাস্টির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে । ইতিমধ্যে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গল্পটিতে দেখা যায় দুই যুগল জুটি ছুটি কাটাতে গিয়ে আটকে যায় একটি ভৌতিক বাড়িতে।  সেখানে তারা একটি সেক্সি ভূতের পাল্লায় পরে। তারপর গল্প আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেই।  সায়ন্তনী আটপৌরেকে জানালেন , ‘’ আমাকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজ করে এই সিনেমার ব্যাপারে জানিয়েছেন! তাঁদের আমার চরিত্রটাও ভাল লেগেছে।‘’ ‘’ আপনাকে কেউ যদি রিয়েল লাইকে সেক্সি বলেন, সেটা আপনি কীভাব...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

রোগ চিনে নেওয়ার বিভিন্ন উপায় বাতলে দিচ্ছেন ডাক্তার সোমনাথ বিশ্বাস

হৃদয়ঘটিত বিভিন্ন রোগের অশনিসংকেত বুঝবেন কী করে-( পর্ব ১) খাই খাই বাঙালির বুকে ব্যথা হবে না, এও কি সম্ভব? যুগে যুগে বাঙালি জাতি নিজেরাই ডাক্তারি করে মোটামুটি বুঝে নিয়েছে বুকে একটু-আধটু ব্যথা মানেই ওটা গ্যাসের সমস্যা। আসলে বাঙালি জাতি এটা মানতেই অস্বীকার করে যে বুকে ব্যথা হৃদয় ঘটিত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সেটা অনেক সময় হার্ট এট্যাক এর লক্ষণও হতে পারে। উঁহু, অযথা ভয় পাওয়ার জন্য নয় এই লেখা নয়। উপরন্তু এই লেখা শুধুমাত্র একটা প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তবে ডাক্তার বাবু বিশ্বাস মহাশয় কফি খেতে খেতে কহিলেন, " আধুনিক জীবনে আমি একটা স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করতে পারলে, বুকে হঠাৎ ব্যথা হলে একটা ইসিজি করিয়েও দেখতে পারি। আমরা যদি বুকে ব্যথা ব্যাপারটা চেপে যায় তাহলে আর কি আধুনিক হলাম, তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এত উন্নতি হয়ে লাভ কোথায়?" কফির কাপে চুমুক দিয়ে ডাক্তার বিশ্বাস আরও জানালেন যে, " আমাদের বুঝতে হবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেকটা এগিয়েছে, তার সঙ্গে আমাদেরও এগোতে হবে। বুকে ব্যথা মানেই গ্যাস এবং সঙ্গে সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ খাওয়া মানেই সমস্যার শেষ এটা ভাবা একদমই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।" একটু...