কাল রাত থেকে কালবৈশাখী মেটালিক বাজ্স অ্যাম্প্লিটিউডে নৃত্য করে গেল , নৃত্যর পর পরিবেশ কীম কাম কন্ডিশনে মেডিটেড করছে ঠিকই , কিন্তু কখন সূর্যদেব নিজের লাইট ওয়েভলেন্থ আর ইনটেনসিটি বাড়িয়ে শৈবতাণ্ডব শুরু করে দেন, বোঝা মুশকিল । আমাদের প্রাণ আবার ওষ্ঠাগত হয়ে যাবে । আজ আমি যা বলব তা হল ত্বকীয় সমস্যা । আমাদের ত্বক হল লাইন অফ ডিফেন্স । না না, মজা করছি না, ডাক্তারী পরিভাষাতেও ত্বককে ফার্সট লাইন অফ ডিফেন্সই বলা হয় । এতে আছে সেবামগ্রন্থি , ঘর্মগ্রন্থি , সেসব থেকে ঘাম,সেবাম,লাইসোজোম নিঃসৃত হয়ে দেহের প্রতিরক্ষার ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকে তো । পদ্মাবত সিনেমার রাওয়াল সেনার মতো, ঐ যে গড়দূর্গটা ছিল,তার বাইরের প্রাচীরটা আমাদের দেহে হল সুপারফিশিয়াল স্কীন । স্কীনে লাবণ্য সম্পর্কিত বিউটি টিপস দেব না,ওটা আমার থেকে ভালো ও বিশদে আপনারা জানেন, কিন্তু তা সুস্থ রাখার পরামর্শ দেব ।
১) বয়েল বা ফোঁড়া--- মারাত্মক বাজে একটা উপসর্গ । এই এক ফোঁড়া জীবন জ্বালিয়ে দিতে যথেষ্ট ।
Boilহওয়ার কারন--
** স্কীনে কিউটিনিয়াল লেয়ার বা স্ট্র্যাটাম জার্মিনেটিভামের নীচে আছে সাবকিউটিনিয়াস স্তর । লোমের কূপ বা হেয়ার ফলিকল এখানে গ্রথিত । ফলিকল মানে গাছের মূল । এই মূলে ইনফেকশন করে ব্যাসিলাস বা স্ট্যাফাইলোকক্কাস ব্যাকটেরিয়াম । হোয়াইট ব্লাড করপাসল , যেমন মনোসাইট লিম্ফোসাইট এই খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওখানে ছুটে যায় । যুদ্ধ করে । আইসোইমিউনাইজেশন হয় । তৈরী হয় বর্জ্য । বর্জ্যের উপাদান হল মরা কোশ, ব্যাকটেরিয়ামের দেহ, পাস বা পুঁজ, একে অ্যাবসেস বলে । অ্যাবসেস ত্বকের ওপরে চাপ দিয়ে ফুটে বেরোয় , ফোঁড়া হয় ।
** বেশী তেলমশলাযুক্ত খাবার খেলে দেহে ক্যাটাবলিজমে তৈরী হয় গ্যাসট্রোইনডিউজ থার্মিক কনডিশন । দেহের ত্বকীয় তাপমাত্রা বাড়ে । তার ফলে সাবকিউটিনিয়াল লেয়ারে সেল অ্যামরফিকেশন হলে একই ঘটনা ঘটবে । ফোঁড়া হবে ।
ফোঁড়ার ওষুধ--
টপিক্যাল অ্যান্টিবায়োটিক ।
সবথেকে ভালো ক্লিনডামাইসিন+অ্যাডালপেলিন+নি কোটিনামাইড । ডক্সিসাইক্লিন, সালফামেথেইক্লাজোল , সেফালেক্সিনও ভালো । এগুলো সল হিসেবে মলম পাওয়া যায় ।
২) অ্যাকনে -- ফোঁড়ার ছোটো ভাই । সাধারণতঃ মুখে হয় । কখনও ক্লিভেজের কাছে , পিউবিক রিজিয়নেও হয় ।
অ্যাকনের কারন---
** প্রধাণত পল্যুশন , এসব ডাস্ট পার্টিকলস এরোফিলিক হয়ে লোমকূপের মুখ বন্ধ করে দেয় । তারফলে ত্বকীয় বর্জ্য বেরোনোর পথ বন্ধ হয় , অ্যাকনে হয় ।
** পিসিওডি , এটা থাকলে হরমোনাল ডিসব্যালান্সের কারনে অ্যাকনে প্রকট হয় । দেখবেন এই কারনে যে অ্যাকনেটা হয় সেটা আইসোক্রোনাসবাইল্যাটেরাল সিমমেট্রি রুল ফলো করে। মানে , আপনার ডান গালে নাকের পাশে ঠোঁট থেকে ২সেন্টিমিটার উঁচুতে প্রথমে হলে দ্বিতীয়টাও মোটামুটি ঐ একই জায়গায় বাঁ গালে হবে ।
** রিপিটেটিভ অ্যাকনে , এটা ছেলে মেয়ে উভয়েরই অ্যাডলসেন্সের সময়ে হয় । এটা স্ট্রীমিং অফ গোনোডাল স্টেরয়েড হরমোনের কারনে হয় ।
অ্যাকনের ওষুধ--
১) ক্লিনডামাইসিন+অ্যাডালপেলিন ফসফেট অ্যাকনের মহৌষধী অ্যান্টিবায়োটিক, ১৫দিনে অ্যাকনে গায়েব হয়ে যাবে । ছোটো করে একটা পরামর্শ দেব । ব্র্যান্ড নেম বলা আমাদের বারণ, সরকার এককথায় রেজিস্ট্রেশন ক্যানসেল করে জেলে পুরে দেবেন । কিন্তু সাবধান করা আমার কর্তব্য । এই অ্যান্টিবায়োটিকটা অ্যাবট কম্পানিই একমাত্র ভেজাল ছাড়া তৈরী করে । অ্যাবট ছাড়া কিনবেন না ।
২) ডক্সিসাইক্লিন ফসফেট , এটাও ভালো ।
**** স্কীন ডার্মাটাইটিস বা ছোট rash--- এটা তো সবসময়ই হতে পারে, কারন বিভিন্ন । তবে ৯০% rash fungal infectionএর জন্য হয় ।
ওষুধ---
ক্লোট্রিমাজোল জাতীয় পাউডার ইউজ করুন ।
আরো বিবিধ স্কীন প্রবলেম থাকলে ছবিসহ বিশদে কমেন্টবক্সে হিস্ট্রি দিন ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন