------------------------------------------------------------------------------------------------------- Ayan Roy
বড় আশা করে এসেছি গো ...
আশা ছিল , তবে সেটা আশা নাকি মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির কামাল তা নিয়ে কনফিউশন থাকতে পারে | ছবি মুক্তির আগেই তা নিয়ে যেমন হইচই পড়ল তা দেখে মনে হতে শুরু করলো এই বুঝি এলো স্বর্ণযুগ | সব তারকারা তাদের অমোঘ উচ্চারণে ব্যক্ত করলেন যে এমন কাজ না কভি হুয়া হ্যায় অউর না কভি হোগা | তাই সদলবলে পয়লা জুন বাঙালি চলল ‘উমা’ বরণে |
কিন্তু , দেয়ার ইজ অলওয়েজ আ কিন্তু , সেই কিন্তু টাই বারোটা বাজাল সৃজিত মুখুজ্জের নতুন প্রজেক্ট উমার | শ্যামবাজার থেকে মিত্রা যখন হেঁটে যাচ্ছিলাম, মাইরি বলছি , মোমোর দোকানে , পিত্জার দোকানে , ব্র্যান্ডেড কা এর দোকানে, মিষ্টির দোকানে যেখানে সেখানে ছবির প্রমোশন , অর্থাৎ আপনি দেখতে বাধ্য ভাই , আপনার কোনো উপায় নাই , আমারও নাই যদিও | তাই আপনি যেমন কিছু ডাক উপেক্ষা করতে পারেন না , এইটাও না পারার সম্ভাবনা প্রবল |
গৌরচন্দ্রিকা শেষ , কথায় আসি , ছবির কথায় | ছবির শুরুতেই বোঝা যায় উমা নামের বাচ্চা মেয়েটি বেশিদিন নেই পৃথিবীতে , তাই বাবা তাকে কলকাতার পুজো দেখানে নিয়ে এলেন কলকাতায়, টাও আবার মার্চ মাসে | কলকাতার ফিল্ম জগৎ নেমে পড়ল সেই প্রজেক্ট সফল করতে | সেই প্রজেক্ট নিয়েই বাকি ছবি , ছবিতে চমক দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সৃজিত , তবে তা দূর্বল ন্যারেটিভ এবং ততোধিক দূর্বল এডিটিং এর জন্য কোনো চমক দেওয়া মুহূর্ত তৈরী করতে পারেনা | সমস্যার জায়গা এটাই , কোনো কিছুই ঠিকমত তৈরী হয় না , তার আগেই অন্য কিছু শুরু হয় | এত সবের মধ্যেও ছবিটা বসে দেখা যায় , যেত না , যদি না অঞ্জন দত্ত থাকতেন | তিনি তার অভিনয়ের নৌকায় তুলে গোটা ছবিটাকে বাঁচিয়েছেন ,তিনিই এই ছবির ‘NOAH’ | অনুপম রায়ের গান গুলি এমনি জুক বাক্সে শুনতে যতটা ভালো লাগে , ছবিতে ততটাই খারাপ | কারণ আপনি ভাবতেই পারবেন না , যখন তখন ,যেখানে সেখানে , ছবির ছন্দের সাথে সেটা যাক না যাক , গান এসে জুড়ে বসবে একটা গুম গুম তীব্র বেস সহযোগে | তবে কি সুরহীন এই ছবি , না না...... আছে বস আছে , সেখানে হাল ধরেছেন অঞ্জনপুত্র নীল | নীল দত্তের আবহ কিছু সিনে অন্য একটা ব্যাপার তৈরী করে , যে সুর অনুপমের তৈরী , সেই সুরের স্রেফ Arrangement পাল্টে সেটাকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন নীল |
উমার স্বপ্নপূরণের এই যে অভিযান , তার পথে বাধাও আসে , কিন্তু সেগুলি কে বাধা মনে হয়না | অনির্বাণ ভট্টাচার্য এমন একজন মানুষ যাকে যে কোনো চরিত্রে বসিয়ে দেওয়া যায় , যে কোনো অভিনয়ে অনির্বাণ তার যে টুকু কর্তব্য সেটুকু করেই নিজেকে প্রমাণ করে যায় | এই ছবিতে একমাত্র একটা জায়গায় মনে হয় চোখ ভিজে যায় , ঠিক তার পরেই অনির্বাণের সংলাপে দর্শক হেসে ওঠে হোহো করে | হয় সৃজিত সেটাই চেয়েছেন অথবা এটা মিসফায়ার | তবে একা যদি এই ছবি দেখতাম , তবে অনির্বাণের ওই “কি?” আমায় নিশ্চই অন্যরকম ভাবাত |
বাকিদের মধ্যে সারা সেনগুপ্ত খুব সাবলীল অভিনয় করেছে , কিন্তু অদ্ভুতভাবে যীশু সেনগুপ্ত কে মনে হয়েছে উনি খুব প্রিটেন্ড করছেন | অভিনয়ের মধ্যে সত্য খুঁজে পাওয়া খুব জরুরী হয়তো | রুদ্রনীল অন আদার হ্যান্ড অনেকখানি সামলেছেন ছবির শেষ দিকের ইমোশন |
এই গোটা ছবিতে অনেক ঘটনা , তবে এই ছবির ঘটনা মূল নয়, ইমোশন মূল | এই ইমোশনের বিলড আপ কিভাবে করবেন সৃজিত সেটা তার ব্যাপার , কিন্তু আমার মনে হয়েছে সেটা তৈরী হতে হতেও ভেঙ্গে পরেছে |
বড় আশা করে গিয়েছিলাম , সে আশা তো মিটলো না , ভাবলাম মিত্রা থেকে দু পা হাঁটলেই অমৃতর দই , যাই খেয়ে আসি | ওমা সেও বন্ধ | তা সে ভালো মিষ্টি দই হোক বা ভালো বাংলা ছবি , মুখের কথায় কি মেলে ? চাতক স্বভাব না হলে ?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন