সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অসুখঃ বিশেষ কলম



১) পিরিয়ড হলে মাথায় জল ঢালা উচিত না-----

এটা শুনি অনেককেই বলতে, আমার অবাক লাগে , বইপত্তরের পাঁজা ঘাঁটলাম, নাহ্! কোত্থাও তো এরম কিছু লেখা নেই । তবে লোকজন বলে কেন? আমি গভীরে নাড়াঘাঁটা করলাম বিষয়টা নিয়ে । তো, লাইব্রেরীতে রাশিকৃত হিপোক্রিটাসের আগের যুগের কিছু প্রি মেডিকাল হিস্ট্রি থেকে যা জানলাম তা হল--- আরে ব্যাপারটা কিছুই নয় , আগে লোকজন ওপেন জলাশয়ে স্নান করত তো, এসময় ওটা করলে জলটা দূষিত হয় । তাই ঐ সময়কালে লোকজন বারন করত ভয় দেখিয়ে । আপনি নিশ্চিন্তে হড়হড়িয়ে মাথায় জল ঢালুন । কিচ্ছু হবে না । সেরেব্রাম ঠান্ডা হবে । তবে হ্যাঁ, একটা প্রিকওশান দেবো , আপনার যদি পাইলস বা হিমারয়েড থাকে , গরম জলে বাথ নেওয়া অভ্যেস আপনার, এসময় ওই জায়গায় গরম জল লাগাবেন না, সেন্সিটিভ ইশু থাকে । মাথাতেও গরম জল ঢালবেন না, শরীর ডিহাইড্রেটেড হতে পারে, কষ্ট বাড়বে । 

২) দুপুরে ঘুমোলে ভুঁড়ি বাড়ে----

এটা তো সবার মুখে শুনেছেন । কিন্তু আপনার মনে মিথ তৈরী করা হয়েছে , হাফ কথা শুনেছেন, হাফ শোনেননি । আমার মত রাতে জাগতে অনেককেই হয়, বাঞ্ছনীয় কারনে , অনেকের প্রফেশনে তো শিড্যুলটা হয়ই বেশীরভাগ নাইট । তো দুপুরে টাইম পেলে ভুঁড়ি হওয়ার ভয়ে ঘুমোবেন না নাকি? না ঘুমোলে শরীরপাত হবে তো । আচ্ছা, আমি আসল কারনটা বলছি । শুনুন, শুধু দুপুর না, যেকোনো সময়ই হেভী মীল খাওয়ার সময় থেকে শুরু হয় ক্যাটাবলিজম , মানে ঐ এনার্জি লিবারেশন আর কী । প্রচুর এনার্জী তৈরী হলে তা কাজে না লাগলে কী হবে? ষ্টোর হবে অফ কর্স । কোথায় স্টোর হবে? সবচেয়ে বড় জায়গায় অফ কর্স । সবচেয়ে বড় জায়গা কী? আপনার সুবিশাল পেটটা, পেটের কোথায়? মস্ত বড় গ্ল্যান্ড লিভার , আর আশে পাশে ফাঁকা জায়গা বিস্তর , ওখানে জমবে । বাঙালীরা কী খায়? মেইনলী ভাত রুটি, প্রচুর কার্ব থাকে, কার্ব ডাইজেস্ট হয়ে সিম্পল গ্লুকোজ, সেলুলার কাজকর্মের পর একস্ট্রা গ্লুকোজ থেকে তৈরী হবে কমপ্লেক্স কার্ব গ্লাইকোজেন, ও নাচতে নাচতে চলে যাবে লিভারে । আর ফ্যাট ইনটেক গুলো? ওবাবাহ , পেটের অ্যাডিপোজগুলো তো ওদের বন্ধু , দুই বন্ধু একজায়গায় থাকলে কী হয়? সখ্যতা বাড়ে , তাই হবে , অ্যাপার্টমেন্ট তৈরী করবে আপনার পেলভিক সিলোম ও মাসলের আশপাশে । এক একটা ফ্ল্যাট দখল করে থাকবে । টায়ার বানাবে স্তরে স্তরে । আপনার কী হবে? ঝুলে যাওয়া থলথলে ভুঁড়ি ,  সেন্ট্রাল ওবেসিটি ।
তো এই কারনে, কোনো খাবার খেয়ে সটান শুতে যাবেন না । নরম বিছানাটা বড্ড প্রিয় না? আমারো তাই । ও মোহজাল বিছিয়ে কাছে ডাকবে, খবরদার যাবেন না, খাবার পরে মিনিট কুড়ি হেঁটে আসুন, পায়চারি,সিঁড়ি ভাঙা , এসব করে তবে যান বিছানায়, কেমন? 

৩) সর্দি কাশি জ্বর হলেই শুয়ে পড়ো----

এ কাজ খবরদার করবেন না । সর্দি মানে হল ওরোন্যাসাল সাইনাস থেকে শুরু করে মাথা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য সাইনাসে জমেছে মিউকাস, ফ্লুইড , এসময় আপনি চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে কী হবে বলুন তো? মাথা ধরে যাবে তো, সর্দি বেড়ে যাবে, কারন অ্যাক্সিস কনজেসটিভ অবষ্ট্রাকশন অফ ফ্লুইড । আচ্ছা ছাড়ুন খটমট নাম , আমি বলছি , ড্রেন দেখেছেন খুঁটিয়ে লক্ষ্য করে? জল কেন পাস করে ড্রেন দিয়ে? ড্রেন সামান্য ইনক্লাইনড বলে , মাটির সাথে পুরোপুরি প্যারালাল নয় কিন্তু । পুরো প্যারালাল হলে জল দাঁড়িয়ে যাবে, পাস করবে না । সেম ব্যাপার তো , আপনার সর্দির কাঁচা জল জমেছে সাইনাসে , আপনি সোজা শুয়ে আছেন, বডি অ্যাক্সিস প্যারালাল টু গ্র্যাভিটি , জল যাবে? জমে থাকবে তো ড্রেনে ড্রেনে, থুড়ি,ওরোন্যাসাল , স্নেইডেরিয়ান সাইনাস ডাক্টিউলে । আপনি মাথা সামান্য ইনক্লাইনড রাখুন শোওয়ার সময়, আপরাইট পজিশনে ডিউ টু অ্যালং গ্র্যাভিটি , সাইনাস বেয়ে জল নীচের দিকে আসবে, কনজেশন হবে না । 

৪) চিৎ হয়ে শুলে নাক ডাকে-----

এটা কমন প্রবলেম , নাক ডাকা । সারাদিন পর খেটেখুটে বিছানায় গিয়ে শুয়েছেন, ওমাহ্ , সেই মূর্তিমান উজবুক লোকটা চিৎ হয়ে শুয়ে খাট কাঁপাচ্ছে (উফফ -_- , নাক ডেকে) । আপনি এক গোঁতকা মেরে বললেন , "অ্যাই লোকটা!! চিৎ হয়ে শুয়ে ঘতঘত করে নাক ডাকছ কেন!! ঠিক করে শোও"  ।
না ম্যাডাম, রাগ দেখাবেন না বেচারার ওপর । কারনটা ওঁর চিৎ হয়ে শোওয়া নয় । কারন গভীরে । ওঁর হয়ত অবস্ট্রাকটিভ স্লীপ অ্যাপনিয়া আছে । বা আছে হয়ত ডেভিয়েটেড ন্যাসোসেপটাম । এয়ার প্যাসাজে বাধা পাচ্ছে, না না, খটমট নাম দেখে আঁতকে উঠবেন না । শুনুন , ওর ঘুমের বারোটা বাজিয়ে কাজ নেই, টেক সাম পিটি অন দ্যাট গোবেচারা পুওর হাজব্যান্ড, আপনি আমার কথায় কনসেনট্রেট করুন । ঐ যে কী কী সব গ্রাম্য শাক আছে না? থানকুনি? হেলেঞ্চা? এসব আচ্ছা করে খাওয়ান লোকটাকে । আরে না না, টোটকা দিচ্ছি না, আমি টোটকা দিই না, কারন আছে ফিজিওলজিকাল । আপনার স্বামীর রক্তে অক্সিজেন আপটেকে ঘাটতি আছে, এসব শাকগুলো ব্লাড অক্সিজেন রিআপটেক বাড়ায় , খাওয়ান, অ্যাপনিয়া দূর দূর করে পালাবে , নাক ডাকবে না । আর দ্বিতীয়টা যদি হয়, তাহলে বাপু আপনার লোকটা মাতৃজঠরেই বাঁকা নাকের পর্দা নিয়ে জন্মেছেন, ওই সামান্য তুচ্ছ ডেভিয়েশনের জন্য আপনি যদি প্রাণে ধরে লোকটাকে ওটি টেবিলে শোওয়াতে চান , শোওয়ান । তবে , আমি বলব দরকার নেই, থাক না , শান্ত নিরীহ পোষ্য লোকটা , অসুবিধে তো করছে না, ঘতঘত করে নাক ডাকছে ডাকুক , আপনি মধুর ধ্বনি মনে করে ঘুমোন না, আপনারও তো ক্লান্ত দেহ । মানিয়ে নিন, হাজার হলেও লোকগুলো বড্ড ভালো, তাই না বলুন? জেগে থাকলে আপনার কথার ওপর টুঁ শব্দটি তো করে না, ডিসটার্ব করবেন না ওঁকে । ঘুমোন, ঘুমোতে দিন । আলটিমেট পীস ।

আজ অনেক কমন সমস্যা বললাম, আশা করি কাজে লাগবে । আজ তবে আর নয়, আরেকদিন আরো বলব । আপনাদের ঝুলিতে আরো সমস্যা থাকলে কমেন্টে জানান, আমি তো আছিই সাধ্যমত হেল্প করব ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

"যোগাসনের বিকল্প কিছু নেই" :শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায়

  আজকাল সুস্থ থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকি। ইদানীং কালে খুব কম বয়সে হৃদরোগের কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে আরও জটিল প্রাণঘাতী রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। প্রতিদিন সময়ের তালে ছুটে চলার তাগিদে আমাদের জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। আর এই কঠিন সময়ে শরীরচর্চার যে সময়টুকু পাওয়া যায়, আমরা অনেকেই জিমে গিয়ে ভারী ভারী লোহালক্কর তুলে থাকি আবার অনেকেই ভোরবেলা হেঁটে থাকেন। প্রাচীন কাল থেকে যোগঅভ্যাস আর প্রাণায়ামের সুখ্যাতি আছে। অনেকেই অভ্যাস করে থাকেন। অনেকের জীবনে   বদলে দিয়েছে যোগঅভ্যাস। তবে জিম না যোগঅভ্যাস এই নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক আছে। নাকি শুধুমাত্র হাঁটলেই মিলবে অনেক রোগ থেকে মুক্তি? তর্ক চলবেই। অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক পরামর্শ দিয়েই থাকেন তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে যোগঅভ্যাসের একটা বিরাট প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশেষত একটা সময় বয়স্করা প্রতিনিয়ত যোগঅভ্যাস করে থাকলেও ইদানীং সববয়সীদের মধ্যে এই প্রচলন দেখা যাচ্ছে। যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে জানালেন যে," যোগব্যায়ামের বিকল্প কিছু নেই। প্রাণায়াম এবং যোগব্যায়াম একজন মানুষকে সম্পূর্নরূপে বদলে দিত...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

শীতের শহরে পারদ বাড়িয়ে দিলেন সায়ন্তনী, কালো পোশাকে ছড়িয়ে দিলেন মায়া

  শীতের ছুটিতে ছুটি কাটিয়ে ফিরলেন অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা। দক্ষিণ গোয়াতে জলকেলি করলেন উষ্ণতার সঙ্গে।  তাঁর কালো পোশাক পরিহিত ছবি মায়া ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। এই শীতে তাঁর উষ্ণ ছবি শহর কলকাতার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছে।  তাঁর এই গোটা ভ্রমণ স্পন্সর করেছিল ফার্ন হোটেল এবং ক্লিয়ারট্রিপ।  তাঁর ঝুলিতে একের পর এক হিট ছবির সারি। 'সমান্তরাল', 'উমা', 'এক যে ছিল রাজা'  কিংবা 'লালবাজার' মতো ওয়েব সিরিজে তাঁর সাহসী অভিনয় দর্শকদের কাছে তাঁর চাওয়া-পাওয়াটা বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু বড় পর্দায় নয়, ছোট পর্দায় 'কিরণমালা', 'জয়ী', 'সাত ভাই চম্পা'-এর মতো কাজ দর্শক আজও মনে রেখেছে। তিনি আগের চেয়ে অনেক পরিণত, অনেক বেশি কাজ নিয়ে বদ্ধপরিকর। অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা এখন শুধুমাত্র ভাল কাজের জন্য মুখিয়ে আছেন। মুখিয়ে আছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে সুপারহিট কাজ দিতে। শুধু বাংলা কেন, বাংলা ছাড়াও বাকি ইন্ডাস্ট্রি যেমন হিন্দি কিংবা সাউথ ইন্ডাস্ট্রিতেও ভাল চরিত্রে কাজ করতে  তিনি প্রস্তুত। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে মায়া - এর মতো হিট বাংলা ছবি।  ত্রিভুজ রিলিজ করতে চলেছে আর কিছু...