মুখোমুখি, আমি আর জয়ী- আদিত্য
এই শহরটা এখন মৃতপ্রায়! হয়ত আজ শহরের উষ্ণতম দিন। চারিদিক বড্ড গুমোট। দমদমের সেই বাঁশিওয়ালা একটা করুণ সুরে শান্তি
খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে। একটা ঝোড়ো বৃষ্টির অপেক্ষায় আছে সিটি অফ জয়! কার্নিশে
প্রেম নেই, ঠোঁটে নিকোটিন নেই। বিকেল হলে আবদার নেই, রাতে ঘুম নেই। রোদ ভেজা সকালে
তোমার চুম্বন নেই। আমরা এই গরমে বাষ্প হয়ে উবে গিয়েছি। উবে গিয়েছে আমাদের ভালবাসা!
মনে পরে জয়ী, সকাল হলেই দালানে তুমি স্নান করে
এসে দাঁড়াতে, ভেজা চুলে ছড়িয়ে কত স্নিগ্ধতা। তোমার বয়সের ছাপ ভেঙে শুধু ভালবাসা
ছড়িয়ে পরত উঠোনে! তারপর একটা ছুতো খুঁজে ঠিক তোমাকে ছুঁয়ে ফেলতাম, সম্ভব হলে চুম্বন
করতাম তোমার ডান হাতে! কী জয়ী , কী ভাবছ ? সময়টা যদি আবার ঠিক একইভাবে ফিরে আসত, তাহলে
কেমন হত ?
মুখোমুখি পর্বে দ্বিতীয় পর্বের প্রথমেই জয়ীকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, “ তুমি কি এলোমেলো
? ” জয়ী সরাসরি জানিয়েছিল, “ হ্যাঁ! জীবনে এলোমেলো, আগোছালো হওয়া দরকার। নয়ত জীবনটা
বড্ড একঘেয়ে হয়ে যাবে।’’
এই উত্তরটা পাওয়ার পর আমি কিছুটা থমকে ছিলাম। কারণ জয়ী আমাকে বারবার বলে, একটু
স্মার্ট থাক। নিয়মিত দাড়ি কাট। এত এলোমেলো কেন থাকিস ? হয়ত জয়ী আমাকে ওইভাবেই দেখতে পছন্দ করে। হয়ত
আমি জয়ীর কাছে একটু স্পেশাল। তবে আমি
জয়ীকে এলোমেলো থাকতে দেখেছি, কিন্তু সেটা প্রয়োজনে।
“ জীবনে কতবার প্রেম এসেছে ? ’’ জয়ী হাসতে হাসতে উত্তর দিল “বহুবার’’!আমি অবাক
হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, “ তারা কারা ?” জয়ী আবার হাসতে হাসতে উত্তর দিল, “ উত্তম কুমার,
শচীন এবং আরও অনেকে।”
আমার আর জয়ীর সম্পর্কটা হয়ত হওয়ার ছিল না! কিন্তু ঘটনাচক্রে আমরা একে অন্যকে
ভালবেসে ফেলেছি! এর আগেও বহুবার আমরা একসাথে থেকেছি, ঘুরতে গিয়েছি কিংবা আরও
কতকিছু! কিন্তু তখন মনে এই প্রেম প্রেম ভাবটা আসেনি।
হঠাৎ একদিন দমকা হাওয়ার মতো
তোমাকে ভালবাসতে ইচ্ছে করল। জয়ী তুমি শুনলে হয়ত অবাক হবে, আমিও ঠিক তোমর মতো
আমাদের মেসেজগুল ডিলিট করে দিতাম এবং এখনও দিই। আমিও চাই না আমাদের আসল সম্পর্কটা
কেউ জানুক। আমরা গোপনেই থাকি।
“ বিয়ের পর প্রেম এসেছে ? ” জয়ী কিছুটা থেমে উত্তর দিল না! আমি যদিও পরে বুঝেছিলাম
ওই বিরতির অর্থটা কী! আসলে ওই বিরতিটা ছিল আমাদের, আজও আছে আমাদের এবং থাকবে আমাদেরই। জয়ী তোমাকে আজ আবার
ছুঁতে ইচ্ছে করছে, ঠিক রোদ ভেজা সকালের মতো।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন