এবং আমি- আদিত্য
আমার ব্যক্তিগত কেচ্ছা দীর্ঘদিন ধরে লিখে চলেছি! হ্যাঁ, অন্তত আমার বন্ধুস্থানীয়
নিন্দুকেরা এমনটাই দাবী করে আসছেন। তাঁদের বক্তব্য ‘’এইসব নিজের খাতায় লেখ, সবাইকে
জানানোর কী আছে ?’’ আমি তাঁদেরকে বহুবার বলেছি, ‘’ গল্প তো নিজের জীবন থেকেই আসে! আর
আমি এত কল্পনাপ্রবণ নয় যে, একটা আস্ত উপন্যাস ভেবে ফেলব।‘’ আর যদি একটা রক্তমাংসের
জীবনে যদি গল্প লেখার প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকে, তাহলে অন্যকিছু থেকে ধার করতে যাব কেন?
অযথা রঙ চরিয়ে গল্প হিট করানোর জন্য আমি লিখি না! এককালে লিটিল ম্যাগাজিন করেছি। আমি
জানি একটা ম্যাগাজিন বিক্রি করতে কতটা তেল দিতে হয়। তাই ওইসব ন্যাকামিতে আমি আর নেই।
যদিও চেয়েছিলাম
লেখক হব, কিন্তু তালেগোলে একটু অন্য পেশায় যুক্ত ছিলাম! সেখানেও যদিও লিখতে হত, কোম্পানি
বেশ ভাল টাকাই দিত! যদিও সেই বাজারি সংস্থায় আমি আমার সাহিত্য লিখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু
দুর্ভাগ্যবশত অন্য কিছু লিখেছি।
আমি একটা ব্যাপার বেশ বুঝতে শিখেছি, জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের চাহিদাগুলো
আর সম্পর্কের কূটনীতি এমন ভাবে পাল্টে যায় যে, আমরা মাঝে মাঝে নিজেদের মা-বাবাকেও অস্বীকার
করি! যদিও সেটা সাময়িক এবং ভুলবশত।
জয়ীর সঙ্গে এখন মাঝে মধ্যেই কথা হয়! হয়ত সকালে টেক্সট করলে বিকেলে রিপ্লাই দেয়
কিংবা একটা ছোট্ট স্মাইলি পাঠায়। আর ফোন করার জন্য হাতে-পায়ে ধরতে হয়। জানি না, জয়ী
এটা করে ঠিক কী মজা পাই। আগের মতো এখনও ঠোঁটের আগায় অজুহাত সাজিয়ে রেখেছে। এখনও সেই মেয়ের মতো চুমু খেতে চাইলেই লজ্জা পেয়ে
ফোন রাখার ভয় দেখায়! জয়ী দিনে দিনে যৌবন হারাচ্ছে, তবুও আমার কাছে আগের মতোই উজ্জ্বল
এবং প্রানবন্ত! আজও আমাদের সম্পর্কটা কোনও ব্রিজের মতো ভেঙে পড়েনি, হয়ত আমরা আত্মীয়
বলে! ওই যে বলছিলাম না, জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের চাহিদাগুলো আর সম্পর্কের কূটনীতি
পাল্টে যায়! আমি ভাবি জয়ী আমার আত্মীয় না হলে, কবে আমার মতো ছেলেকে লেঙ্গি মেরে চলে
যেত। মুখের ওপর গালাগাল দিয়ে আমার শ্রাদ্ধ করত!
কিন্তু এসবের কিছুই হয়নি কারণ আমরা
আত্মীয়। এখানেই তো সম্পর্কের কূটনীতি। আমি জানি জয়ী মাঝে মধ্যেই আমার ওপর বিরক্ত
হয়, কথা বলতে চাই না কিন্তু ওই আত্মীয়তার দোহাই দিয়ে চেপে যায়। ভাল মেয়ের মতোই সব
সহ্য করে নেয়।
জয়ীর মতো এমন একটা মেয়ে যার সামনে অপেক্ষারত দারুন ভবিষ্যৎ, সে আমার মতো
মূর্খকে কেন ভালবাসতে যাবে? জয়ী হয়ত কোনও দিনই খুব সুন্দরী ছিল না, কিন্তু ওর
মধ্যে এমন কিছু একটা আছে যেটা আমি এড়িয়ে যেতে পারি না। আটকে যায়। ভালবাসতে শুরু
করি। কিন্তু জয়ী ? ওর চাহিদাটা আমি কোনও দিনই বুঝতে পারি না! হয়ত ওর কাছে সবই আছে!
একটা আদুরে স্বামী, একটা ছটফটে মেয়ে আর বিরাট ভালবাসা। এর চেয়ে বেশি হয়ত জয়ী কিছুই
চাই না।
কিন্তু যে জয়ীকে পাগলের মতো ভালবেসে যাচ্ছে, জয়ীর জীবনে তার ভূমিকাটা কী?
শুধুমাত্র প্রয়োজনের ?কিছু মানুষ শুধুমাত্র প্রয়োজনের জন্য সঙ্গী খোঁজে, আর কিছু মানুষ সঙ্গীর জন্য প্রয়োজন খোঁজে! দুটোই
ক্ষণস্থায়ী! দুটোই ব্যথা দেয়, যেমন আমাকে জয়ী দিয়েছিল।
তবুও এখনও জয়ীকে ভালবাসি,
ঠিক যেমনটা আগে বাসতাম। কোনদিনই জয়ীর নামে বদনাম করব না। জয়ীর আসল পরিচয় প্রকাশ
করব না, কারণ জয়ীকে কথা দিয়েছিলাম, আমরা একে অপরের জন্য থাকব । জয়ী কথা রাখেনি,
কিন্ত আমি আজও আছি। জয়ী মনে পড়ে, তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে বলেছিলে, ‘’ সব ভাল হবে’’...
তুমি খুব তাড়াতাড়ি অধ্যাপক হয়ে যাও , তারপর আবার তোমার প্রেমে পড়ব! শিক্ষক-
ছাত্রের প্রেমের মধ্যে একটা আলাদা মজা আছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন