সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

॥তোমার টেগোরের জন্য॥

----------------------------------------------- (সৌভিক)

আমার ফ্ল্যাটের রুফ কনসার্টে আজ তোমার ফেবারিট রবীন্দ্র ইভ। তুমি তো বলতে বিশেষ এই দিনটা কবিপক্ষের সূচনা। তোমার কাছে রবীন্দ্রনাথ মানেই তো ছিল একটা অনন্ত ধাঁধাঁ। তোমার সাথে এই এতো বছরের সম্পর্কে ওই একজন মানুষের উপরেই তো আমার যত অভিমান, আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটির ভালোবাসায় ভাগ বসালে ইনসিকিউর ফিল তো হবেই। আমার রকপ্রিয় দিন যাপনের গল্প তোমার জানা ছিল। ধারনাও ছিল আমার রোমান্টিসিজমের ছোটো খাটো একএকটা মুহুর্ত সম্পর্কে। তবু তুমি বলতে তার কিছু একটা এক্সফ্যাক্টর নাকি গোটা রক দুনিয়ার মাদকতার থিওরীকে ফেল করিয়ে দিতে পারে। চিরতরুণ কবি নাকি আমার চেয়েও অনেক বেশী রোমান্টিক, মেয়েদের ড্রিমপার্সন। নাকি ক্লিনসেভের আমলে ওরকম নজরকাড়া বিয়ার্ড টাই আকর্ষণের কারণ?তর্কটা আমার ববডিলান অার তোমার ব্র্যান্ড ঠাকুর মহাশয়ের মধ্যে থেমে থাকলে বোধহয় ভালো হতো। সেবারও রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিন এরকমই বৃষ্টি হয়েছিল। তুমি নন্দনের সামনে অনেক্ষন অপেক্ষা করেছিলে, বলেছিলে আজ পরিচয় করিয়ে দেবে সেই মানুষটির সাথে যে নাকি প্রতিদিন তোমাকে নতুন ভাবে আমায় ভালোবাসতে শেখায়। কিন্তু আমি তো আসিনি সেদিন। তারপর এতোগুলো বছর কেটে গেলো। শুনলাম রবীন্দ্রভারতী থেকে বেরিয়ে এখন মস্ত গায়িকা হয়েছো।রবীন্দ্রসঙ্গীতটা তখনও বেশ ভালো গাইতে,কিন্তু আমিই বুঝিনি; এসরাজ তবলা হারমোনিয়াম সেতারের সুর কিভাবে উপেক্ষা করে গেছি, কেন করেছি তার উত্তর নেই আমার কাছে আজও। "তার ছিঁড়ে গেছে কবে" জানি না নতুন মানুষ এসেছে নাকি তোমার জীবনে...টেলিভিশনের পর্দায় ব্যক্তিগত জীবনটা তো জানা সম্ভব নয়। যাই হোক কেমন আছেন তোমার রবীন্দ্রনাথ ? আজ এই রুফকনসার্টের পূরো প্ল্যানিংটাই আমার।হ্যাঁ... জানি তুমি বিশ্বাস করবে না। আজ কিন্তু তোমার অাইডলের সাথে আমার কোনো বিবাদ নেই। আমি এখন মনে প্রাণে একজন রবীন্দ্রপ্রেমী। তুমি চলে যাওয়ার পর প্রতিটা ক্ষণে টেগোর আমাকে তোমার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে জানো। ঠিক তোমার মনের কাছাকাছি একজন মানুষ। শুধু তুমিই দূরে। রবীন্দ্রনাথ আজও একই ভাবে বসে আছেন আমাদের মিলনের দ্বার খুলে। আজ দুপুর থেকেই ঘনকালো একটা থমথমে আবহাওয়া। কিছু কি নতুন করে ঘটাতে চলেছেন তোমার সেই এক্সফ্যাক্টর দাড়িওয়ালা মনের মানুষ। বঙ্গ্ল্যামারাস এই সন্ধ্যায় অ্যাপার্টমেন্টের রুফে হঠাৎ করেই প্রাণ ফিরিয়ে দিলেন রবীন্দ্রনাথ। একটা গেট টু গেদর ও বটে। ছেলেদের সেই পরিচিত নকশার কাজ করা সাদা পঞ্জাবি আর বঙ্গসুন্দরীদের আটপৌরে শাড়ি ও খোঁপায় বাঁধা রজনীগন্ধায় চারিদিকটা অনেকটা তোমার রবির হোমগ্রাউন্ড শান্তিনিকেতনের চেহারা নিয়েছে। গিটার পিয়ানো মাউথওরগান সব কিছুই অ্যারেঞ্জড করেছি... হারমোনিয়ামটাও কিন্তু ভুলিনি। পোস্টারসাটা দেওয়ালে শুধুই তোমার জীবনের ফার্স্টবেস্ড পুরুষটির ছবি আর নিয়ন আলোয় ভেসে আসা হালকা টিউন "আমারো পরানো যাহা চায়"। সবাই যে যার মত করে সন্ধ্যেটা সেলিব্রেট করছে বটে তবে আমি এই মুহূর্তে অপেক্ষা করছি আমাদের আজকের স্পেশাল গেস্টের জন্য। ওই তো তুমি এসে গেছ!! আহা কি অপূর্ব লাগছে তোমায় এই সাবেকি কালো শাড়িতে, পোড়ামাটির সেই হালকা অরনামেন্টস, খোলা চুল...কপালে এখনো "র" আঁকো....হুম রবীন্দ্রনাথ আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে তাহলে। আমি একটুকু চুপ করে রইলাম। আজ এই পূরো আয়োজন তোমার জন্য। তুমি ছাড়া এসন্ধ্যা বৃথা যেত। তুমি নিশ্চিত জানো না তোমাকে দেওয়া ইনভিটেশন কার্ডটা আমার হাতে লেখা। শুধু যারা দিতে গিয়েছিল তারা তোমায় জানতে দেয়নি এই সবকিছু আমার চোখের বালি কে একবার দূর থেকে কাছে পাওয়ার জন্য ছিল। সেদিন বুঝিনি সেদিন চিনতে পারিনি তোমার প্রাণের ঠাকুরকে। আধুনিকতার একপেশে রুটিন মাফিক জীবনে কতবার হেলায় হারিয়েছি তোমার রবীন্দ্রপ্রিয় জীবনকে। নন্দিনী তুমি আজকে আমার নিরালায় উঁকি দিয়েছ-"বাহির হয়ে এসো তুমি যে আছো অন্তরে"...."প্রাণো ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে তুমি আরো আরো দাও প্রাণ"...শেষবেলায় গেয়ে গেলে "যে রাতে মোর দুয়ার গুলি ভাঙ্গল ঝড়ে"....এখনো ভালোবাসো আমায়? অনুষ্ঠান শেষ। তুমি চলে যাবে এবার। একবার শেষ গানটা শুনে যাও..... আমি গাইব। যেদিন তুমি অভিমান রেখে চলে গেছিলে আমার সাথে ছিল শুধু "i have heard ten thousand whispers and nobody listening"। আজ টেগর আমাকে অনেক পরিণত করে দিয়েছে। আমি দুটো রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্কুল চালাই। ছুটির দিনে বাচ্চাদের সাথে অনেকটা সময় কাটিয়ে আসি। ওদের গান শুনি....ওদের দৌলতে অনেকটা পরিচিতি হয়েছে টেগোরের সাথে... অল্পঅল্প সুর এসেছে গলায়। আমি আড়াল থেকে সামনে এসে মাইক্রোফোনে শেষ গানটা গাই তবে? "তুমি রবে নীরবে".... ওভাবে কি দেখছো নন্দিনী। হ্যাঁ এটা আমি। তোমার স্বার্থক। আমি জানি তুমি বিস্মিত...তোমার পা কাঁপছে...তোমার চোখ ছলছল করছে....তোমার কথা হারিয়ে গেছে। কিন্তু অনেক কথা বাকি আছে যে।আমি আর পারলাম না যে তোমার সামনে না এসে থাকতে। তোমার টেগোর যে বিচ্ছেদ পছন্দ করেন না... দূরত্ব চান না। "তোমায় গান শোনাব তাই তো আমায় জাগিয়ে রাখো ওগো দুখজাগানিয়া"......॥                        

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভূতে ভয় পেলেও, ‘ সেক্সি ভূত’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় পাননি সায়ন্তনী

টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ডেবিউ করে ফেললেন দক্ষিণী সিনেমায়। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি আটপৌরেকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই হোলিতে সিনেমাটি রিলিজ করার পর থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। যদিও তার কারণ, তিনি এই প্রথম একটি ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি ‘ সেক্সি’ ভূতের চরিত্রে এবং তাঁকে নিয়েই গল্পটা গড়ে উঠেছে।  সিনেমার নাম, ‘ চিকাটি গাডিলু চিঠাকোটুন্ডু’। তেলেগু সিনেমায় কাজ করে বেশ উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনী। এখানেই শেষ নয়, তেলেগু ইন্ড্রাস্টির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে । ইতিমধ্যে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গল্পটিতে দেখা যায় দুই যুগল জুটি ছুটি কাটাতে গিয়ে আটকে যায় একটি ভৌতিক বাড়িতে।  সেখানে তারা একটি সেক্সি ভূতের পাল্লায় পরে। তারপর গল্প আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেই।  সায়ন্তনী আটপৌরেকে জানালেন , ‘’ আমাকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজ করে এই সিনেমার ব্যাপারে জানিয়েছেন! তাঁদের আমার চরিত্রটাও ভাল লেগেছে।‘’ ‘’ আপনাকে কেউ যদি রিয়েল লাইকে সেক্সি বলেন, সেটা আপনি কীভাব...

পুজো মিটলে কী করে থাকবেন ফিট, উপায় বাতলে দিলেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক ডাক্তার অনন্যা ভৌমিক

  আশ্বিনের শারদপ্রাতে বাঙালির পাতে ভরে উঠেছে হরেক রকমের খাবার। ঠাকুর দেখার সঙ্গে হরেক রকমের খাবার খেতেই হবে। রোল, চাউমিন, মোগলাই, চাইনিজ, বিরিয়ানি, ফুচকা এবং আরও কত কী! সারাবছর যারা শরীরচর্চায় মেতে থাকেন, খুব নিয়ম করে খাবার খান তারাও এই সময়টা একটু বেনিয়ম হয়ে পড়েন। তবে কুচ পরোয়া নেহি, পুজো মিটলেই আবার কী করে নিজের শরীরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন সেই কথায় আটপৌরেকে জানালেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক ডাক্তার অনন্যা ভৌমিক।  ১) পুজো মিটলেই আমাদের ফিরতে হবে আবার স্বাভাবিক জীবনে।  তাই পুজোর হ্যাংওভার কাটিয়ে নিতে ভীষণভাবে দরকার পড়বে প্রচুর পরিমাণ জলের। জল শরীরের বিষক্রিয়া দূর করতে সাহায্য করে। শরীরের প্রয়োজন মতো দিনে অন্তত তিন থেকে চার লিটার জল খেলে শরীর সুস্থ থাকবে। তবে যাদের বেশী জল খাওয়া বারণ আছে তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এছাড়া বাকিরা দিনে চার লিটার পর্যন্ত জল পান করলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রিত থাকবে।  ২) মরশুমি ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন। এছাড়াও নিয়মিত শাকসবজি খেতে হবে। ফল এবং শাকসবজিতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার এবং আন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরকে আবার স...

পনেরো মিনিটেই ফিট থাকার রহস্য, উপায় বাতলে দিলেন যোগগুরু

  আটপৌরের নিজস্ব প্রতিবেদন, নৈহাটিঃ  শরীরকে মন্দিরের আখ্যা দেওয়া হয়। আর সেই শরীরকে সর্বদা ঠিক রাখতে আমরা কত পন্থায় না অবলম্বন করে থাকি। আজকাল ইঁদুর দৌড়ের যুগ, আর এই যুগে সময় পাওয়া একটা বিরাট চ্যালেঞ্জিং বিষয়। সময় বের করে শরীর চর্চা করার মতো সময় আমাদের কতজনের হাতেই বা আছে? মনের সুখে ছুটির দিন হাঁটলেই কি আমাদের শরীর ঠিক থাকবে নাকি সপ্তাহে প্রতিদিন জিমমুখী হতেই হবে ? যেমন আইটি সেক্টরে কর্মরত পার্থ সারথী চক্রবর্তী সোম থেকে শুক্র অবধি দম ফেলার সময় পায় না, অথচ কিছুদিন হল সে ঘাড়ের ব্যথায় কাবু। আবার সদ্য বিয়ে করা কৌশিক ভট্টাচার্য ইদানীং অফিস ফেরত সস্ত্রীক হাঁটতে বেরিয়ে নিজেকে ফিট ভাবছেন অথচ গত তিনমাসে তার দশ কেজি ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও সে নিরুপায়, অফিস ফেরত ছাড়া তার সময় নেই। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে শরীর চর্চা আর হবে না। এই সময়ের অভাব অনেকেরই তা বলে কী শরীর সে কথা শুনবে। শরীরে বাসা বাঁধছে জটিল রোগ। দিনের পর দিন ওষুধ খেয়েও সেই রোগ সারছে না। তবে ইচ্ছে থাকলে উপায় আছে, বলছেন বিশিষ্ট যোগ গুরু রাহুল তিওয়ারী। আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানালেন যে খুব স্বল্প সময়ে ফিট থাকার জন্য কিছু প...