বেশ কাটছিল দিন।এগোচ্ছিল বন্ধুত্ব।হয়তো বা তৈরী হচ্ছিল অন্যকিছু।
সেবার আমি গেলাম মুম্বাই।আগেই বলেছি,কলকাতার পর জয়ীর বাসস্থান হয়েছিল মুম্বাই।নেভি মুম্বাইতে বিশাল বড়ো দু-কামরার ফ্ল্যাট।মুম্বাইয়ের অন্যতম পশ্ এরিয়া।
নাহ্ আমার ঐ দুশো-আড়াইশো বছরের ঝিমিয়ে থাকা বাড়ির কাছে-এ এক এলাহি ব্যাপার।
কোনরকম প্ল্যান ছিল না যাওয়ার ।কয়েকদিনের সিদ্ধান্তে চেপে বসলাম ট্রেনে।একা।
সেইসময় বেশ কিছু ব্যক্তিগত কারণে কলেজ ছেড়েছি।বাবা-মা চিরকালই আমার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে এসেছে।কলেজ ছাড়া নিয়েও তাঁরা বাধা দেয়নি।বাবার ও শারীরিক অবস্হা সেসময় খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না।তবু সেই দিকটা কিছুটা সামলানো গেছিল।মানসিকভাবে খুব একটা ভালো পরিস্হিতিতে ছিলাম না।সাথে লেখাজোখাটাও এগোচ্ছিল না ঠিকঠাক।নাটক-থিয়েটারও ঝিমিয়ে এসেছে।এককথায় “এইমলেস লাইফ”।
অনির্দিস্ট কালের জন্য চললাম জয়ীর বাড়ি।
.
.
.
মুম্বাই যাওয়াটা আমার জীবনের জন্য ঠিক কতোটা ঠিক বা ভুল ডিসিশান সেটা আমি আজও বুঝিনি।
পৌঁছালাম “গেটওয়ে অফ্ ইন্ডিয়ায়”।একটা অন্য শহর।অনেক মানুষের স্বপ্নের শহর।আমার কাছে সেইমূহুর্তে মুম্বাই আলাদা করে গুরুত্বপূর্ণ না থাকলেও আজ দাঁড়িয়ে অনেকটা।
কলকাতার থেকে অনেক অনেকটা বড় একটা শহর।নাহ্ কলকাতাকে খুঁজিনি বললে মিথ্যে বলা হবে।কিন্তু বেশ কিছুদিন থাকার পর বুঝলাম শহরটা অন্যরকম।একদম আলাদা।কলকাতার সাথে তুলনায় যাওয়াটা বৃথা।
দিনগুলো পেরোচ্ছিল অন্যরকম ভাবে।নিজের পরিচিত জায়গা ছেড়ে,চেনা মানুষগুলোকে ছেড়ে অনেকটা দূরে কাছের কাউকে পাওয়া।
সেই প্রথম আমার জয়ীর সাথে মদ খাওয়া।তারপর যতদিন ওখানে ছিলাম,প্রায়দিন রাতেই আমরা বসতাম।গল্প হতো।আড্ডা হতো।
প্রতিমূহুর্তে জয়ী একটু একটু করে আমার জীবনের উপর প্রভাব ফেলতো।
কলকাতা থেকে যে ক্ষত নিয়ে আমি মুম্বাই আসি সেটা একটু একটু করে সারছিল।
মুম্বাই এর বিখ্যাত স্ট্রীট ফুড,মেরিন ড্রাইভ,কখনো বা হঠাৎ করে ট্রেনে চেপে অনেক দূর চলে যাওয়া-এইসব করেই কাটছিল দিনগুলো।
কোথাও হয়তো ওই দূরের শহরে আমি বা জয়ী দুজনেই আমাদের কলকাতা কে খুঁজে চলেছিলাম।
পেরোতে থাকলো সময়...
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন