এখন মরচে ধরেছে দেওয়ালে! শুধু দেওয়াল নয়, স্মৃতিতেও। চোখের
দৃষ্টি ঝাপসা হয়েছে। কোনও কান্নার আওয়াজ আর ঘুম ভাঙায় না ঝরা বসন্তে। তোমার দেওয়া অবাঞ্ছিত
জলীয় বাষ্প এখন উবে গেছে অন্য শহরে। প্রেমের রঙ নীল নয়, ফ্যাকাসে হয়ে উঠেছে। ক্রমশ
ঝড় এগিয়ে আসছে ঈশান কোনে। বুঝতে পেরেছিলাম আমরা, তবুও কেউ ভুলে যাওয়ার কথা বলিনি। আমরা
শুধু কয়েকটা দিনের জন্য এক হয়ে গেছিলাম।
বৌঠান আর আমার সম্পর্কটা বড্ড আপন ছিল। আমরা
একে অপরের পরিপূরক ছিলাম। অবসরের সঙ্গী ছিলাম। তখন জয়ী আসিনি এই গল্পে। তখন কোনও রাগ-
অভিমানের জন্ম হয়নি। তখন শুধু আমি আর বৌঠান। প্রচণ্ড শ্রদ্ধা আর ভালবাসা। ব্যস, এই
ছিল জীবন।
“ কর্নেল সমগ্রটা শেষ করলে ? “
“ না, একদম সময় পায়নি”
“ তোমার তো কোনও কিছুতেই সময় নেই”
‘’ বাজে বকিস না! যা পড়তে বস “
“ মেয়ে কী করছে ? “
“ এখনও ঘুমোচ্ছে’’
“ উঠলে আমার কাছে দিয়ে যেও’’
“ দেখব ‘’
“ এতে আবার দেখার কী আছে ? “
“ ঘুম থেকে উঠলে ওকে খাওয়াব। তারপর চান করাব, তারপর আবার
সে দাদানের সঙ্গে ঘুরতে বেরবেন … “
“ থাক! পাঠাবে না বললেই হয়।“
“ তাহ্লে তাই”
“ পাঠিও না তাহ্লে”
“ তুইও কেমন বাচ্চাদের মতো করিস”
“ আমি তো চিরকাল তোমার কাছে বাচ্ছাই! বছর দশেকের ছোট।‘’
‘’ আবার বাজে বকছিস! পড়তে বস”
এইভাবেই তুমি আমাকে আটকে রেখেছিলে বৌঠান। সৃজাকে অনেক
সময়ই দূরে রেখেছ আমার থেকে। জানো, এই ছোট্ট মেয়েটাও জয়ীকে দেখেছে। শুধু তুমি দেখনি।
তুমি একটা কাল্পনিক গল্পের রূপকথার মতো। জানি, তুমি কোনওদিন
আমার আর জয়ীর সম্পর্কের কথাটা মেনে নিতে পারনি। জয়ী বিবাহিত হলেও, আমাদের সম্পর্কের
টানটা অন্যছিল। জয়ী, একজন মা হয়েও আমাকে কিন্তু কোনওদিনই অস্বীকার করতে পারিনি। শুধু
আমাকে এড়িয়ে যেত ভয়ে। বৌঠান, জয়ী চূড়ান্ত সোজাসাপটা মানুষ হলেও শেষের দিকে প্রচণ্ড
জটিল হয়ে উঠেছিল।
‘’ একটা স্ক্রিপ্ট
লিখেছি”
“ শুনি, কী লিখেছিস”
সেদিন একটা শীতের দুপুর, আমি আর বৌঠান ঘরে।
“ একটা অসমবয়সী প্রেমের গল্প, একটা সিটি অফ পরাজয়ের গল্প”
তুমি আপনমনে অন্য পানে চেয়ে হয়ত বুঝতে পেরেছিলে, জয়ী জন্ম
নিচ্ছে চুপিসারে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন