- -------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------Partha Ghosh
বৌদি একটু দেখি, মালটা ঢোকাব।
পুরুষ কণ্ঠ তপ্ত শলাকার মত কর্ণপটহে ছেঁকা দিল বাংলার শিক্ষিকা তপোজা
মিত্রের।
ক্রোধ মিশ্রিত আকস্মিকতায় চমকিত হয়ে সে তার মুঠো ফোনের উজ্জ্বল পর্দা
থেকে অন্তর্জালের মোহ ছিন্ন হওয়া কাজল টানা কালো দীঘল চোখের ভ্রুকুটি আঁকা বক্র
দৃষ্টি নিক্ষেপ করল সামনে, সামান্য নীচু হয়ে দাঁড়ান পুরুষটির দিকে। কমলা কোয়া ওষ্ঠ কম্পিত হল দ্বেষ বমনের
উদ্দেশ্যে ।
পুরুষ? তা বটে, তবে তাকে লোক না বলে ছেলে বলাই সমিচীন। বয়স আন্দাজ ত্রিশের কোঠায়। রুক্ষ চুল আবিন্যস্ত, পেটাই শরীর ঘর্মাক্ত। গায়ের জামাটা জায়গায় জায়গায় সেলাই করা বহু ব্যবহৃত। প্যান্টের আবস্থাও তথৈবচ। গালে অল্প অল্প দাড়ি গোঁফ। দুদিনের মধ্যে ব্লেড পড়েছে বলে মনে হয় না। পরিশ্রান্ত ক্লান্ত চোখে সরলতার ছাপ।
ওকে দেখে ওষ্ঠ ফাঁক হল কিন্তু ক্রোধ বাক্য নিঃসৃত হল না, থমকে
গেল। তপোজা ওকে চিনতে পারল।
-
আরে! রাখাল না?
সরলসিধা খেটে খাওয়া ছেলে। পড়াশুনার ঝুলি ফাঁকাই বলা যেতে পারে। সেদিক থেকে বাংলার শিক্ষিকার বাংলার ওপর
সাহিত্যের দক্ষতায় বাংলা ভাষার ভয়ংকর বাক্যের দ্বৈত অর্থের চমকপ্রদতা তাকে
চমকিত করলেও রাখাল নামক যুবকটি ভাষার মারপ্যাঁচ বোঝে না। সোজা সাপটা যা তার মুখে যোগায় সে
তাই বলে। তপোজা বোঝে এই বাক্যে কোন
অশ্লীলতার গন্ধ নেই। রাখাল জানেও না তার
বলা বাক্যটির দুটি অর্থ কি বার্তা বহন করছে। মনে মনে হাসে সে।
মনের গহণে উচ্চারিত হয় – আ মরি বাংলা ভাষা।
আকাশ পথে ভেসে থাকা বিমানের বায়ূবৃত্তে পড়ার মত তপোজা একটা ছোটো
ধাক্কায় বাস্তবে ফেরে। দু’পা একটু
ডানদিকে সরায়। রাখাল তার দড়ি বাঁধা বিশাল
ব্যাগ, যাকে রাখালরা গাঁটরি বলে সেটাকে ঠলে ঠেলে চলমান ট্রেনের বসার জায়গার নীচে
ঢুকিয়ে দেয়, তপোজা যেখানটা বসে আছে ঠিক তার নীচে। তারপর হাতদুটো প্যাণ্টে মুছে তপোজার দিকে তাকিয়ে বলে – হ্যাঁ বৌদি,
আমি রাখাল। আপনাকে প্রথমে চিনতে পারিনি।
অনেক দিন পরে দেখলাম তো।
-
আমি কিন্তু তোমায় ঠিক চিনেছি, কি বল?
তপোজার রাগ, চমক, বাঁকা চাহনী,
ভ্রুকুটি এখন স্বাভাবিকতা প্রাপ্ত হয়েছে শেষ দেখা কিশোর রাখালের যুবক শরীরের দিকে
তাকিয়ে।
-
তুমি এখন কোয়ায় থাক রাখাল? কি কর?
এই এতবড় ব্যাগটাতেই বা কি আছে? এটা তো খুব ভারি।
ভীড় ট্রেনে এভাবে....অভ্যাস রয়েছে বলেই তো মনে হচ্ছে!
-
প্রায়ই বইতে হয় তো বৌদি, তাই অভ্যেস
হয়ে গেছে।
-
কি আছে ওতে?
-
কাপড়। কাপড়ের ব্যবসা করি। মানে আমি ঠিক করি না, আমার বৌ করে।
-
তোমার বৌ! তুমি বিয়ে করেছ? তা ভাল।
তা, কতদিন হল?
-
এই তো তিন বছর।
-
শ্বশুড়বাড়ি কোথায়?
-
কাছেই। মলির বাবা রিক্সা চালাত। আমাদের বাড়ী থেকে দুটো পাড়া পর ওদের বাড়ি । আমি সাইকেল সারাইয়ের দোকানে যখন কাজ করতাম। আপনাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে পেটের দায়ে কাজ
শিখেছিলাম। আমার তো সাতকূলে কেউ ছিল না।
রাত্রে ওখানে শুতাম আর সারাদিন ওই দোকানে কাজ শিখতাম। মলির বাবা রিক্সা সারাতে আসত। আমার কাজ ভালো লাগল। পরিচয় হল।
তারপর সম্পর্ক তৈরি হল। মলি ছোটো বয়সে
মা হারা। একদিন আমাদের বিয়ে হল। তারপর....
-
তারপর?
-
মলির বাবার স্ট্রোক হল। রিক্সা চালান বন্ধ হয়ে গেল । মারাও গেল কিছুদিন
পর। গরীবের রাজ রোগ।
আমি তখন
কাজ শিখে ওখানেই কাজ করছি। মাহিনাও দেয়
মালিক। কিন্তু ওই আয়ে চলছিল না। পাড়ার শ্যামলী বৌদি কাপড়ের ব্যবসা করত। সেই মলিকে ব্যাবসা শেখাল। প্রথম প্রথম তার টাকা দিয়েই ব্যবসা
শুরু করল। ওর কাছ থেকেই কাপড় নিয়ে বিক্রী
করত মলি। তারপর শ্যামলী বৌদির সংসার অশান্তি
শুরু হল। বৌদির বর সঞ্জয়দা মদ খেত। মেয়েছেলে বাড়ী
যেত। আর রাতে এসে শ্যামলী বৌদির ওপর
অত্যাচার করত। ওদের সন্তান ছিল না।
সঞ্জয়দা শ্যামলী বৌদিকে দোষ দিত। তার দোষেই নাকি.......
একটু থামল রাখাল। ষ্টেশন আসছে তাই একজনের সিট খালি হল। রাখাল ওখানে বসল। এখন তপোজা আর রাখাল মুখোমুখি
দুই মেরুর দুই নারী পুরুষ।
রাখাল বলতে শুরু করল – শামলী বৌদি ব্যাবসাটা
মালিকে দিয়ে সঞ্জয়দাকে ছেড়ে চলে গেল পাশের পাড়ার চাঁদুর সঙ্গে।
সেই থেকে মলিই ব্যবসা চালায়।
আমি তখন রিক্সা কিনে ভাড়া দেওয়া শুরু করেছি। রোজগার বেড়েছে। দুজনে মিলে সংসারটাকে চালিয়ে নিচ্ছি। বছর খানেক পর আমাদের একটা মেয়ে হল । নাম রাখলাম
ফুলি। সংসার বাড়ল দেখে ধার করে একটা টোটো
কিনলাম। এখন নিজের টোটো নিজেই চালাই। সাইকেল সারাই এর কাজটা ছেড়ে দিয়েছি। যদিও সম্পর্ক আছে মালিকের সঙ্গে। কখনও কখনও দরকার পড়লে মালিক ডাকে। কাজটা তো ভালো শিখেছিলাম। কদর করে।
আমিও যাই কাজ করে দিয়ে আসি। একদিন
তো ওই জায়গাটা
থেকেই ভাত পেয়েছি। আমাকে ভালোবাসে মালিক।
অসুবিধা হলে সাহায্যও করে। এভাবেই
চালাচ্ছি। আমি মাল কিনে নিয়ে যাই মলি
বিক্রী করে। এই আর কি...
একগাল সরল হাসি ফোটে রাখালের মুখে।
তপোজা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। লম্বা নিঃশ্বাসে জীবনের ভুল গুলো যেন শরীর
থেকে বেরিয়ে আসে। সে খসে পড়া আঁচলটাকে
কাঁধে তুলে নিয়ে বলে – রাখাল একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
-
পুরনো কথা হলে কি দরকার বৌদি? যা
হারিয়ে গেছে যাক না।
-
তবু-উ..
-
বলুন।
-
আমাদের ওপর তোমার খুব রাগ না?
হাসে রাখাল; বলে – না বৌদি, রাগ করব
কেন? এতগুলো বছর আপনাদের সঙ্গে কাটিয়েছি।
আপনারা না থাকলে আজকের রাখাল থাকত না। রাগ নেই। তবে দুঃখ হয়েছিল। দুঃখ হয়েছিল আপনাদের ছেড়ে আসতে হয়েছিল
বলে। অনেক দিন ভালো করে খেতে পারিনি। কষ্ট হত।
মনে হত সত্যি যদি....
হঠাৎই থামে রাখাল – যাক বৌদি, ওসব কথা
আর দরকার নেই। আপনাদের কথা বলুন।
-
আমরা একই রকম আছি। ভুল হয়েছিল রাখাল। খুব ভুল হয়েছিল। পরে আমরা সব জানতে পেরেছি। কিন্তু তখন তোমায় আমরা হারিয়েছি। তোমার ঠিকানাও জানতাম না। বাপের বাড়ীর কেউ ই তোমার খোঁজ দিতে পারে
নি।
রাখাল কথা ঘোরায় – দাদা কেমন আছেন?
-
ভালো। তোমার দাদার আর চার বছর চাকরী
আছে। তারপর অবসর নেবে।
-
অবন্তিকা?
-
ওর বিয়ে হয়ে গেছে।
-
তাই! – খুশী খেলে চোখে। বলে – ওইটুক অবন্তিকার বিয়ে হয়ে গেল? কবে?
কোথায় হল?
-
এই তো গত বছর। ওর বর ভালো কাজ করে ব্যাঙ্কে। ওরা এখন শিলিগুড়ি থাকে।
-
অনেক বছর হল নয়? আমি যখন ছেড়ে আসি তখন অবন্তিকা তিন
বছরের শিশু। মাঝে কুড়িটা বছর কেটে গেল।
অবন্তিকাকে দেখলে মনে হয় আর চিনতে পারব না।
-
হ্যাঁ। সেই অবন্তিকা এখন গিন্নী।
অবন্তিকার জন্যই তো....
-
বৌদি, থাক না।
-
একদিন এস না বৌ-মেয়েকে নিয়ে আমাদের
বাড়ী। না-কি ইচ্ছে নেই? তোমার দাদাও খুব অনুতপ্ত।
এলে ভালো লাগবে। আর আমরাও....
অবশ্য যদি আমাদের ক্ষমা করতে পারো। জানি
ক্ষমা করা সম্ভব নয়, তবুও....
-
এ কি বলছেন বৌদি। ক্ষমার কথাই ওঠে না।
যাব একদিন সবাই মিলে।
-
তাহলে আমার ফোন নম্বরটা রেখে
দাও। ফোন আছে তো?
-
হ্যাঁ। বলুন।
তপোজা ওর ফোন নম্বর বললে রাখাল ওর কমদামী ফোনে সেটা সংগ্রহ করে নিল। গাড়ীর গতি শ্লথ হচ্ছে। তপোজা উঠল।
ওর ষ্টেশন আসছে। শাড়ীটা ঠিক করে
নিয়ে ব্যাগটা কাঁধে গুছিয়ে নিয়ে রাখালের দিকে চেয়ে বলল – এবার নামতে হবে। তুমি কতদূর যাবে?
-
আমার এখনও অনেকগুলো ষ্টেশন? আপনাদের বাড়ী থেকে বেরিয়ে আসার পর আর জন্মভিটেয় ফিরে যাইনি। ওখানে তো
নিজের বলতে কেউ ছিল না। তারপর এতদিন পর ফিরে গেলে ঠিক মানাতে পারতাম না। তাছাড়া,
আমি জানতাম সত্যি একদিন প্রকাশ হবে। সেদিন আপনারা ভুল বুঝে আবার আমাকে যদি ধরে
আনতেন, তাই।
-
তুমি সেদিন
মুখ বুজে সব সহ্য করেছিলে কেন? বলতে পারতে সব আমাদের।
-
অভিমান
হয়েছিল। আপনারা আমায় ভুল বুঝেছিলেন, সেটা
আমি ঠিক মেনে নিতে পারিনি। অবশ্য পরে বুঝেছিলাম, ওই পরিস্থিতিতে এমনই ঘটে।
-
আসলে আমাদের
ও বোঝা উচিৎ ছিল রাখাল। খুব ভুল করে ফেলেছিলাম। ক্ষমা
করো রাখাল। বাড়ীতে এসো ভুলো না। অপেক্ষায় থাকব।
রাখাল মাথা নাড়ল। ওর গলার
কাছটা কেমন কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠল। মুখে কিছু বলতে পারল না। ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বাংলার শিক্ষিকা তপোজা যেভাবে
স্কুলের ছাত্রীদের মনের কথা বুঝতে পারে, সেভাবে কিছু পড়ে ফেলল। বুকটায় মোচড় দিল।
(২)
সে অনেকদিন আগের কথা। অবন্তিকার বয়স তখন তিন। রাখাল পনেরোর
কিশোর। বাবা-মা হারা রাখালকে গ্রামের বাড়ী
থেকে তপোজার মা পাঠিয়েছিলেন মেয়ে জামাইয়ের সুবিধার জন্য। রাখাল ঘরের কাজ করত। বাজার করত। দোকান করত। আর
সারাদিন বাড়ী পাহারা দিত।
তপোজার বিয়ের একবছর পরই রাখালের অনুপ্রবেশ
ঘটেছিল তাদের সাজানো গোছান রাজমহলে। রাখাল
নিজের দেওরের মতই থাকত। সর্বজিৎকে দাদা
বলত বলে তপোজাকে বৌদি বলেই ডাকত। ওরা দুজনে
কাজে যেত। সর্বজিৎ ব্যাঙ্কে, আর তপোজা
স্কুলে। সারাদিন বাড়ী ফাঁকাই থাকত। সম্পূর্ণ রাখালের তত্বাবধানে।
চলছিল এভাবেই। বছর দুই পর অবন্তিকা এল। বাধ্য হয়েই আর একজন কাজের লোকের দরকার
পড়ল। তপোজা এক মহিলাকে কাজে নিযুক্ত
করল। সে তপোজা আর তার অবন্তিকাকে দেখভাল
করার কাজে নিয়োগ হল।
লক্ষ্মী নাম ছিল তার। চাল চলনে লক্ষ্মী হলেও স্বভাবে সে যে অলক্ষ্মী
ছিল তখন জানা যায়নি। কাজ করত। কোন ত্রুটি ছিল না। বয়সও খুব বেশী ছিল না বছর কুড়ি বাইশ। চটপটে, গোছান।
কিন্তু রাখালের প্রতি তার কিরকম একটা মনোভাব ছিল। যা তপোজা প্রথম প্রথম বুঝতে পারে নি
একেবারেই।
রাখাল ছেলেটা সরল সিধা ছিল প্রথম থেকেই। কিন্তু লক্ষ্মীর সাহচর্যে সে যেন হঠাৎই চালাক
হয়ে উঠতে লাগল। যদিও কাজে ফাঁকি দিত না,
তবু লক্ষ্মীর সঙ্গে তার মিলমিশটা একটু বেড়েই যাচ্ছিল ক্রমশঃ।
যখন চোখে পড়ার মত হল তখন তপোজা একটু নজর দিতে
শুরু করেছিল ওদের দিকে। এভাবেই বছর দুই
কাটার পর হঠাৎ একদিন অবন্তিকার একটা সোনার গহনা হারিয়ে গেল একদিন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও যখন গহনাটা পাওয়া গেল না
তখন সন্দেহর তীর খুঁজে ফিরতে লাগল লক্ষ্মী আর রাখালের জীবন যাত্রাকে।
এমন সময় হঠাৎই একদিন রাখালের ঘর থেকে গহনাটা
উদ্ধার হল। ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে লক্ষ্মী
গহনাটা উদ্ধার করল। তারপর যা হয় স্বভাবতই,
রাখালকে অপমান করা হল। যা নয় তাই বলা
হল। এবং পুলিশে দেবার ভয় দেখিয়ে তাকে
তাড়িয়ে দেয়া হল। অনাথ রাখাল বাড়ীর চৌকাঠ
পেরল। আর পেছন ফিরে তাকাল না।
কিন্তু রাখাল চলে গেল। রেখে গেল না ঠিকানা। সত্যি চাপা থাকল না। একদিন
উদঘাটিত হল। লক্ষ্মী ধরা পড়ল। পুরুষ সমেত।
তপোজার বেডরুমে। নিস্তব্ধ দুপুরে।
তপোজার হাতে।
হঠাৎ এক পিরিয়ডে স্কুল ছুটি হয়ে গিয়েছিল
সেদিন কোন এক নামকরা ব্যক্তি মারা যাবার কারণে।
তপোজা ফিরে এসে দরজা খুলেছিল ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে। অবন্তিকাকে দেখেছিল
শোফায় ঘুমোতে। অবন্তিকা তখন সাড়ে চার
বছরের। অবাক তপোজা বেডরুমে আদিরসাত্মক
শব্দের সম্মুখীন হয়ে ভেজান দরজা খুলে অপরিচিত পুরুষের সঙ্গে লক্ষ্মীকে দেখেছিল
সঙ্গমরত অবস্থায়।
জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে উন্মোচিত হয়েছিল সত্য।
রাখালের বাঁধায় লক্ষ্মীর প্রেমিক এ বাড়ীতে ঢুকতে পারছিল না বলে লক্ষ্মী ছল করে
রাখালকে চোর প্রতিপন্ন করেছিল তপোজাদের কাছে।
তারপর উন্মুক্ত পথে বাধাহীন ভাবে প্রেমালাপে ভেসে গিয়েছিল দুজনে গৃহস্বামীর
অজান্তে।
ভেঙ্গে পড়েছিল তপোজা। রাখালকে সেই তাড়িয়েছিল। যা নয় তাই বলেছিল। নিরপরাধকে দোষী করে অপরাধী হয়েছিল।
কিন্তু তখন কিছু করার ছিল না। রাখালের ঠিকানা ছিল না তপোজাদের কাছে। কোনদিন জানবার চেষ্টাও করে নি তারা।
লজ্জা, ঘৃণা, অপরাধ বোধে মাটিতে মিশে যেতে
ইচ্ছে করছিল সেদিন তপোজার।
লক্ষ্মীকে তাড়িয়ে দিয়েছিল।
বেডরুমের বিছানার চাদরটাকে আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে
নিজের ভেতরের জ্বলন্ত আগুনটাকে স্বচক্ষে পরিদর্শন করেছিল তপোজা। চাদর পোড়া ছাই উড়ে গেছিল বসন্তর মলয় বাতাসে।
=======
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন