হলদেটে
পাতাগুলো অবরোধ ডেকেছে চুপিসারে! বসন্ত এসে থমকে আছে কোনও প্রেমহীন নগরীতে। এখন একটা
ঠাণ্ডা হাওয়া জটলা করে রোজ সকালে। এই প্রেমের মরসুমে ঘুম ভাঙে প্রতিবেশীদের খুনসুটিতে।
নোংরা ফেলার গাড়ি বাঁশি বাজায় প্রবল উৎসাহে। একটা উৎসবের সূচনা কিংবা দশমীর বিষাদ! ঠিক এই ভাবেই এক
একটা দিন উবে যায় আমার বয়স থেকে!
একটা প্রাচীন বাড়ি। প্রাচীন
তার রীতি! তুমি এই বনেদিয়ানার ফাঁকে বড্ড আধুনিক এবং আনকোরা। শব্দহীন নগরীতে যখন নতুন
প্রাণ খেলা করে, তখন চারিদিক আলোয় ভরে উঠে। সেজে ওঠে সব বার্ধক্য। সেরে যায় জটিল রোগ।
একটা চিনচিনে আনন্দ বাসা বাঁধে বুক জুড়ে। মনটা কেমন দমকা হাওয়ার তালে মাদল বাজাতে থাকে,
সুরে সুরে কেউ গান বাঁধে আমার দালানে। একটা প্রচণ্ড ঠাণ্ডার রাতে, তোমার ফোনের অপেক্ষায়
থাকা কোনও পাগল বালক ভুলে যায় সব পিছুটান। অনিমেষ- মাধবীলতার গল্পের সূচনা কিংবা অমিত-লাবন্যের
উপসংহার, হয়ত আমাদেরই অতীত! রবি-রানুর আদরের দাগ
আসলে আমাদেরই ভালবাসা।
কে জানে, আমারা
কী ছিলাম কিংবা কোথায় থাকব ? তবে যেখানেই থাকব, ভাল থাকব। শুধু থমকে যাবে আমাদের অবৈধ সময়টা! একটা লোডশেডিং-এর
রাতে দমকা হাওয়ার মতো উড়ে আসবে আমাদের সময়টা। ইনজেকশন-এর মতো সূচ ফুটিয়ে দেবে শিরায়!
অবশ করে দেবে আমাদের শরীরকে। আবার ভাবতে বাধ্য করবে,”যদি আমারা প্রেমিক-প্রেমিকা হতাম,
তবে এই উপন্যাসটা হয়ত জন্মাত না! হয়ত কোনও অসুখ এইভাবে বাসা বাঁধত না চিলেকোঠায়। “
তোমাকে বৌঠান ডাকার বদলে
হয়ত অন্যকিছু বলে সম্বোধন করতাম। হয়ত তোমাকে কাছে পাওয়ার জন্য এতকিছু পসরা সাজাতে হত
না। তোমাকে কাছে পাওয়ার জন্য একটা একটা বিকেল আমাকে অপেক্ষায় রেখে যেত না! কিন্তু হয়ত
তোমাকে পায়নি বলেই জয়ীকে এতটা ভালবাসতে পেরেছি।
সিটি অফ জয়ের বুকে জয়ী হয়ে উঠেছি কত
সহজেই। বৌঠান, তুমি আর জয়ী আলদা! কিন্তু তুমি আর জয়ী এক! দুজনেই একটা নতুন প্রাণের
জন্ম দিয়েছ। দুজনেই ভালবাসতে শিখিয়েছ। তোমরা
দুজনেই একটা আয়নার এদিক- ওদিক। তোমারা দুজনেই ঝরা বসন্তের রূপকথা।
শুধু তোমাদের কোনও দিন দেখা হয়নি! তোমরা পরস্পরের
গল্প শুনেছ। একদিন ইচ্ছে আছে, তোমাদের দেখা হোক কোনও শান্ত সন্ধ্যেবেলায়। একটা সাদাকালো
গলির মোড়ে, একটা টিমটিমে আলোর নীচে। কোনও সিনেমার প্লট হলেও মন্দ হবে না। দুজন দুজনকে
জড়িয়ে ধরে কেঁদো। দেখবে শান্তি পাবে। ঠিক যেমনটা আমি পেয়েছিলাম কোনও এক ডিসেম্বরের
রাতে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন