অভিনেত্রী হওয়াটা তাঁর কাছে বিলাসিতার সমান ছিল।
অনেকটা সেই বাংলা প্রবাদের মতো, ‘’ ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা!’’
কিন্তু পরিশ্রম মানুষকে যে কোথায় নিয়ে যায়, সেটা সময় বলে দেয়। টুম্পা পাল থেকে
অভিনেত্রী টুম্পা পাল হয়ে ওঠাটা হল ‘সেই সময়’।
তাঁর বাবা
অটো চালাতেন, সংসারে খাবারটাও ঠিক মতো জুটতো না। কিন্তু এইসব বাঁধাকে কাটিয়ে তিনি
আজ বাংলা টেলিভিশনের নতুন মুখ। ‘ বেদের মেয়ে জোৎস্না’ ধারাবাহিকে তিনি লক্ষ্মীর
ভূমিকায় অভিনয় করছেন। এটি তাঁর ডেবিউ সিরিয়াল হলেও ইতিমধ্যে তাঁর অভিনয় দক্ষতা
দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
অভিনয় জগতে আসার প্রসঙ্গে অভিনেত্রী টুম্পা পাল জানালেন, ‘’ ছোটবেলায় এসব ভাবনা
একেবারেই আসেনি, তবে স্নাতক হওয়ার পর কয়েকজন বন্ধুর অনুপ্রেরনায় অভিনয় শুরু করি। তবে
অনেকদিন ধরেই নাচের সঙ্গে যুক্ত। মূলত তখন থেকেই অভিনয় করব, এমন একটা ভাবনা ছিল কিন্তু
সেটাকেই যে পেশা হিসেবে নেব সেটা ভাবিনি।‘’
একটু থেমে অভিনেত্রী আরও জানালেন যে, ‘’ কোনওদিন যদি অভিনেত্রী না হতাম তাহলে নাচটাকে
নিয়েই থাকতাম। তবে ইচ্ছে আছে পরবর্তীকালে পরিচালনা করার। ‘’ শুধু তাই নয়, তিনি ‘ আরন্যক
স্কুল অফ ভিসুয়াল অ্যান্ড পারফরমিং আর্টস’-এর পরিচালক। এটি তাঁর এবং তাঁর বন্ধু
সন্দীপন-এর স্থাপন করা একটি স্কুল।
অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ এই মুহূর্তে সিনেমা করার ইচ্ছে আছে?’’ তিনি
জানালেন, ‘’ নিশ্চয় করব। তবে স্ক্রিপ্টটা যেন ভাল হয়। আমার কাছে সিরিয়াল কিংবা
সিনেমা দুটোই এক। সবটাই কাজ মনে করি।‘’ বাংলা সিরিয়াল নিয়ে যে এত ট্রল হয় সেই
বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করাতে তিনি জানালেন, ‘’ এটা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই।
সবকিছুর একটা সীমা আছে, সেটা যেন ছাড়িয়ে না যায়। ব্যক্তিগত আক্রমনের আমি বিরুদ্ধে।‘’
প্রেম নিয়ে জানতে চাওয়ার অভিনেত্রী একটু হেসে বললেন, ‘’ আছে একজন। তবে নামটা
বলব না। সবই যদি এখন বলে দিই তাহলে পরবর্তী সাক্ষাৎকারে কী বলব।‘’ ফোনের ওপার থেকে
তখন শুধু হাসির শব্দ পেলাম।
অবসর সময়ে তিনি সিনেমা দেখেন, বই পড়েন । তথ্যচিত্র দেখতেও তিনি ভালবাসেন। তবে
খাওয়ার ব্যাপারে তিনি কমপ্রমাইজ করতে ইচ্ছুক নন, তবে অভিনয়ের জন্য একটু নিয়ম-কানুন
মেনে চলেন।
তিনি এখন কেরিয়ারের একেবারে শুরুর দিকে। এখনও অনেকটা পথচলা বাকি, 'মাইলস টু গো, বিফোর আই স্লীপ'। অনেকটা এইরকমই তাঁর মন্ত্র। এতটা পথ পেরিয়ে এসেও তিনি কিন্তু তাঁর শিকড়কে ভুলে যাননি। তাঁর প্রতিটি কথায় সেটাই স্পট হয়েছে বারবার। তাঁর বাবা-মা এখন তাঁর জন্য গর্ববোধ করেন। সবশেষে তিনি আটপৌরের পাঠকদের জানালেন," শুভেচ্ছা রইল। আরও এগিয়ে চলুক আটপৌরে।" একটু থেমে তিনি আরও জানালেন" প্রতিদিন দেখতে ভুলবেন না,'বেদের মেয়ে জোৎস্না'।
( সাক্ষাৎকার- আদিত্য ঘোষ
ছবি- সংগৃহীত)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন