সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রিভিউঃ নিকিতা চক্রবর্তী



পরিচালক- রাজকুমার হিরানি
প্রযোজক - বিনু বিনোদ চোপড়া
লেখক- অভিজিৎ যোশী এবং হিরানি
কাস্টিং- সঞ্জয় দত্তর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রণবীর কাপুর , সঞ্জয় দত্তর স্ত্রী মান্যতার ভূমিকায় দিয়া মির্জা । তাছাড়া সঞ্জয় দত্তর বাবা সুনীল দত্তর ভূমিকায় পরেশ রাওয়াল, প্রিয়বন্ধু কমলেশের ভূমিকায় ভিকি কাওশাল ও মা নার্গিসের ভূমিকায় মনীষা কৈরালা ।
রেটিং- ৫/১০

প্রথমেই মুভির শুরুতেই দেখানো হচ্ছে, একজন লেখক সঞ্জয়ের বায়গ্রাফিতে সঞ্জয়কে গান্ধীজির সাথে তুলনা করায় সঞ্জয় রেগে বইটা পুড়িয়ে দিয়ে লেখককে যথেষ্ট ভর্ৎসনা করছেন । এখানে হিরানি প্রথমেই দর্শকের মনে সঞ্জয়-এর মহৎ আদর্শ তুলে ধরতে চেয়েছেন । এবার এই ঘটনার সত্যতা নিয়ে কেউ যাচাই করতে যাবেন না প্লিজ, অনেকেই হয়ত জানেন, সঞ্জয় দত্ত নিজেই নিজেকে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এর "বাপু" বা "গান্ধীজির" বলে থাকেন । সেটা ফিল্মে দেখালে হয়ত "broad personality picturisation'  এ অসুবিধে হত, তাই হিরানি কায়দা করে ব্যাপারটা উল্টে দিয়ে পাবলিক এ হালকা সুড়সুড়ি দিয়ে দিয়েছেন ।

এবার ফিল্ম স্টোরি তে আসি, ফিল্ম শুরু হচ্ছে সঞ্জয় দত্তর ১৮ বছর বয়স থেকে, যখন সে তার বাবার অধীনে তাঁর  প্রথম সিনেমা রকির এর মাধ্যমে  সিনেমায় হিরো  হিসেবে ডেবিউট করছে, কঠোর ও নিষ্ঠাপরায়ণ বাবা ছেলেকে নিজের আদর্শে অভিনয় শেখাচ্ছেন , তবে হ্যাঁ , সঞ্জু- এ দেখানো হয়েছে সঞ্জয় দত্ত কিন্তু বাবার কাছে অভিনয় শেখেননি , তাঁকে অভিনয় শিখিয়েছে কোকেন।

এখানে একটা কথা উল্লেখ্য, এটা দেখে যদি অভিনয়ে ইচ্ছুক উদীয়মান কোনো ছেলেমেয়ে ভাবতে শুরু করে কোকেন নিলেই ভেতর থেকে অভিনয় সত্তা একরাতের মধ্যে জাগ্রত হয়ে বেরিয়ে আসবে, তার সে আশায় কিন্তু হিরানি সাহেব আগেই তকমা লাগিয়ে দিয়েছেন । এসব শুধু মহান ব্যক্তিদের জীবনে ঘটে থাকে । যাই হোক, এই কোকেন কৃত সাফল্যের পর সঞ্জয় দত্ত পৌঁছালেন আমেরিকা , তাঁর মা নার্গিস সে সময় ক্যান্সার-এ আক্রান্ত নিউ ইয়র্কে এ চিকিৎসাধীন ।

সেখানে সঞ্জয়ের পরিচয় হয় কামলি ওরফে কমলেশের সাথে, যে পরবর্তীকালে সঞ্জয়ের সবচেয়ে ভালো বন্ধু প্রমাণিত হয় । এখানে বেশ খানিকটা অংশে কমেডি আছে, রণবীর কাপুর ও ভিকি কোশল এর স্বাভাবিক নৈপুণ্যে বেশ উপভোগ্য । রনবীর কাপুর ও ভিকি কোশল এর কেমিস্ট্রিটাই পুরো মুভির একটা দারুন উল্লেখ্য ব্যাপার।

  বাবা ও মা হিসেবে পরেশ রাওয়াল ও মনীষা কৈরালা দারুন অভিনয় করেছেন । দিয়া মির্জার বিষয়ে কিছু না বলাই শ্রেয় । গোটা মুভির "interior decoration prop' হিসেবে   তাকে দেখতে খুব ভালো লেগেছে । এবার আসি টেলর-এ সবচেয়ে অভিনব জায়গায়, সঞ্জয় দত্ত স্ত্রীয়ের উপস্থিতিতে বলছেন , উনি স্ত্রী ছাড়া অন্তত ৩৫০ মহিলার সাথে সহবাস করেছেন । বলার পর অনুস্কা শর্মা-এর মুখের অভিব্যক্তি দর্শককে অভিভূত করে দেবে, কথাটা শোনার পর উনি দিয়াজ (অনুস্কার চরিত্রের নাম) এমন এক্সপ্রেশন দিলেন যেমনটা থিয়োরি অফ রিলেটিভিটি আবিষ্কারের পর খোদ আইনস্টাইনও দেননি, এক অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় পেয়ে গৌরবান্বিত হয়ে আমরা যেরকম দন্তবিকশিত করি, হাসিটা ওরকম ছিল ।
তবে, একটা কথা না বললেই নয় , গোটা ছবি জুড়ে আপনার একঘেয়ে লাগার অবকাশ নেই, রনবীর কাপুর খুব ডেডিকেটেড হয়ে চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেছেন, এমনকি কখনো কখনো এটা মনে হলে অস্বাভাবিক নয় যে সঞ্জয় দত্ত স্বয়ং নিজের চরিত্রে অভিনয় করছেন । শুরু থেকে শেষ অব্দি খুব সামান্য কয়েকটা ব্যক্তিগত ত্রুটি বাদ দিলে ছবিটি খুব উপভোগ্য । আর হ্যাঁ, ছবির শেষে সঞ্জয় দত্ত রণবীরের সাথে একটি গানে ক্যামিও করেছেন, রিয়াল লাইফ  ও রীল লাইফ হিরো কে পাশাপাশি দেখতে পাবেন দর্শক । ছবিটি নিঃসন্দেহে ভালো, অন্তত আপনি যদি ভুলক্রমে রেস-৩ দেখে ফেলে থাকেন, ও এখনও সেই শক এর আফটার এফ্যাক্ট এ থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনার  সঞ্জু উচিত ।
\

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

"যোগাসনের বিকল্প কিছু নেই" :শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায়

  আজকাল সুস্থ থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকি। ইদানীং কালে খুব কম বয়সে হৃদরোগের কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে আরও জটিল প্রাণঘাতী রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। প্রতিদিন সময়ের তালে ছুটে চলার তাগিদে আমাদের জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। আর এই কঠিন সময়ে শরীরচর্চার যে সময়টুকু পাওয়া যায়, আমরা অনেকেই জিমে গিয়ে ভারী ভারী লোহালক্কর তুলে থাকি আবার অনেকেই ভোরবেলা হেঁটে থাকেন। প্রাচীন কাল থেকে যোগঅভ্যাস আর প্রাণায়ামের সুখ্যাতি আছে। অনেকেই অভ্যাস করে থাকেন। অনেকের জীবনে   বদলে দিয়েছে যোগঅভ্যাস। তবে জিম না যোগঅভ্যাস এই নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক আছে। নাকি শুধুমাত্র হাঁটলেই মিলবে অনেক রোগ থেকে মুক্তি? তর্ক চলবেই। অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক পরামর্শ দিয়েই থাকেন তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে যোগঅভ্যাসের একটা বিরাট প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশেষত একটা সময় বয়স্করা প্রতিনিয়ত যোগঅভ্যাস করে থাকলেও ইদানীং সববয়সীদের মধ্যে এই প্রচলন দেখা যাচ্ছে। যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে জানালেন যে," যোগব্যায়ামের বিকল্প কিছু নেই। প্রাণায়াম এবং যোগব্যায়াম একজন মানুষকে সম্পূর্নরূপে বদলে দিত...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

শীতের শহরে পারদ বাড়িয়ে দিলেন সায়ন্তনী, কালো পোশাকে ছড়িয়ে দিলেন মায়া

  শীতের ছুটিতে ছুটি কাটিয়ে ফিরলেন অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা। দক্ষিণ গোয়াতে জলকেলি করলেন উষ্ণতার সঙ্গে।  তাঁর কালো পোশাক পরিহিত ছবি মায়া ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। এই শীতে তাঁর উষ্ণ ছবি শহর কলকাতার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছে।  তাঁর এই গোটা ভ্রমণ স্পন্সর করেছিল ফার্ন হোটেল এবং ক্লিয়ারট্রিপ।  তাঁর ঝুলিতে একের পর এক হিট ছবির সারি। 'সমান্তরাল', 'উমা', 'এক যে ছিল রাজা'  কিংবা 'লালবাজার' মতো ওয়েব সিরিজে তাঁর সাহসী অভিনয় দর্শকদের কাছে তাঁর চাওয়া-পাওয়াটা বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু বড় পর্দায় নয়, ছোট পর্দায় 'কিরণমালা', 'জয়ী', 'সাত ভাই চম্পা'-এর মতো কাজ দর্শক আজও মনে রেখেছে। তিনি আগের চেয়ে অনেক পরিণত, অনেক বেশি কাজ নিয়ে বদ্ধপরিকর। অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা এখন শুধুমাত্র ভাল কাজের জন্য মুখিয়ে আছেন। মুখিয়ে আছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে সুপারহিট কাজ দিতে। শুধু বাংলা কেন, বাংলা ছাড়াও বাকি ইন্ডাস্ট্রি যেমন হিন্দি কিংবা সাউথ ইন্ডাস্ট্রিতেও ভাল চরিত্রে কাজ করতে  তিনি প্রস্তুত। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে মায়া - এর মতো হিট বাংলা ছবি।  ত্রিভুজ রিলিজ করতে চলেছে আর কিছু...