সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রথের মেলা- রথের মেলা




রথের মেলা

পার্থ ঘোষ

জিন্স আর পাঞ্জাবিতে শরীর মুড়ে
আষাঢ়ের বিকেলের ভিজে পথ ধরে,
পড়লাম বেরিয়ে সব কাজ ফেলে
রথের মেলায় যাব , এমন চিন্তা করে।

জিন্সের রং নীল, ডেনিম তার জাত,
পাঞ্জাবীর লাল রঙে কবি কবি ভাব।
যৌবন গেছে চলে তবু এত ঢং
পৌঢ়ত্বের চৌকাঠে পা দেওয়া বিকাল।

শহরের পুবপাড়ে জমজমাট মেলা
রেললাইন পেরিয়ে চলে যাওয়া আসা।
পুরোনো এক ব্রিজ আছে নড়বড় করে
কাঠের ব্রিজ নামেই চেনে যে সকলে।

ব্রিজের নীচে রেল লাইন রয়েছে শুয়ে
পাশাপাশি থেকেও তারা দূরত্ব মানে।
ব্রিজের ভাঙা-চোরা তাপ্পি দিয়ে ঢাকা
সাবধানে পা ফেলে হয় যাওয়া আসা।

ওপারেতে নেমে দেখি, কতই মানুষ
গুঁতোগুঁতি দিচ্ছে সবাই নেই তাল হুঁশ।
খাবারের গন্ধেতে ক্ষিদে জাগে মনে
পাঁপড়, জিলিপি, বাদাম অফুরন্ত বেশ।

নৈহাটির রথের মেলা আর বঙ্কিম ভবন
একে একে ঘুরে ঘুরে সব করি দরশন।
মেলা ভরা নর নারী যৌবনের জোয়ার
হাসি, ঠাট্টার সঙ্গে চলে সাজের বাহার।

প্রেমিক প্রেমিকা ঘোরে হাত ধরে ধরে
শরীরে শরীর ঠেকে উত্তেজনা বাড়ে
কনুইয়ের গোঁতা মারে ঈর্ষিত যুবক
না পাওয়ার বেদনায় জ্বলে প্রাণ মন।

দাদা আর বৌদি ভাবে গদগদ
গয়নার দোকানেতে কেনাকাটায় রত।
বৌদির নাকচাবি চিকচিক করে
পছন্দের গয়না পেয়ে হাতব্যাগে ভরে।

বাবা মা হাসিমুখে শিশুর সাথে মেতে
আইসক্রিম খেয়ে নেয় মধুমেহ ভুলে।
লাল সিঁথি দগদগে, সদ্য বিবাহিতা
স্বামী সনে ফুচকা, মজাই আলাদা।

নাগরদোলা ঘোরে যেন ভাগ্যের চাকা
দুর্বল মহিলার দুহাতে চোখ ঢাকা।
ওপর থেকে নামার সময় চিৎকার করে
পুরুষ সঙ্গীর বুকে মাথা দেয় গুঁজে।

রথ নিয়ে পুণ্যি মানুষ দিকবিদিক ভুলে
পড়ি মরি দৌড়োয় জীবনকে ফেলে।
কারো পা মাড়িয়ে যায়, কারো কাটে গা
হুঁশ তখন বেহুঁশ কিছুই মনে থাকে না।

খেলনাপাতি, তৈজসপত্র জুয়ার চাকা
ঘর সাজানোর গরু, মোষে ওড়ে টাকা,
মেলার উঠোন কাদা মাখা বৃষ্টির জলে
পায়ে তা লেপে গিয়ে গা ঘিনঘিন করে।

ঘোরাঘুরি, খাওয়াদাওয়া জমিয়ে করে বাড়ির পথ ধরি কিছু জিনিস কিনে
রথের মেলা, রথের মেলা মিলনের স্থান
রথের মেলায় ঘুরে ঘুরে জুড়াল প্রাণ।

কিছুক্ষনের অলস সময় স্মৃতিকে ধরে
হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো আসেই ফিরে
শৈশব, কৈশোর, যৌবন স্মৃতির ভেলায়
রথের মেলা ফেরায় এই শেষ বেলায়।







মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভূতে ভয় পেলেও, ‘ সেক্সি ভূত’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় পাননি সায়ন্তনী

টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ডেবিউ করে ফেললেন দক্ষিণী সিনেমায়। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি আটপৌরেকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই হোলিতে সিনেমাটি রিলিজ করার পর থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। যদিও তার কারণ, তিনি এই প্রথম একটি ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি ‘ সেক্সি’ ভূতের চরিত্রে এবং তাঁকে নিয়েই গল্পটা গড়ে উঠেছে।  সিনেমার নাম, ‘ চিকাটি গাডিলু চিঠাকোটুন্ডু’। তেলেগু সিনেমায় কাজ করে বেশ উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনী। এখানেই শেষ নয়, তেলেগু ইন্ড্রাস্টির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে । ইতিমধ্যে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গল্পটিতে দেখা যায় দুই যুগল জুটি ছুটি কাটাতে গিয়ে আটকে যায় একটি ভৌতিক বাড়িতে।  সেখানে তারা একটি সেক্সি ভূতের পাল্লায় পরে। তারপর গল্প আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেই।  সায়ন্তনী আটপৌরেকে জানালেন , ‘’ আমাকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজ করে এই সিনেমার ব্যাপারে জানিয়েছেন! তাঁদের আমার চরিত্রটাও ভাল লেগেছে।‘’ ‘’ আপনাকে কেউ যদি রিয়েল লাইকে সেক্সি বলেন, সেটা আপনি কীভাব...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

রোগ চিনে নেওয়ার বিভিন্ন উপায় বাতলে দিচ্ছেন ডাক্তার সোমনাথ বিশ্বাস

হৃদয়ঘটিত বিভিন্ন রোগের অশনিসংকেত বুঝবেন কী করে-( পর্ব ১) খাই খাই বাঙালির বুকে ব্যথা হবে না, এও কি সম্ভব? যুগে যুগে বাঙালি জাতি নিজেরাই ডাক্তারি করে মোটামুটি বুঝে নিয়েছে বুকে একটু-আধটু ব্যথা মানেই ওটা গ্যাসের সমস্যা। আসলে বাঙালি জাতি এটা মানতেই অস্বীকার করে যে বুকে ব্যথা হৃদয় ঘটিত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সেটা অনেক সময় হার্ট এট্যাক এর লক্ষণও হতে পারে। উঁহু, অযথা ভয় পাওয়ার জন্য নয় এই লেখা নয়। উপরন্তু এই লেখা শুধুমাত্র একটা প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তবে ডাক্তার বাবু বিশ্বাস মহাশয় কফি খেতে খেতে কহিলেন, " আধুনিক জীবনে আমি একটা স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করতে পারলে, বুকে হঠাৎ ব্যথা হলে একটা ইসিজি করিয়েও দেখতে পারি। আমরা যদি বুকে ব্যথা ব্যাপারটা চেপে যায় তাহলে আর কি আধুনিক হলাম, তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এত উন্নতি হয়ে লাভ কোথায়?" কফির কাপে চুমুক দিয়ে ডাক্তার বিশ্বাস আরও জানালেন যে, " আমাদের বুঝতে হবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেকটা এগিয়েছে, তার সঙ্গে আমাদেরও এগোতে হবে। বুকে ব্যথা মানেই গ্যাস এবং সঙ্গে সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ খাওয়া মানেই সমস্যার শেষ এটা ভাবা একদমই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।" একটু...