ই তি জ য়ী-আদিত্য
শেষ চব্বিশ ঘণ্টায় রক্তে অ্যালকোহলের মাত্রাটা বেড়েছে! শুধু তাই নয়, শিরায়
শিরায় আবার ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়েছে। পেশিতে টান পড়েছে। কোমড়ের নীচে সেই চিনচিনে
ব্যথাটা আবার ফিরে আসছে। ডান-পা হয়ত আবার অকেজো হবে। অজ্ঞান হয়ে যাব আবার কোনও
সকালে। কোনও কাব্য নেই, ভাবনা নেই, নাটক নেই, কেউ নেই! হ্যাঁ, আমি নেগেটিভ। তোমার
কথার সূত্র ধরে আমি পাগল। জয়ী, আমি তোমার মতো সবসময় ভাল থাকতে পারি না। আর কেউ
বলেছে, “ সবসময় ভাল থাকাটা আসলে বড্ড বাজে।’’ তাই কিছুটা সহানুভূতি পেয়েছি। সেই
ক্ষুদ্র সহানুভূতি নিয়েই আমার-তোমার ‘ছেলেখেলার’ সম্পর্কের ইতি টানতে চলেছি। জয়ীকে
নিয়ে শেষ পর্ব লিখতে বসেছি। কিছুটা দুঃখ হচ্ছে বটে কিন্তু এটাই হয়ত ভবিতব্য ছিল।
এটাই আমাদের কপালে লেখা ছিল!
জয়ীকে নিয়েই কিছু কম পর্ব লিখিনি। জয়ী কে? হয়ত এখনও এটা সবার কাছেই রহস্য। হয়ত সারাজীবনই রহস্য
থাকবে। অনেকে এখন মনে করে তুমি কোনও কাল্পনিক চরিত্র, আবার অনেকে ভাবে তুমি আমার
প্রাক্তন প্রেমিকা, আবার অনেকের ধারনা তুমি আমার সমবয়সী! আবার কেউ কেউ ভাবে, তোমার
সঙ্গে আমার কথা হয় না, দেখাও না!
এই সমস্ত শুনে মাঝে মাঝে হাসি পায় জয়ী! আরও হাসি পায় যখন তুমি বল, “ পেপারে
বিজ্ঞাপন দে, দেখবি আমার মতো আরও জয়ী চলে আসবে।’’ কতটা উদাসীন হলে এই কথাগুলো বলা
যায়, কে জানে! আমরা যে সময়টা কাটিয়ে এসেছি, সেটা তোমার কাছে খেলনাবাটির সমান।
কথায় আছে, মানুষ ভুল না করলে শেখে না! আমিও করেছি। কিন্তু কিছুই শিখিনি! জয়ী,
তুমি যখন জানতে এসব ধোঁয়াশা মাত্র তাহলে সেদিন কেন বাঁধা দাওনি? যখন তুমি জানতে,
আমি তোমার প্রয়োজন মাত্র তাহলে সেদিনই কেন আমায় অপ্রয়োজনীয় করে দাওনি? তুমি তো
আমার চেয়ে দশ বছরের বড়, তাও কেন ভালবেসেও ভালবাসতে পারলে না!
জয়ী, আমি এখনও বিশ্বাস করি না, তুমি আমায় ভালবাস না! হয়ত তুমি ইচ্ছাকৃত সব
ভুলে যেতে চাইছ। হয়ত এটাই স্বাভাবিক। একটা স্বচ্ছল পরিবার। একজন আদুরে স্বামী আর
একটা ফুলের মতো সুন্দর মেয়ে। সঙ্গে তোমার মনভোলান ব্যবহার। আর কী চাই বল তো ? হয়ত
আর কিছুদিনের মধ্যে তুমি কোনও কলেজের লেকচারার হয়ে যাবে। বেগুনি ফ্রেমের চশমার
ফাঁকে জ্বল জ্বল করবে পড়াশুনা। তখন আমার মত বেকার, পাগল, নেশাখোরের সঙ্গে সম্পর্ক
রাখা অপরাধ হবে।
জয়ী, তুমি ঠিক কী চাইছ হয়ত তুমি নিজেই জান না। তুমি ভালবাসতে ভুলে
গেছো। ভুলে গেছো, আমাদের সম্পর্কের কথা। জয়ী, তোমাকে আমি এখনও ঠিক ততটাই শ্রদ্ধা
করি, যতটা আগে করতাম। জয়ী, তোমাকে ঠিক ততটাই ভালবাসি যতটা আগে বাসতাম, হয়ত
ভবিষ্যতেও বাসব। কিন্তু এইভাবে সম্পর্ক রাখতে পারব না। আমাদের আত্মীয়তার সম্পর্কও
নয়। যদি কোনও দিন ইচ্ছা হয়, ফিরে এসো। আমি থাকব। কিন্তু এই ভালবাসার মৃত্যুর জন্য
একমাত্র তুমি দায়ী।
কী চেয়েছিলাম ? শুধু আমরা একে অন্যের কাছাকাছি থাকব, দূরে থেকেও। একে অন্যের
আপন হব। আমরা দুজনেই জানতাম, এই সম্পর্কের কোনও ভবিষ্যৎ নেই, কোনওদিন আমরা এক হতে
পারব না! তাও তো ভাল বন্ধু হওয়ার চেয়ে আর বেশি কিছু চাইনি। কিন্তু তুমি সব‘ছেলেখেলার’
পর্যায়ে নিয়ে গেছো।
জয়ী, তুমি লেকচার হলে সব থেকে বেশি আমি খুশি হব। তুমি ভাল থাকলে, আমি খুশি হব।
কিন্তু আমি কাল চলে গেলে তোমার কিছুই আসবে না। কারণ তুমি সবসময় ভাল থাক। দুঃখরা
তোমায় ছুঁতে পারে না।এইভাবেই শেষ করলাম। নতুন কিছু বলার নেই। রক্তে এখন মৃত্যুর মাত্রাটা বেড়ে
গেছে। নেগেটিভিটি আগের চেয়ে অনেক বেশি। ভাল থেকো জয়ী, বড্ড ভাল থেকো। আমার
কবিতাগুলো, যেগুলো তোমার খাতায় এখন লেখা, ওগুলো পারলে ছিঁড়ে ফেলো। আমাকে ডিলিট করে
দিও তোমার জীবন থেকে, দেখব তুমি আরও ভাল থাকবে। ইতি, তোমার পাগল...
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন