সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

kobita 2

সাল ১৯৭১।
রক্তিম পবনে প্লাবিত বঙ্গদেশ।
শশাঙ্কের, সিরাজের প্রেয়শীর গায়ে তখন ক্রমাগত ধর্ষণের ক্ষত।
আমি তখন রাষ্ট্র নামের এক মারক যন্ত্রের বিরুদ্ধে জীবন শপেছি।
দেখছি কালো চশমা দিয়ে ঝাপসা শহরের গলি।
আর দেখেছি কৃষক ও রাজার কোমরে সমান টাকার থলি।
কৃষক ধানের বোঝা নিয়ে দাড়াতে চেয়েছিল ঠিকই।
কিন্তু রাজা কী চায় নামতে??
আমাদের দাবী দাসত্ব প্রথার বিরুদ্ধে।
তাই চাবুক পুরষ্কারে পুরষ্কৃত আমরা।
ব্যক্তিগত ভাবে রাজাবাজার কলেজে তখন প্রথম নাম আমার।
গণিত এক প্রকার সখা আমার।
আমি অসফল আলবাত কিন্তু অযোগ্য নই।
আমি অবুঝ বটে তবে আত্মস্থ ছিল যুগান্তকারী বই।
কোম্পানীর আকা নির্মম রেখা উত্তপ্ত হল।
পদ্মার মাঝিরা গঙ্গায় নোংড় করল।
দেশ হারা ঘর হারা উদ্বাস্তু ভঙ্গুর কিছু আত্মপরিচয়।
তাদের কেতাবী নাম দেওয়া হল রিফিউজি।
আমরা এগিয়েছিলাম মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের সাথে হাত মেলাতে।
মাটি যদি মা হয় ভাষা কেন নয়?
সেখানেই প্রথম কলমে বসন্ত এল।
লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলে পরিণত হল।
লাল রঙ আদর্শের সাথে মনে পরিণত হল।
কুচবিহারের সরু বিভাজনের ওপারে।
তুমি রোজ আসতে হয়ত আমারই খোজে।
তুমি এক ফালি চাদে আস্থা রাখতে।
কিন্তু শঙখচিলের সাথে আলাপও করতে।
আর তোমার শেকল পোষাকে এই মুক্তি আন্দোলন।
আমার অন্তর মনে পরিবেশিত করেছিল দীর্ঘ আলোড়ন।
আমি কুয়াশার সেতু বেয়ে তোমায় দেখতাম প্রতি সকালে।
তুমি রুমির কবিতায় গোধূলিকে সাজাতে বিকেলে।
বিপ্লবের অলক্ষ্যে রক্তের চোখ এড়িয়ে।
এ যেন এক বিপর্যয় অলেখ্য ইতিহাসের পাতায়।
এ যেন এক নবীন বিদ্রোহ শিরায় শিরায়।
হঠাৎ সেদিন রাজার পেয়াদা খোজ পেল আমাদের।
প্রাণ বাচাতে নাকি প্রাণকে কাছে পাওয়ার তাগিদে।
আমরা হাজির হলাম তোমার জাহানে।
রাষ্ট্র থমকে গেল নিজের ডাকা অবরোধে।
আমিও তখন আইনত রিফিউজি।
কিন্তু উদ্বাস্তু হলেম যখন তুমি কাছে এসে বললে।
"আমাদের বাড়ি আসেন".
বস্তুত আশ্রিতের কোন ঠিকানা নেই।
সন্ন্যাসীর তো পরিচয়ও নেই।
তোমার সন্ধানে ব্রতী বিপ্লবীর কোন গেরুয়া বসন লাগেনি।
তোমার নাম ছাড়া ভিন্ন বীজ মন্ত্র লাগেনি।
বৈদিক বোধে উপলব্ধিকৃত পথ লাগেনি।
আমাদের মাঝে তখন কেবল শরমের ব্যবধান।
নূর তোমার প্রেমে আমিও কেমন বেসামাল।
যেন কলমের আগায় বারুদের বদলে গোলাপ লাগানোর সাধ।
ঈশান কোনের দোতালার ঘর পাখির চোখ।
জং ধরা শিক গুলো ভেদ করে অতিমানব দৃষ্টি।
হিংসে হত ওই আয়নার সাথে।
সে তোমায় রোজ দেখার অনুমতি পায়।
আমি কেন পাইনা।
সে কী হারিগিরির বেদ মন্ত্রের মত ঠোটস্থ করতে পারবে তোমায়।
আমি পারব।
প্রহ্লাদের মত তোমাতে মুগ্ধ হতে।
দুপুরে তুমি রেধে মাছ আনতে।
সমুদ্রমন্থনে অমৃত পানেও হয়ত সেই স্বাদ পায়নি কেউ।
আমার বৈজ্ঞানিক বিশ্বাসে তুমি ঠাকুমার আদর লাগালে।
আমার ইন্টেলেকচুয়াল প্রলাপে সেক্সপিয়রের সংলাপ লাগালে।
আমার দেশ নিয়ে ব্যস্ত ভাবনায় তোমায় নিয়ে কুটিরের নেশা লাগালে।
তুমি নীরব হেসেছ কেবল প্রতি প্রশ্নে।
সেই হাসির সৌন্দর্য,মাধুর্য আমি লিখতে পারব না।
বলতে পারি তা শুনলে হয়ত দেবী মিনার্ভাও লজ্জিত হতেন।
মেঘের সাথে জোছনা মিশে স্বপ্নপটে তোমার কল্পকায়া
এই দুঃসময়ে আর্তনাদের বুকে এ কোন পাগল হাওয়া।
চারটি চোখের চাউনিতে প্রেম পিওনের আসা যাওয়া।
অতঃপর খবর ছড়াল মজহাবের মহাজ্ঞানীদের কাছে।
কাটা হল আমার প্রতিটা শিরা কাফের হওয়ার সুবাদে।
আমি জাত হারা দেশ হারা ঘর হারা।
আমার সহস্র টুকরোর ঠিকানা নদীর কিনারা।
তবে আমি কিন্তু হইনি সর্বহারা।
নব জন্ম নব বেশে কেবল পুরাতন সোহাগে।
ফের মুলাকাত তোমার সাথে।
ফের বিদ্রোহ লঘু পরিমাপে।
ফের বিদ্রোহের ঘরভেঙে ভালোবাসার ঘরামিগিরি।
এবার আমার ধুতি তোমারও শাড়ী।
তবে উপাখ্যান টা মিলনাত্ম হতে পারল না।
যদিও তার ঘটনাক্রম বর্ণণার বাকী রাখে না।
বহু বার বহু ভাবে তা বলেছি।
আসলে কলমের অভ্যাস টা যাইনি আজও।
আসলে তোমার সুবাস টা মিলিয়ে যায়নি আজও।
আজ হয়ত স্বপ্ন শিরচ্ছেদের বর্ষপূর্তি।
তবে হয়ত সৃষ্টি এখনও সাজিয়ে উঠতে পারেনি আমাদের যোগ্য বাসর।
হয়ত তোমার আমার ফর্দে এখনো আসেনি একে অপরের তরে অবসর।
মায়াবী হাসির মল্লিকা তুমি স্নিগ্ধ মুগ্ধ শব্দে বসুধা সাজাও।
আমার তোমার মিলন তরে আরও একবার জন্মাও।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

"যোগাসনের বিকল্প কিছু নেই" :শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায়

  আজকাল সুস্থ থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকি। ইদানীং কালে খুব কম বয়সে হৃদরোগের কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে আরও জটিল প্রাণঘাতী রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। প্রতিদিন সময়ের তালে ছুটে চলার তাগিদে আমাদের জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। আর এই কঠিন সময়ে শরীরচর্চার যে সময়টুকু পাওয়া যায়, আমরা অনেকেই জিমে গিয়ে ভারী ভারী লোহালক্কর তুলে থাকি আবার অনেকেই ভোরবেলা হেঁটে থাকেন। প্রাচীন কাল থেকে যোগঅভ্যাস আর প্রাণায়ামের সুখ্যাতি আছে। অনেকেই অভ্যাস করে থাকেন। অনেকের জীবনে   বদলে দিয়েছে যোগঅভ্যাস। তবে জিম না যোগঅভ্যাস এই নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক আছে। নাকি শুধুমাত্র হাঁটলেই মিলবে অনেক রোগ থেকে মুক্তি? তর্ক চলবেই। অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক পরামর্শ দিয়েই থাকেন তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে যোগঅভ্যাসের একটা বিরাট প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশেষত একটা সময় বয়স্করা প্রতিনিয়ত যোগঅভ্যাস করে থাকলেও ইদানীং সববয়সীদের মধ্যে এই প্রচলন দেখা যাচ্ছে। যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে জানালেন যে," যোগব্যায়ামের বিকল্প কিছু নেই। প্রাণায়াম এবং যোগব্যায়াম একজন মানুষকে সম্পূর্নরূপে বদলে দিত...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

শীতের শহরে পারদ বাড়িয়ে দিলেন সায়ন্তনী, কালো পোশাকে ছড়িয়ে দিলেন মায়া

  শীতের ছুটিতে ছুটি কাটিয়ে ফিরলেন অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা। দক্ষিণ গোয়াতে জলকেলি করলেন উষ্ণতার সঙ্গে।  তাঁর কালো পোশাক পরিহিত ছবি মায়া ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। এই শীতে তাঁর উষ্ণ ছবি শহর কলকাতার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছে।  তাঁর এই গোটা ভ্রমণ স্পন্সর করেছিল ফার্ন হোটেল এবং ক্লিয়ারট্রিপ।  তাঁর ঝুলিতে একের পর এক হিট ছবির সারি। 'সমান্তরাল', 'উমা', 'এক যে ছিল রাজা'  কিংবা 'লালবাজার' মতো ওয়েব সিরিজে তাঁর সাহসী অভিনয় দর্শকদের কাছে তাঁর চাওয়া-পাওয়াটা বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু বড় পর্দায় নয়, ছোট পর্দায় 'কিরণমালা', 'জয়ী', 'সাত ভাই চম্পা'-এর মতো কাজ দর্শক আজও মনে রেখেছে। তিনি আগের চেয়ে অনেক পরিণত, অনেক বেশি কাজ নিয়ে বদ্ধপরিকর। অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা এখন শুধুমাত্র ভাল কাজের জন্য মুখিয়ে আছেন। মুখিয়ে আছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে সুপারহিট কাজ দিতে। শুধু বাংলা কেন, বাংলা ছাড়াও বাকি ইন্ডাস্ট্রি যেমন হিন্দি কিংবা সাউথ ইন্ডাস্ট্রিতেও ভাল চরিত্রে কাজ করতে  তিনি প্রস্তুত। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে মায়া - এর মতো হিট বাংলা ছবি।  ত্রিভুজ রিলিজ করতে চলেছে আর কিছু...