----------------------------------------------------------------------------------------------------------(চয়ন পন্ডা মহাপাত্র)
বোকাদের সর্দার আমি,
সাহসহীন ছাপোষা একলা কবি,
নিজেকে দেখতেই যত ওৎ পেতে থাকে বিব্রত বৃহতী ভয়গ্রস্ততা,
তাই তো তোমার দিকে চাই না, কন্যে,
শুধু চোখ বুজে ভাঙাচোরা এই সড়কের শহরে,
তোমার আনাগোনা শুকে যাওয়া...
.
ট্রাফিক নেই, সিগনালে একঘেয়ে বসে থাকে একপেয়ে কাক,
ওর এক ডানা আজন্ম কল্পিত, এক চোখে ঘুণ,
হা হা হা, ওর জীবন নেই, ও এক কংক্রিটের পুতুল...
.
জীবন নাকি স্বপ্ন? ইচ্ছে না সাহস ?
প্রাণের টান নাকি প্রেমের প্রকাশ ?
.
যখন পাণ্ডুলিপির পাশে সবুজবাতি নিভে যায়,
তেড়ে আসে আশংকা, তবুও অন্ধকারে কবিতা খুলে দেখা,
আবৃত্তি আমি কোনদিনই পারিনি, পড়তেও পারি না অত,
কেঁপে কেঁপে আসে গলা, জড়িয়ে যায় কথামালা,
শঙ্কায় - ভুল উচ্চারণ করলাম না তো তোমায় ?
.
তুমি বরং আমার না হও, আমি শঙ্কায় যাব মরি,
কতটুকু করে সাজাব তোমায়, কতটুকু দেব অঞ্জলি,
কতখানি তোষামোদ তুমি সহ্য করো, আর কততে বিরক্তি,
সে কি আর আমি জানি, হায়, শঙ্কায় যাব মরি...
.
তবু যেন হায়, কম কিছু নয়,
সামান্য হলেও বুকের প্রচ্ছদ নয় খালি,
পুরোটা জুড়ে একলা তোমার তসবির রাখা আঁকি...
.
ঘোর কাটে না, নেশাগ্রস্ত, মাতাল, উন্মাদ আমি,
এ নেশায় জল লাগে না, আগুন জ্বলে না,
শুধু কাপ ভরা ক্যাফেইন, আর বুকের বারান্দায় বই...
.
এ ক্যাফেইন কেটলিতে থাকে না, উনুনে চড়ে না,
এ পুস্তক হাতে লেখা নয়, কাগজে ছাপানো নয়,
এই খানে, হ্যাঁ এইখানে যে নরম নদী বয়,
এইখানে যে অজস্র অব্যক্ত, বিলাপ কথামালা,
তারই ঘষায় সহস্র শতাব্দী ধৈর্যে, সহ্যে আর একনিষ্ঠতায়,
এখানে ক্যাফেইন জন্মায়, বইয়ের মলাট ভারি হয়...
.
কোন দোকানীর নয়, আর কোন মানবী নয়,
একান্ত তুমিই আমার বুকভর্তি ক্যাফেইন,
তুমিই আমার এক নিঃশ্বাসের মহাকাব্য ঠাসা বারংবার পড়া বইখানা...
.
বোকাদের সর্দার আমি, সাহসহীন-শব্দহীন পাঠক,
সিগনালের ক্লান্ত কংক্রিটের কাক,
নেশাগ্রস্ত, মাতাল, উন্মাদ আমি...
.
হুহ, ঘোর আন্ধারে, জানালার ধার ঘেঁষে,
কোন নেশাখোর কতখানি ভারসাম্যহীন রক্ত ঝরালো,
কোন পাঠক কতগুলো পৃষ্ঠা রক্তের অক্ষরে ভেজালো,
তুমি তার খোঁজ রাখবে কোত্থেকে, বোকা কন্যা...
.
আমি যে তোমাতেই বুদ হয়ে আছি,
আমার ঘরে, তোমার ঘোরে...
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন