আমাদের শরীরে যাবতীয় এন্ডোক্রিন গ্রন্থি ও তাদের থেকে নিঃসৃত সমস্ত হরমোন, তাদের ডিসঅর্ডার সম্পর্কে বলব । এককথায় হরমোনাল ডিসঅর্ডার ।
১. থাইরয়েড :-
ল্যারিংক্সের নীচে থাকে । থাইরক্সিন নামক আয়োডিনেটেড অ্যামাইনো অ্যাসিড হরমোন নিঃসরন করে ।
বেড়ে গেলে -
গয়টার হতে পারে । গয়টার হল থাইরয়েডের সোয়েলিং সহ ইনফ্ল্যামেশন । প্রথমটা হল thyrotoxicousis বা বেসডাও ডিজিস বা পাতিকথায় গ্রেভ ডিজিস । এতে কী হয়?
* হার্টবীট বেড়ে যায় । বিএমআর বেড়ে যায় । নার্ভগুলো অধিক সক্রিয় হয় ।
* চোখের রেকটাস নামক মাসল লম্বায় বেড়ে যায় । আইবলের পেছনে ফ্যাট ডিপোজিশনের জন্য চোখের বলটা কোটর থেকে অনেকটা বাইরে বেরিয়ে আসে , তাই একে exolpthamic goitre বলে । এবার, থাইরয়েডে টিউমার গ্রো করলেও সিম্পটমস একই হবে , নামটা পাল্টে হয়ে যাবে টক্সিক অ্যাডিনোমা ।
উপশম-- এরকম অবস্থা হলে অবশ্যই T3 T4চেক করা , ডাক্তারের দেওয়া ওষুধ নিয়ম মেনে খাওয়া । আইয়োডিনাইজড লবণ খাওয়া বন্ধ করা, এটা করতেই হবে।
কমে গেলে-
মিক্সিডিমা বা গালস ডিজিস হবে ।
এতে কী কী হয়?
* লো বিপি , হার্টরেট কমে যাবে ।
*অ্যানিমিয়ার প্রবল চান্স ।
* মাসল ক্র্যাম্প ।
* মেনষ্ট্রুয়েশনে প্রবলেম ।
* সিম্পল গয়টার বা স্পোরাডিক গয়টার - গলা ফুলে ঢোল ।
উপশম-- ডাক্তারের ওষুধ তো খেতেই হবে , সাথে আইয়োডিনাইজড লবণ ।
**#হাশিমোটো_সিনড্রোম - এটা বিশেষ কেস, অটোইমিউন ডিসঅর্ডার , লো অ্যামাউন্টের থাইরক্সিনকে দেহের ইমিউন সিষ্টেম অ্যান্টিজেন ভেবে ভুল করে । ফলে এর বিরূদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরী করতে থাকে । ফলস্বরূপ থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ক্ষতিগ্রস্থ হয় , হাইপোথাইরয়ডিসমের মতোই উপসর্গ হবে ।
২. প্যারাথাইরয়েড:-
এটা থাইরয়েডের সাথেই লেগে থাকে । সংখ্যায় চারটে । পিটিএইচ বা প্যারাথরমোন ক্ষরণ করে । হরমোনটা রক্তে ক্যালশিয়াম আর ফসফরাসের সাম্য বজায় রাখে ।
বেড়ে গেলে-
অস্টিওক্লাসটিক দশা হবে , হাড় ভঙ্গুর হবে, ক্যালশিয়াম খুলে রক্তে মিশতে থাকবে, কিডনির ফিলট্রেশনে বাধা দেবে ।
কমে গেলে-
মাসল ক্র্যাম্প হবে , মায়ালজিয়া বা মাসল পেইন হবে , নার্ভ দুর্বল হবে ।
* মাসকুলার টিট্যানি হবে , চোয়াল ও নিম্নাঙ্গ বিকৃত হয়ে যাবে ।
রোগ এড়াতে উপশম-- অন্য কম্প্লিকেশন না থাকলে ডায়েটে সিম্পল প্রোটিনের মাত্রা বজায় রাখুন ।
৩. পিনিয়াল বডি:-
এটা খুবই ছোট একটা গ্রন্থি , ব্রেনের তৃতীয় ভেনট্রিকলের ছাদে ঝোলে ।
ছোটো হলেও কাজ গুরুত্বপূর্ণ । মেলাটোনিন নামক হরমোন ক্ষরণ করে ।
বেড়ে গেলে-
লোকালাইজড স্কীন ডার্কেনিং , জায়গায় জায়গায় স্কীন কালো হবে , মেলানিন রঞ্জকের ডিপোজিশন বাড়বে ।
কমে গেলে-
স্কীন ফ্যাকাশে হবে , অ্যালবিনিজম বা শ্বেতীরোগ হবে ।
৪. সুপ্রারেনাল বা অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি:-
কিডনির ওপর টুপির মতো থাকে , ঈষৎ হলদে । প্রধানত গ্লুকোকর্টিকয়েড ক্ষরণ করে । যেটা কার্ব,প্রোটিন,ফ্যাটের সমতা বজায় রেখে রক্তে সুগার বাড়ায় ।
বেড়ে গেলে-- হাইপারঅ্যাট্রিমিয়া,উচ্চরক্তচা প, মাসল উইকনেস(হাইপোক্যালিমিয়া) আর অবশ্যই ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়া ।
কমে গেলে-- হাইপোঅ্যাট্রিমিয়া , হাইপারক্যালিমিয়া ।
আর ক্ষরণ করে অ্যালডোষ্টেরন । কিডনির ইউরিনিফেরাস টিবিউল থেকে সোডিয়াম পটাশিয়াম শোষন করে । বেড়ে গেলে রক্তে এসব আয়ন বাড়বে , কমে গেলে আয়ন ডেফিসিয়েন্সী হবে ।
শেষ, সেক্সকর্টিকয়েড ।
বেড়ে গেলে-- ছেলেদের ক্ষেত্রে মেয়েলী ভাব আসে , ম্যামারী গ্ল্যান্ড বড়ো হয়ে যাওয়া , একে গাইনেকোম্যাস্টিয়া বলে । সুতরাং , আপনার ছেলের এই উপসর্গ দেখলে অবহেলা করবেন না, ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক ।
কমে গেলে-- মেয়েদের গলা ভাঙতে শুরু করে , টাক পড়ে যায় , ফেশিয়াল হেয়ার গ্রোথ, ব্রেষ্ট স্টীফনেস । একে অ্যাড্রেনাল ভিরিলিজম বা হারসুইটিজম বলে । এরম উপসর্গ হলে ডাক্তার দেখান ।
আর অ্যাড্রেনাল মেডালা থেকে আসে - এপিনেফ্রিন ও নরএপিনেফ্রিন । এপিনেফ্রিন ভ্যাসোডায়ালেটর , অর্থাৎ রক্তনালি প্রসারিত করে রক্তচাপ কমায় ।
নরএপিনেফ্রিন ভ্যাসোকনস্ট্রিকটর , অর্থাৎ রক্তচাপ বাড়ায় ।
Thank you Bunu . . Very useful post.. .
উত্তরমুছুন