কু ই
ন স ল্যা ন্ড সে তু র দে শে- আদিত্য
কেমন
আছে সেই মেয়েটা ? এখন খোঁপা বাঁধে ? এখনও সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালিয়ে অপেক্ষা করে ? শাঁখ
বাজিয়ে কি এখনও সব অশুভ শক্তির দূর করে ?- ধুস! ওই দেশে ওসব আজগুবি চলে নাকি ? ওরা
কত উন্নত, কত আধুনিক! ওই দেশে এগুলো রূপকথার গল্প!
জানি
না! হয়ত জানতেও চাই না। আমি বড্ড আনকোরা এবং উদাসী। প্রত্যেকটা মধ্যবিত্ত বাঙালীর কিছু চিরাচরিত
রীতি আছে! কলকাতার
মধ্যবিত্ত বাঙালীরা আর কিছু পারুক কিংবা না-পারুক, তাঁরা স্বপ্ন দেখতে কিন্তু ভয় পায়
না। গল্পের ছলে মিলিয়ে দিতে পারে দুটো দেশের সীমানা! ভেঙে দিতে পারে সমস্ত আইনের বাঁধ।
একছুট্টে চলে যেতে পারে অন্য দেশে। এখানেই শেষ নয়, সেই দেশে গিয়েও দিব্যি কাব্য করতে
পারে। প্রেম করতে জলে নৌকা চলুক কিংবা না চলুক, তাঁরা দিব্যি বসে বসে কলকাতার ছোট্ট
ছোট্ট স্বপ্নে মশগুল থাকে। আমার এক বিদেশী বন্ধুর সুবাদে, একটা তথ্য জানার পর থেকেই
আমার কেমন যেন মন কেমন করছিল। মনে হচ্ছিল কখন দেখব সেই গল্পের ব্রিজটাকে! যদিও বাস্তবে
গিয়ে দেখার সৌভাগ্য হয়নি! গুগুলই একমাত্র ভরসা আর ভরসা জুগিয়েছে আমার সদ্য পরিচিত সেই
বিদেশী বন্ধুটি।
সেতুটির
নাম “স্টোরি ব্রিজ”। অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন
অবস্থিত এই ব্রিজটির প্রায় ৭৭৭ মিটার লম্বা এবং ২৪ মিটার চওরা! শোনা যায়, দিনে
প্রায় একলাখ গাড়ি চলাচল করে এই ব্রিজ ধরে। সঙ্গে আছে অজস্র পথচারী এবং অগুন্তি ভালবাসা।
এই ব্রিজটি অতিক্রম করতে সময় লাগে প্রায় আড়াই ঘণ্টা। আবার এটাও শোনা যায়, এই ব্রিজেই
নাকি প্রচুর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। কত প্রেমের মধুর সমাপ্তি হয়েছে এই ব্রিজে।
এই ব্রিজটি
কিন্তু দেখতে অনেকটা আমাদের হাওড়া ব্রিজের মতই। এই ব্রিজের রাতের ছবি দেখলে, আপনি কিন্তু
গুলিয়ে ফেলতে পারেন, কোনটা হাওড়া ব্রিজ আর স্টোরি ব্রিজ। আবার অন্যান্য দিকেও মিল কম নেই! প্রেম-প্রেম বিয়োগ-আত্মহত্যা
সবই একই আছে। আবার এই স্টোরি ব্রিজের নিচেও বোট চলে শোনা যায়।
মানে
ব্যাপারটা বেশ কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ঝালমুড়ি খাওয়ার মত। ভাবুন তো, আপনি আর আপনার অলিখিত
প্রেম একদিন এই কুইনসল্যান্ডে, চুপিসারে! একটা ত্রিফলা জ্বলছে, হাল্কা বৃষ্টি পড়ছে,
একে অন্যের ঠোঁটে শুধু ভালবাসা এঁকে দিচ্ছেন, একটা “স্টোরি” তৈরি করছেন স্টোরি ব্রিজে…
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন