সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
বুকপকেট


মন খারাপ হলে আমি দুম করে কেঁদে উঠতে পারি না।সবার আড়ালে গিয়ে চুপ করে চোখ বন্ধ করি এবং প্রশ্ন করি এরপর তবে কি?
যেভাবে বার্সেলোনার হয়ে গোল করার পর ফুটবল ঈশ্বর চোখ বোজেন অপর দেহাতীত ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে।হয়তো বা পরবর্তী খেলায় সেরাটা দেওয়ার জন্য।
যেভাবে কঠিন কোনো কেসের ক্লাইম্যাক্সে এসে আবীর চ্যাটার্জী থুরি রিল লাইফ ব্যোমকেশ চোখ বোজেন পরবর্তী স্ট্র্যাটেজি ভাববেন বলে।
কিংবা জীবনানন্দ পরবর্তী কবিতা ভাবতে ভাবতে চোখ বুজতেন।এমনই একদিন পারমানেন্টলি চোখ বুজলেন ট্রামের তলায় চাপা পড়ে।
আমিও তেমনি আবেগ,ড্রামা-মেলোড্রামার যাঁতাকলে চাপা পড়েছি কিন্তু নতুন স্ট্র্যাটেজি ভেবে নিয়ে চোখ খুলেছি আবার।

আর এই নতুন স্ট্র্যাটেজি গুলো প্রত্যেক বার ই নতুন কিছুর জন্ম দিয়েছে।সে পদ্য হোক কিংবা গদ্য। ছোটবেলায় স্যামুয়েল দাদু (নিজের দাদুর বন্ধু) আমার নাম দিয়েছিলেন ফিনিক্স।হয়তো কিন্ঞ্চিত সঠিক ধারণা করেছিলেন তাই।কারণ প্রত্যেকটা মন খারাপের পর আমার নতুন করে জন্ম হয় আর তৈরী হয় নতুন লেখা,সুতরাং আমার লেখাগুলোর সত্ত্বা সব ই এক।ঐ ফিনিক্সের মতোই।তাই এই জায়গাটা আমার মতো এক ফলিত গণিতের ছাত্রের কাছে বেশ ইন্টেরেস্টিং।




‌‌স্পেস টাইমে সিঙ্গুলারিটি বলতে সাধারণত ব্ল্যাক হোলের কেন্দ্রবিন্দুকে বোঝানো হয় যেখানে অসীম ভর সংরক্ষিত থাকে,এবং এই জায়গায় পদার্থবিদ্যার সুত্রগুলো ব্যাহত হয়।
আরে দাদা চাপ নেবেন না,আপনাকে জেনেরাল রিলেটিভিটি বোঝানোর বিন্দুমাত্র প্রচেষ্টা করছি না।
আদতে আমাদের জীবনকালকে যদি মহাবিশ্ব বলে ভেবে নি,তাহলে প্রেমগুলো কোনো অংশেই ব্ল্যাকহোলের চেয়ে কম যায় না।আর আমাদের আবেগগুলো সেই সিঙ্গুলারিটি
সত্যি বলতে সেই যায়গায় আমাদের সাধারণ সেন্সগুলো বিন্দুমাত্র কাজ করে না।
এবার যারা বলবেন ব্ল্যাকহোল থেকে বেরোনো যায় না কিন্তু প্রেম থেকে যায়,তাদের জন্য বলি মশাই আপনারা যেটা করেছেন ওটাকে প্রেম না বলে পেম বলাই ভালো।
সিঙ্গুলারিটির ধারে কাছেই যদি না যান,যাহলে আর প্রেম কি করলেন।
তো আমি নিজের জীবনে বহুবার ব্ল্যাকহোলের সম্মুখীন হয়েছি,তবে সত্যি বলতে দু বার সিঙ্গুলারিটির সম্মুখীন হয়েছি।
তা যে খুব ভয়ানক যাত্রাপথ ছিল এমনটা নয়।তবে সেটা বোধহয় না হলেই বেশী ভালো হত।
২০১৭ তেও "অহন" নামক মহাকাশযান এমন যাত্রার সম্মুখীন হয়ছে,তবে এই সুখকর যাত্রাটি বহু আগে হওয়া উচিত ছিল।
যাক গে অনেক তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা হল।এবার পরবর্তী কিস্যা তে পদার্পণ করি।


স্কটিশে পড়েছে অথচ বাঙ্ক করে কলেজস্ট্রীটে যায়নি কিংবা হেদুয়া পার্কে গিয়ে আড্ডা দেয়নি এমন বিদ্যান ছাত্রছাত্রী হাতে গোনা কয়েকজনই আছে।
স্বভাবতই আমি বাঙ্কারদের পক্ষেই আছি।
তবে কলেজ বাঙ্ক মেরে কলেজস্ট্রীট খুব কম গেছি (ব্যক্তিগত প্রয়োজন ছাড়া)।
হয় নিজের বাড়ি পালাতাম নয়তো শোভাবাজারে অরুণের বাড়ি গিয়ে ল্যাদ খেতাম।
শোভাবাজারের থেকে নিষিদ্ধ পল্লীটি খুব দূরে নয়।তাই সেই জায়গার চারপাশ বহুবার পর্যবেক্ষন করেছি।
সত্যি বলতে খারাপ কিছু পাইনি বরং আশেপাশের পরিস্থিতি দেখে আমার এটাই মনে হয়ছে যে "বিকৃত এবং অবদমিত কামের চেয়ে এই বেশ।সমস্তটাই হকের টাকায়"
ভারতীয় সংস্কৃতির বগল বাজিয়ে মেনকা,রম্ভাদের অসম্মান মানায় না।
আর এই নিষিদ্ধ পল্লীর দৌলতেই আমরা "বিবর" পেয়েছি। "নিশিপদ্ম" কিংবা "অমর প্রেম"(হিন্দী) এর মত চলচ্চিত্র।
ব্যাক্তিগত স্বার্থের জন্য নয় অন্তত সামাজিক বিপ্লবের স্বার্থে এনাদের পাশে দাড়ানো উচিৎ।


যাই হোক কলেজস্ট্রীট গেলেও আমি অন্ততঃ একা যেতেই পছন্দ করতাম বেশী।আর ছুটির সময় একদম ভোঁ করে বেরিয়ে যেতাম সকাল ১০ টা নাগাদ।
কফি হাউসে বসতাম আধ প্যাকেট ছোট সিল্ককাট নিয়ে।
প্রথমে একটা ধরিয়ে নিতাম তারপর অর্ডার করতাম একটা হট কফি আর সঙ্গে সেদ্ধ ডিম।
আহা চুমু কম্বিনেশন।
প্রায় দেড় ঘন্টা বসে থাকতাম সাথে কন্স্ট্যান্টলি ধোঁয়া চলত।প্রথম কফি শেষ হয়ে গেলে পরপর ইনফিউশনের অর্ডার দিয়ে যেতাম সিগারেট শেষ না হওয়া অবধি।দেখতাম মুহুর্তের মধ্যে ভিড় আর মানুষগুলো কেমন টুক করে বদলে যেত।
এরপর দুপুর দুটো অবধি এদিক ওদিক ঘুরতাম,কখনও চায়ের দোকানে বসতাম,কাধের ঝোলাব্যাগ থেকে ডায়েরীখানা বের করে নিয়ে বসতাম। আর্ধেক সময় গাল ভর্তি দাড়ি থাকত।তা দেখে কেউ আওয়াজ দিয়ে বলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।আর আমি পাল্টা দাঁত কেলিয়ে বলতাম না না,আমি মশাই কবীন্দ্রনাথ ঢেকুর।
এরপর হ্যারিসন রোড ধরে আসতে আসতে মহল রেস্তোরাঁতে এসে উঠতাম।পকেট গরম থাকলে মাটন ভাত,নচেৎ আম বাঙালীর মতো ভাত-ডাল-শুক্তো কিংবা আলুপোস্ত উইথ ফুলকপির রসা।
কয়েক মিনিটের মধ্যে লেবু লঙ্কা পেঁয়াজ সমেত মিল হাজির। মাইরি বস।এক্কেরে স্টেয়ারওয়ে টু হেভেন।
এদিকের তৃপ্তি সাঙ্গ হলে চলে আসতাম মন্টুদার পানের দোকানে।রসরাজ পান,সাথে গোল্ড ফ্লেক লাইট জ্বালিয়ে ফুলফুরে মেজাজ নিয়ে হাটতে শুরু করতাম বিধান সরণীর দিকে।
ততক্ষনে বিকেল সাড়ে চারটে আসতে আসতে অলি গলি পেরিয়ে যখন কাশী বোস লেন ঢুকেছি পাঁচটা বেজে গেছে।
শীতকালে এই সময় মানেই সন্ধ্যা।
আর সন্ধ্যে নামলেই এই অন্ধকার অলিগলি আরও বেশী করে নিজের দিকে টেনে নিত আমায়।


শীতকালে সন্ধে নামলেই মনে হয় প্রেমে পড়ে গেছি। প্রেম একটা ম্যাজম্যাজে ব্যাপার। উত্তর কলকাতার অন্ধকার গলির রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছে প্রেম। এই বুঝি ঘর পৌঁছে গেল। বিছানার ওপর লেপ পড়ে আছে। তার নীচে লুকিয়ে বেড়ে চলেছে ভালোবাসার ওম। আমি তোমায় জড়িয়ে শুয়ে থাকতে চাই ছোটোবেলার ওম। আমাকে ছোটোবেলায় নিয়ে চলো।আমি জানলার ধারে বসে তোমার পেরিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা করবো। জানি দুপুরের ওই ক্যাটওয়াক সবার পছন্দ ছিল। আরো জানতে ইচ্ছে করে চাদর গায়ে যে গোলাপগুলো বাড়ির দরজায় ছুঁড়ে আসতাম সেগুলো কি এখনও ফ্রীজেতুলে রেখেছো?কলকাতায় শীত পড়ে অনেক দেরীতে। তোমাকেও মনে পড়ে না। তবুও তোমার মত কারোর প্রেমে পড়তে ইচ্ছে করে প্রত্যেকদিন। একটু চারপাশ দিয়ে জড়িয়ে ওম দেবে যে। নিজেকে আটকে রেখেছি।


বি:দ্র : এই সব লেখাগুলি অনেকক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন মনে হতে পারে কারণ এটি সমগ্রটা একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে নয়।এগুলি বিগত কয়েক বছরে আমার জীবনে কাটানো কয়েকটি বিশেষ ঘটনার সংকলন যা আমার বাঁ দিকের বুকপকেটের খুব কাছে। -                Nilanjan 


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভূতে ভয় পেলেও, ‘ সেক্সি ভূত’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় পাননি সায়ন্তনী

টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ডেবিউ করে ফেললেন দক্ষিণী সিনেমায়। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি আটপৌরেকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই হোলিতে সিনেমাটি রিলিজ করার পর থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। যদিও তার কারণ, তিনি এই প্রথম একটি ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি ‘ সেক্সি’ ভূতের চরিত্রে এবং তাঁকে নিয়েই গল্পটা গড়ে উঠেছে।  সিনেমার নাম, ‘ চিকাটি গাডিলু চিঠাকোটুন্ডু’। তেলেগু সিনেমায় কাজ করে বেশ উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনী। এখানেই শেষ নয়, তেলেগু ইন্ড্রাস্টির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে । ইতিমধ্যে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গল্পটিতে দেখা যায় দুই যুগল জুটি ছুটি কাটাতে গিয়ে আটকে যায় একটি ভৌতিক বাড়িতে।  সেখানে তারা একটি সেক্সি ভূতের পাল্লায় পরে। তারপর গল্প আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেই।  সায়ন্তনী আটপৌরেকে জানালেন , ‘’ আমাকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজ করে এই সিনেমার ব্যাপারে জানিয়েছেন! তাঁদের আমার চরিত্রটাও ভাল লেগেছে।‘’ ‘’ আপনাকে কেউ যদি রিয়েল লাইকে সেক্সি বলেন, সেটা আপনি কীভাব...

পুজো মিটলে কী করে থাকবেন ফিট, উপায় বাতলে দিলেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক ডাক্তার অনন্যা ভৌমিক

  আশ্বিনের শারদপ্রাতে বাঙালির পাতে ভরে উঠেছে হরেক রকমের খাবার। ঠাকুর দেখার সঙ্গে হরেক রকমের খাবার খেতেই হবে। রোল, চাউমিন, মোগলাই, চাইনিজ, বিরিয়ানি, ফুচকা এবং আরও কত কী! সারাবছর যারা শরীরচর্চায় মেতে থাকেন, খুব নিয়ম করে খাবার খান তারাও এই সময়টা একটু বেনিয়ম হয়ে পড়েন। তবে কুচ পরোয়া নেহি, পুজো মিটলেই আবার কী করে নিজের শরীরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন সেই কথায় আটপৌরেকে জানালেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক ডাক্তার অনন্যা ভৌমিক।  ১) পুজো মিটলেই আমাদের ফিরতে হবে আবার স্বাভাবিক জীবনে।  তাই পুজোর হ্যাংওভার কাটিয়ে নিতে ভীষণভাবে দরকার পড়বে প্রচুর পরিমাণ জলের। জল শরীরের বিষক্রিয়া দূর করতে সাহায্য করে। শরীরের প্রয়োজন মতো দিনে অন্তত তিন থেকে চার লিটার জল খেলে শরীর সুস্থ থাকবে। তবে যাদের বেশী জল খাওয়া বারণ আছে তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এছাড়া বাকিরা দিনে চার লিটার পর্যন্ত জল পান করলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রিত থাকবে।  ২) মরশুমি ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন। এছাড়াও নিয়মিত শাকসবজি খেতে হবে। ফল এবং শাকসবজিতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার এবং আন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরকে আবার স...

পনেরো মিনিটেই ফিট থাকার রহস্য, উপায় বাতলে দিলেন যোগগুরু

  আটপৌরের নিজস্ব প্রতিবেদন, নৈহাটিঃ  শরীরকে মন্দিরের আখ্যা দেওয়া হয়। আর সেই শরীরকে সর্বদা ঠিক রাখতে আমরা কত পন্থায় না অবলম্বন করে থাকি। আজকাল ইঁদুর দৌড়ের যুগ, আর এই যুগে সময় পাওয়া একটা বিরাট চ্যালেঞ্জিং বিষয়। সময় বের করে শরীর চর্চা করার মতো সময় আমাদের কতজনের হাতেই বা আছে? মনের সুখে ছুটির দিন হাঁটলেই কি আমাদের শরীর ঠিক থাকবে নাকি সপ্তাহে প্রতিদিন জিমমুখী হতেই হবে ? যেমন আইটি সেক্টরে কর্মরত পার্থ সারথী চক্রবর্তী সোম থেকে শুক্র অবধি দম ফেলার সময় পায় না, অথচ কিছুদিন হল সে ঘাড়ের ব্যথায় কাবু। আবার সদ্য বিয়ে করা কৌশিক ভট্টাচার্য ইদানীং অফিস ফেরত সস্ত্রীক হাঁটতে বেরিয়ে নিজেকে ফিট ভাবছেন অথচ গত তিনমাসে তার দশ কেজি ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও সে নিরুপায়, অফিস ফেরত ছাড়া তার সময় নেই। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে শরীর চর্চা আর হবে না। এই সময়ের অভাব অনেকেরই তা বলে কী শরীর সে কথা শুনবে। শরীরে বাসা বাঁধছে জটিল রোগ। দিনের পর দিন ওষুধ খেয়েও সেই রোগ সারছে না। তবে ইচ্ছে থাকলে উপায় আছে, বলছেন বিশিষ্ট যোগ গুরু রাহুল তিওয়ারী। আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানালেন যে খুব স্বল্প সময়ে ফিট থাকার জন্য কিছু প...