সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অভিনেত্রীর ঘুম ভাঙিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম আপনার পছন্দের মানুষটি কি আপনার মতোই ক্ষ্যাপা হবে ?




অভিনেত্রীর ঘুম ভাঙিয়ে সাক্ষাৎকার নেওয়ার দুঃসাহস এর আগে আর কেউ করেছে কিনা আমার জানা নেই। অভিনেত্রী দীপান্বিতা নাথ তখন তীব্র ঘুমে, প্রথমবার ফোনটা বেজে গেল। দ্বিতীয়বার একটা ক্লান্ত কণ্ঠস্বর ভেসে এলো। নিজের পরিচয়টা দিতেই মনে হল তিনি একটু নড়েচড়ে বসলেন। কিন্তু  বেশ বুঝতে পারলাম যে ওনার এখনও ঘুমের আবেশটা কাটেনি। তবুও তিনি কিন্তু সাক্ষাৎকার দিতে নাকচ করলেন না। হাসতে হাসতে বললেন, ‘’ বলুন, আমি একদম রেডি!’’ মনে হল আমি যেন এক্সটারনাল আর উনি পরীক্ষা দিতে এসেছেন। 

জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ ছোট থেকেই কি অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছে ছিল?’’ উনি একটু ভেবে বললেন, ‘’ ঠিক তেমনটা নয়, আবার অনেকটা তেমনই!’’ অভিনেত্রীর এই হেঁয়ালির অর্থ আমার মাথার ওপর দিয়ে বেড়িয়ে গেল। আমি নিস্তব্ধ দেখে অভিনেত্রী হাসতে হাসতে বললেন, ‘’ মানে একটা সময়ে গিয়ে আমার মনে হয়েছিল, আমি অভিনয়টাই পারি। তাই ওটাই করতে হবে। আমি কোনওদিন চাকরির চেষ্টাও করিনি তাই। শুধুমাত্র অভিনয়টা ভাল করে করতে চেয়েছি এবং করছি।‘’


মাত্র চার বয়সে তিনি মঞ্চে উঠেছিলেন, ওটাই তাঁর অভিনয় জগতের হাতেখড়ি। তারপর তিনি আর পিছনে ফিরে তাকাননি। অভিনয়টাই করে গিয়েছেন শুধু। একটা দীর্ঘ সময় মঞ্চে কাটানোর পর, তিনি ক্যামেরার সামনে এসেছেন এবং তাঁর ভাষায় ‘’ আমার অভিনয়ের প্যাটার্ন ক্যামেরার সঙ্গে বেশ মানানসই ।‘’ তবে মঞ্চের প্রতি কিন্তু তাঁর কোনও বিদ্বেষ নেই। মঞ্চটা তাঁর কাছে মন্দিরের সমান। তিনি প্রথমে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি দিয়ে ক্যামেরার সামনে আত্মপ্রকাশ করেন। বালি, কেজেড বার্ড, ডার্কনেস অফ ক্যাওস, অ্যাসেমড কিউপিড-এর  মতো স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। 

এখানেই শেষ নয় তিনি বাংলা ধারাবাহিকেও কাজ করেছেন। কালারস বাংলায় প্রথম প্রতিশ্রুতি এবং দুর্গা, জি বাংলায় লোকনাথ এবং আকাশ আটে প্যান্ডেমোনিয়াম, এক মাসের সাহিত্য, সত্যমেব জয়তে তাঁর অভিনয় ইতিমধ্যে বাঙালী দর্শককে নাড়া দিয়েছে। ‘ক্ষ্যাপা’, ‘ ডিকেটটিভ বৌমা’ ওয়েব সিরিজে তাঁর অভিনয় দক্ষতা বুঝিয়ে দিয়েছে যে তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া। কিছুদিনের মধ্যে তাঁর অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘ আড্ডা’ আসতে চলেছে। এছাড়াও একটি ওয়েব সিরিজের কাজেও হাত দিয়েছেন তিনি।


দীপান্বিতা জানালেন, ‘’ আমি আসলে কাজের ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকি, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে স্ক্রিপ্ট পড়ে তবে কাজ কনফার্ম করি। আমি আসলে ভাল কাজ করতে চাই, সেই জন্যই একটু সতর্ক থাকি।‘’ খুব বেশি দিন ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতে তিনি আসেননি তবে তাঁর কথায়, ‘’ আমি যতদিন ইন্ড্রাস্ট্রিতে  ততদিন কিন্তু আমি লড়াই করেছি। কারণ আমি মফস্বল থেকে উঠে এসেছিলাম, কোনও কন্টাক্ট ছিল না। ধীরে ধীরে যোগাযোগ তৈরি করে আমি আজকে এই জায়গায় দাঁড়িয়েছি।‘’ এখানেই শেষ নয় তিনি আরও জানালেন যে, ‘’ মাঝে মাঝে কষ্ট হয় যখন দেখি ট্যালেন্টেড অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কলকাতার বাজারে কাজ পাচ্ছে না। কিন্তু তারা মনযোগ দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে।‘’ একটু থেমে তিনি বললেন, ‘’ কেরিয়ারের শুরু দিকে আমার কাছেও কমপ্রমাইজের অফার পেয়েছি।''



‘’ আপনি কি মুম্বই যাওয়ার কথা কখনও ভাবেননি?’’ জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি স্পষ্ট জানালেন, ‘’ আমি বাংলায় ছবি করতে চাই। তবে মুম্বইয়ের অফার পেলে নিশ্চয় করব। এই তো কিছুদিন আগে একটা বিজ্ঞাপনের ছবি করে এলাম। মুম্বই-এর প্রতি অত টান নেই তবে ভাল কাজ পেলে অবশ্যই করব।‘’

অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি কিন্তু ঘুরতে বেশ ভালবাসেন। ইতালি যাওয়ার তাঁর বেশ শখ, পারলে কোনওদিন তিনি উজবিকিস্তানেও যাবেন। তবে এই মুহূর্তে তিনি শুধুমাত্র কাজ করে যেতে যান, আরও আরও ভাল কাজ করতে চান। সবশেষে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ আপনি কি সিঙ্গেল ?’’ তিনি হাসতে হাসতে বললেন, ‘’ ইয়েস স্যার!’’ ‘’পছন্দের পুরুষটি কেমন হবে?’’ জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, ‘’ আমার মতো ক্ষ্যাপা হতে হবে।‘’ তারপর ফোনের ওপার থেকে শুধুমাত্র হাসির শব্দ পেলাম।    

( সাক্ষাৎকার- আদিত্য ঘোষ
ছবি- সংগৃহীত)
     

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভূতে ভয় পেলেও, ‘ সেক্সি ভূত’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় পাননি সায়ন্তনী

টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ডেবিউ করে ফেললেন দক্ষিণী সিনেমায়। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি আটপৌরেকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই হোলিতে সিনেমাটি রিলিজ করার পর থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। যদিও তার কারণ, তিনি এই প্রথম একটি ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি ‘ সেক্সি’ ভূতের চরিত্রে এবং তাঁকে নিয়েই গল্পটা গড়ে উঠেছে।  সিনেমার নাম, ‘ চিকাটি গাডিলু চিঠাকোটুন্ডু’। তেলেগু সিনেমায় কাজ করে বেশ উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনী। এখানেই শেষ নয়, তেলেগু ইন্ড্রাস্টির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে । ইতিমধ্যে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গল্পটিতে দেখা যায় দুই যুগল জুটি ছুটি কাটাতে গিয়ে আটকে যায় একটি ভৌতিক বাড়িতে।  সেখানে তারা একটি সেক্সি ভূতের পাল্লায় পরে। তারপর গল্প আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেই।  সায়ন্তনী আটপৌরেকে জানালেন , ‘’ আমাকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজ করে এই সিনেমার ব্যাপারে জানিয়েছেন! তাঁদের আমার চরিত্রটাও ভাল লেগেছে।‘’ ‘’ আপনাকে কেউ যদি রিয়েল লাইকে সেক্সি বলেন, সেটা আপনি কীভাব...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

রোগ চিনে নেওয়ার বিভিন্ন উপায় বাতলে দিচ্ছেন ডাক্তার সোমনাথ বিশ্বাস

হৃদয়ঘটিত বিভিন্ন রোগের অশনিসংকেত বুঝবেন কী করে-( পর্ব ১) খাই খাই বাঙালির বুকে ব্যথা হবে না, এও কি সম্ভব? যুগে যুগে বাঙালি জাতি নিজেরাই ডাক্তারি করে মোটামুটি বুঝে নিয়েছে বুকে একটু-আধটু ব্যথা মানেই ওটা গ্যাসের সমস্যা। আসলে বাঙালি জাতি এটা মানতেই অস্বীকার করে যে বুকে ব্যথা হৃদয় ঘটিত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সেটা অনেক সময় হার্ট এট্যাক এর লক্ষণও হতে পারে। উঁহু, অযথা ভয় পাওয়ার জন্য নয় এই লেখা নয়। উপরন্তু এই লেখা শুধুমাত্র একটা প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তবে ডাক্তার বাবু বিশ্বাস মহাশয় কফি খেতে খেতে কহিলেন, " আধুনিক জীবনে আমি একটা স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করতে পারলে, বুকে হঠাৎ ব্যথা হলে একটা ইসিজি করিয়েও দেখতে পারি। আমরা যদি বুকে ব্যথা ব্যাপারটা চেপে যায় তাহলে আর কি আধুনিক হলাম, তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এত উন্নতি হয়ে লাভ কোথায়?" কফির কাপে চুমুক দিয়ে ডাক্তার বিশ্বাস আরও জানালেন যে, " আমাদের বুঝতে হবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেকটা এগিয়েছে, তার সঙ্গে আমাদেরও এগোতে হবে। বুকে ব্যথা মানেই গ্যাস এবং সঙ্গে সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ খাওয়া মানেই সমস্যার শেষ এটা ভাবা একদমই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।" একটু...