হাওড়া থেকে সোজা মুম্বই! তবে এই যাওয়ার পথটা একেবারেই মসৃণ ছিল না। উত্থান-পতন ছিল তাঁর নিত্য সঙ্গী। উদবাস্তু হয়েছেন বহুবার। কুড়ি দিন প্রায় বাড়ির বাইরে ছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রতিবেশীদের কুকথাও শুনেছেন। তবুও তিনি কলকাতায় ফিরে আসেননি। দাঁতে দাঁত চেপে মায়ানগরীতেই পরে ছিলেন। তিনি জানতেন যে তিনি একদিন ঠিক পারবেন। আর এই বিশ্বাসটাই তাঁকে আজ জয়ী করে দিয়েছে। তবে বাংলার ঈশিকা দে এই সাফল্যে খুশি হলেও তিনি আরও আরও কাজ করে যেতে চান।
আপাতত নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকের বিপরীতে শয্যা দৃশ্যে অভিনয় করা ঈশিকা এখন সমস্ত পর্ণ সাইটে ট্রেন্ডিং! শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন পেজেও তিনি এখন মিমে হয়ে উঠেছেন। তবে তিনি এই বিষয়ে একেবারেই ভাবিত নয়। আটপৌরেকে তিনি এই ব্যাপারে জানালেন , ‘’যাদের ওসব করা কাজ, তারা ওইসবই করবে। আমি ওসব ভাবি না, আমি শুধু কাজটা করি।‘’
ঈশিকার
ঝুলিতে রয়েছে টলিউড, বলিউড এবং হলিউড প্রজেক্ট। প্রায় ১৩টি বাংলা সিনেমায় তিনি
অভিনয় করছেন, যার মধ্যে রয়েছে, ‘ প্রলয়’, ‘ ঈগলের চোখ’ সহ আরও হিট সিনেমা। শুধু
তাই নয় হলিউডের ‘সোল্ড’-এ তিনি ছিলেন, কিন্তু তিনি খবরের শিরোনামে এলেন
নেটফ্লিক্স-এর ‘সেক্রেড গেমস’-এর সৌজন্যে। যদিও সংবেদনশীল বাঙালি তাঁর শয্যা দৃশ্য
কতটা হজম করতে পেরেছেন সেটা বলাইবাহুল্য কিন্তু অভিনেত্রী ঈশিকা দে এই ব্যাপারে
আটপৌরেকে জানালেন, ‘’ বাঙালিরা কিন্তু বেশ ওপেন মাইন্ড-এর। তাঁরা অন্তত এখন অনেক
বেশি পরিণত হয়েছে।‘’
এই
দৃশ্যে অভিনয় করার আগে তিনি তাঁর বাড়িতেও জানিয়েছিলেন, যদিও তাঁর মা তাঁকে এই রকম
দৃশ্যে অভিনয় করার জন্য প্রথমে বারণ করেছিলেন, কিন্তু ঈশিকা কোনও পিছুটানের কথা না
ভেবে এগিয়ে যান, হয়ত সেদিন তিনি না এগোলে আজ হয়ত তাঁর খবরের শিরোনামে আসা হত না।
ইংরাজি
সাহিত্যের ছাত্রী ঈশিকা খুব ছোট বয়স থেকেই ঠিক করে ফেলেছিলেন যে, তিনি অভিনয়
করবেন। ‘ নান্দীকার’ নাটকের দলের প্রায় সাড়ে তিনবছর তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, যা
তাঁর এখনও পাথেয়ও। মমতাশঙ্করেরও কাছেও তিনি প্রায় পনেরো বছর তালিম নিয়েছেন। কিন্তু
তিলোত্তমার বুকে তেমন কোনও কাজের আশা দেখছিলেন না তিনি, তাই হঠাৎই পাড়ি দেন
মায়ানগরী মুম্বই-এর উদ্দেশ্যে। হয়ত ওটাই তাঁর জীবনের টারনিং পয়েন্ট। অভিনেত্রীকে
জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ ভাল কাজের অফার পেলেও কলকাতায় ফিরবেন না ?’’ ‘’হ্যাঁ, ফিরব।
তবে শুধু কাজের জন্য তারপর আবার মুম্বই-এ ফিরে যাব। কারণ আই লাভ মুম্বই।‘’
শুটিং প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানালেন অনুরাগ ক্যাশপ আর নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি একবারে ডাউন টু আর্থ! তবে তাঁর জার্নিটা খুব একটা সুখকর নয়। একসময়ের তাঁর রুমমেট তাঁর প্রতি খারাপ ব্যবহার করত। একসময় তাঁর ফ্রিজও খারাপ করে দিয়েছিল। তাঁকে বিভিন্ন কারণবশত বারবার বাড়ি পাল্টাতে বাধ্য হতে হয়েছে। এমন একটা সময় কেটেছে, তিনি প্রায় কুড়ি দিন বাড়ি ছাড়া ছিলেন, সেই সময় তাঁর আত্মীয়রাও তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায়নি। তিনি একা লড়ে গেছেন। উঠে এসেছেন লাইম লাইটে। তবে আরও ওপরে উঠতে চান। সবশেষে তিনি আটপৌরেকে জানালেন, ‘’ হয়ত এই বছর নভেম্বরে কলকাতায় আসব, কালী পুজোর সময়।‘’
(সাক্ষাৎকার- আদিত্য
(ছবি- ঈশিকা দে-এর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন