সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের লাল-নীল অগোছালো সংসারটায়!


লাল-নীল সংসার

ওগো শুনছ,

ছোট্ট ভাড়া বাড়ি আমাদের। বাড়ির সামনে একটা আপনমনে বেড়ে ওঠা হাসনুহানা গাছ। ডালপালার ফাঁক থেকে আলো এসে পড়ে আমাদের ঘরে। একটাই ঘর, ছোট খাট। আমায় আঁকড়ে ধরে ঘুমোও তুমি, আঙুলে আমার আঁচলটা জড়িয়ে। জায়গার অভাব হয়না। মশার বড্ড উপদ্রব। পালা করে রোজ মশারি টাঙানো আর খোলা। দেওয়ালে একটা ক্যালেন্ডার, তাতে সমুদ্রের ছবি। আমার লক্ষীর ঝাঁপিতে অনেক টাকা জমলে যাওয়া হবে একদিন। শাঁখা কিনব সমুদ্রের ধার থেকে, আর একটা সাদা ঝিনুক।
   
           একফালি রান্নাঘর। ভোরবেলা উঠে স্নান করে পুজো করি। জল নিয়ে আসি দূরের কলতলা থেকে। তুমি দেখলেই বকাবকি করবে যে! তারপরেই রান্নাঘরে ঢুকি। আলু-পটল, কোনোদিন বেগুন-কুমড়ো, তাড়াতাড়ি তরকারী চাপিয়ে দিই। সকালের ট্রেন ধরতে হয় তোমায়। অন্নপূর্ণা হয়ে উঠিনা আমি। বেশী তেল-মশলার সামর্থ্য নেই আমাদের। ভাবছি আমার পুরোনো ঝুমকোটা বিক্রি করে দেব। ডিজাইনটা বড্ড সেকেলে। শুধুশুধু বাড়িতে না রেখে, বিক্রির টাকায় নতুন চাল আর দুধ কিনব। সামনেই তোমার জন্মদিন, একটু পায়েস বানাব ভাবছি। মায়ের হাতের স্বাদ এতে পাবে না। তবে ভালোবাসা মিশিয়ে দেব অনেকটা। আজ আবার চাল কমই নিলাম, এত পেট ব্যথা, খেতেই পারব না। বাড়িতে যা ছিল তাতে আজ চলে যাবে। কাল চাল এনো তুমি।

          আমার ইচ্ছেয় কখনও বাধা দাওনি তুমি। দুপুরে ঘুমালে জ্বর আসে আমার। তাই ওই সময়টুকু বাচ্চাদের পড়াই। আর শনিবার বিকেলে গান, সন্ধ্যায় আঁকা শেখাই। ভাবছি, পরের মাসে দুটো রঙিন পর্দা কিনব। না, তারচেয়ে বরং একটা নতুন সোয়েটার কিনব তোমার জন্য। কি বলো? এমনিও শহরে শীত পড়ল বলে।

           এইটুকু শুনে আবার ভেবে নিও না যে আমি একাই কষ্ট করি। আমি কিন্তু জানি, তোমার গতবারের জন্মদিনে পাওয়া ঘড়ি আর জ্যাকেট বিক্রির টাকার বিনিময়ে এসেছে আমার টুকটুকে লাল শাড়িটা। আমি কিন্তু জানি, তোমার প্রিয় নীল পাঞ্জাবির সোনার বোতাম যাচ্ছে আমার পায়ের একচিলতে নূপুরটা ফিরিয়ে আনতে। আমি কিছু বলিনা তোমায়, যেমন আমায় বলো না তুমি। থাক না একটু "adjustment" আর "sacrifice" এর মত ভারিক্কি শব্দ, আমাদের লাল-নীল অগোছালো সংসারটায়!

- তোমার আমি- সুচন্দ্রা

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

"যোগাসনের বিকল্প কিছু নেই" :শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায়

  আজকাল সুস্থ থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকি। ইদানীং কালে খুব কম বয়সে হৃদরোগের কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে আরও জটিল প্রাণঘাতী রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। প্রতিদিন সময়ের তালে ছুটে চলার তাগিদে আমাদের জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। আর এই কঠিন সময়ে শরীরচর্চার যে সময়টুকু পাওয়া যায়, আমরা অনেকেই জিমে গিয়ে ভারী ভারী লোহালক্কর তুলে থাকি আবার অনেকেই ভোরবেলা হেঁটে থাকেন। প্রাচীন কাল থেকে যোগঅভ্যাস আর প্রাণায়ামের সুখ্যাতি আছে। অনেকেই অভ্যাস করে থাকেন। অনেকের জীবনে   বদলে দিয়েছে যোগঅভ্যাস। তবে জিম না যোগঅভ্যাস এই নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক আছে। নাকি শুধুমাত্র হাঁটলেই মিলবে অনেক রোগ থেকে মুক্তি? তর্ক চলবেই। অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক পরামর্শ দিয়েই থাকেন তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে যোগঅভ্যাসের একটা বিরাট প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশেষত একটা সময় বয়স্করা প্রতিনিয়ত যোগঅভ্যাস করে থাকলেও ইদানীং সববয়সীদের মধ্যে এই প্রচলন দেখা যাচ্ছে। যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে জানালেন যে," যোগব্যায়ামের বিকল্প কিছু নেই। প্রাণায়াম এবং যোগব্যায়াম একজন মানুষকে সম্পূর্নরূপে বদলে দিত...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

শীতের শহরে পারদ বাড়িয়ে দিলেন সায়ন্তনী, কালো পোশাকে ছড়িয়ে দিলেন মায়া

  শীতের ছুটিতে ছুটি কাটিয়ে ফিরলেন অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা। দক্ষিণ গোয়াতে জলকেলি করলেন উষ্ণতার সঙ্গে।  তাঁর কালো পোশাক পরিহিত ছবি মায়া ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। এই শীতে তাঁর উষ্ণ ছবি শহর কলকাতার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছে।  তাঁর এই গোটা ভ্রমণ স্পন্সর করেছিল ফার্ন হোটেল এবং ক্লিয়ারট্রিপ।  তাঁর ঝুলিতে একের পর এক হিট ছবির সারি। 'সমান্তরাল', 'উমা', 'এক যে ছিল রাজা'  কিংবা 'লালবাজার' মতো ওয়েব সিরিজে তাঁর সাহসী অভিনয় দর্শকদের কাছে তাঁর চাওয়া-পাওয়াটা বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু বড় পর্দায় নয়, ছোট পর্দায় 'কিরণমালা', 'জয়ী', 'সাত ভাই চম্পা'-এর মতো কাজ দর্শক আজও মনে রেখেছে। তিনি আগের চেয়ে অনেক পরিণত, অনেক বেশি কাজ নিয়ে বদ্ধপরিকর। অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা এখন শুধুমাত্র ভাল কাজের জন্য মুখিয়ে আছেন। মুখিয়ে আছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে সুপারহিট কাজ দিতে। শুধু বাংলা কেন, বাংলা ছাড়াও বাকি ইন্ডাস্ট্রি যেমন হিন্দি কিংবা সাউথ ইন্ডাস্ট্রিতেও ভাল চরিত্রে কাজ করতে  তিনি প্রস্তুত। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে মায়া - এর মতো হিট বাংলা ছবি।  ত্রিভুজ রিলিজ করতে চলেছে আর কিছু...