আমরা যে মানুষগুলোকে টেলিভিশনের পর্দায় দেখে অভ্যস্ত, তাঁদের সম্বন্ধে আমাদের জিজ্ঞাসা অসীম। আর যদি তিনি আমাদের প্রিয় ব্যক্তি কেউ হন, তাহলে তো কথায় নেই। একরাশ প্রশ্ন নিয়ে মনে হয়, ছুটে যায় তাঁর কাছে। গিয়ে জিজ্ঞাসা করি নানান প্রশ্ন। তবে এই ভয়টাও থাকে যে, তিনি কেমন হবেন ? মানে যেমন পর্দায় দেখি, তেমন কি? নাকি সম্পূর্ণ অন্যরকম ? তবে কিছুক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও ঘটে। অনেক সময় সেই বিখ্যাত মানুষগুলো অবিকল বাস্তবের গল্পের মতো হয়।
ফোনের এপারে আমি আর ওপারে উসষী রায়! হ্যাঁ, নামটা অপরিচিত হতে পারে, কিন্তু মুখটা নয়। বাঙালীর
প্রিয় সিরিয়ালের যদি তালিকা করা যায়, তাহলে প্রায় নব্বই শতাংশ মানুষের পছন্দের
তালিকায় থাকবে ‘ বকুল কথা’। আর এই উসষী রায় হলেন আমাদের প্রিয় ‘বকুল’। আসল নামটা ছাপিয়ে ‘বকুল’ নামেই তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন বাংলার
অসংখ্য দর্শকের কাছে।
রাত ন’টা মানেই ‘বকুল কথা’। আমরা ঠিক যে ভাবে ‘বকুল’কে সিরিয়ালের
পর্দায় দেখে অভ্যস্ত, অভিনেত্রীর কথা
অনুয়ায়ী তিনি বাস্তবে কিন্তু ঠিক উল্টো! তবে একটা কথা বলতেই হচ্ছে, তিনি সিরিয়ালের পর্দায় যতটা মিশুকে, বাস্তবেও ঠিক তাই।
ছোট থেকেই প্রায় ঠিকই করে ফেলেছিলেন, অভিনয় করতে হবে। শুধু তাই নয়, যে বয়সে সবাই নাচের, গানের স্কুলে ভর্তি হতে যায়, তিনি সেই বয়সে গ্রুপ থিয়েটার জয়েন করেন।
তাঁর বাবা একজন চিত্রনাট্যকার, অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর। সেই গাইডেন্স যেমন তিনি পেয়েছেন, ঠিক তেমনি পরিবারের সাপোর্টও পেয়েছেন। অভিনেত্রীর কথায়, ‘’ বাঙালী মধ্যবিত্ত পরিবারে যেমন একটা চাপ থাকে যে এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। সেই চাপটা কিন্তু আমার ছিল না। পরিবার থেকে বলেছিল, যেটা ভাল লাগে সেটা করো, কিন্তু পড়াশুনাটা শেষ করে করো।‘’
তাঁর প্রথম মেগা বলতে, ‘ মিলন তিথি’, এছাড়াও কাজ করেছেন, ‘ জয় কালী কলকাত্তাওয়ালী’তে। ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালী’ প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, ‘’ ওখানে
আমি একটা ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতাম। বেশ ভাল লাগত চরিত্রটা করতে।‘’ একটু থেমে
আবার বললেন, ‘’ আসলে আমি যেটা নয়, সেটা করতে বেশি ভাল লাগে।‘’
শুধু ক্যামেরার সামনে নয়, নাটকের মঞ্চও তাঁর প্রিয় জায়গা। ছোটবেলায় গ্রুপ
থিয়েটার করেছেন, পরবর্তী কালে কৌশিক সেনের দল ‘স্বপ্নসন্ধানী’তে কাজ করেছেন। শুধু
তাই নয়, আটপৌরেকে জানালেন যে নাটকের ডাক পেলে তিনি আজও মঞ্চে উঠতে প্রস্তুত।
ছোট থেকেই পরিবারের সঙ্গে গিয়ে নাটক দেখা, সিনেমা দেখা এগুলোর প্রতি তিনি
অভ্যস্ত। আর থেকেই তাঁর অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছেটা আরও বেড়ে যায়। যদিও সিনেমা
প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, ‘’ এখনও সিনেমা থেকে সেই রকম ডাক পাইনি। পেলে তো অবশ্যই
করব।‘’
সামনেই ভ্যালেনটাইন ডে। তাই অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’আপনার তো অনেক
অনুরাগী, তারা কখনও আপনাকে ভালবাসার প্রস্তাব দেয়নি ?’’ তিনি হাসতে হাসতে বললেন,
‘’না! তারা আমাকে বড্ড সমীহ করে। যদিও তার কারণ ‘বকুল’এর চারিত্রিক গুন, মানে ওই
ডাকাবুকো ব্যাপারটা। সেই জন্যই ওরা আমাকে দিদি বলেই সম্বোধন করে। কথা বলার আগেও
পারমিশান নিয়ে নেয়।‘’
জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ এই মুহূর্তের পছন্দের পুরুষকে ?’’ তিনি জানালেন, ‘’
আয়ুষ্মান খুরানা!’’ একটু থেমে বললেন, ‘’ যদিও এটার ভবিষ্যৎ নেই বলে এগোচ্ছি না।‘’
তারপর শুধু হাসির শব্দ পেলাম।
সবশেষে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ এছাড়া কোনও পছন্দের পুরুষ , অন্তত যেখানে ভবিষ্যৎ
আছে ?’’ উসষী হাসতে হাসতে বললেন, ‘’ আছে। কেউ না তো কেউ আছে। আমি মনে করি প্রেম
ছাড়া জীবন চলে না।‘’
( সাক্ষাৎকার- আদিত্য ঘোষ
ছবি- উসষী রায়ের থেকে সংগৃহীত)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন