তিনি কোনওদিন ভাবেননি যে অভিনয় করবেন। শুধু তাই নয়, তিনি ভেবেছিলেন শিক্ষক কিংবা
অধ্যাপক হবেন। তবে আমরা সবসময় যা ভাবি কিংবা
যেটা করতে চাই, সেটা হয় না। অনেক সময় তার চেয়ে বেশি কিছু ভাল হয়ে যায়। ঠিক তেমনি অভিনেত্রী
সায়ন্তনী গুহঠাকুরতার জীবনেও ঘটেছে।
তিন বছর বয়স থেকে নাচের সঙ্গে যুক্ত। মধ্যিখানে ভেবেও ছিলেন যে, তিনি নৃত্যশিল্পী
হবেন। কিন্তু সেটাও হয়ে ওঠা হয়নি। ফ্যাশান ডিজাইনিং-এর কোর্স থেকে প্রথমে মডেল, তারপর
বাংলা সিরিয়ালের মঞ্চে, এবং তারপর সিনেমা। এখানেই শেষ নয়, এছাড়াও তিনি করেছেন বেশকিছু
শর্ট ফিল্ম, বিজ্ঞাপনের ছবি, এবং মিউজিক ভিডিও।
কেরিয়ারের কিছুটা সময় একটি বাংলা মিউজিক চ্যানেলের ভিজেও ছিলেন।
টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতার কেরিয়ার গ্রাফ যদিও একই ভাবে থাকেনি। সিরিয়ালের শুটিং সেরে বাড়ি ফেরার পথে তাঁর একটি
দুর্ঘটনা ঘটে। সেই জন্য প্রায় দেড় বছর তিনি
এইসব কিছুর নিজেকে বিরত রাখেন। তারপর আবার সুস্থ হয়ে তিনি ফ্লোরে ফিরে আসেন। তবে সেই
সময়টা তিনি ভিজে হিসেবে কাজ করেছেন। সায়ন্তনীর কথায়, ‘’ সেই সময় সিরিয়ালের শুটিং-এর
চাপ নিতে পারতাম না। শারীরিক ভাবে তখন দুর্বল ছিলাম। তবে ভিজে-এর কাজ করতে পারতাম।‘’
‘হিরো’ তাঁর প্রথম অভিনীত ধারবাহিক। এছাড়াও তিনি ‘ কিরনমালা’, ‘ সাত ভাই চম্পা’,
‘ জয় কালী কলকাত্তায়ালী’ প্রভৃতি সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন। সদ্য রিলিজ করেছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘ বৃষ্টি তোমাকে
দিলাম’। এছাড়াও পথিকৃৎ বসুর ছবি এবং রুদ্রনীল ঘোষের লেখা ‘ কে তুমি নন্দিনী’তে অভিনয়
করতে দেখা যাবে সায়ন্তনীকে।
তাঁর কেরিয়ারের ঝুলিতে রয়েছে ‘ উমা’, ‘এক যে ছিল রাজা’, ‘জলে জঙ্গলে’ , ‘কিন্তু
গল্প নয়’-এর মতো সিনেমা। শুধু টলিউড নয়, সম্প্রতি
একটি তেলেগু সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। সদ্য
মুক্তি পেতে চলেছে সেই ছবিটি।
অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ আপনি তো কলকাতায় যেমন অভিনয় করেছেন, ঠিক তেমনি
কলকাতার বাইরেও অভিনয় করেছেন। কলকাতার বাইরে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ?’’
তিনি জানালেন যে, ‘’ বিশেষত মুম্বইতে একজন নবাগতকে যতটা প্রাধান্য দেওয়া হয়, সেটা
কলকাতার বাজারে নেই। আমি যে তেলেগু সিনেমাটায় অভিনয় করেছি, সেটার জন্য পাটায়া গিয়েছিলাম।
আমাদের প্রত্যেকটা আর্টিস্টের জন্য আলাদা আলাদা মেকআপ ভ্যান ছিল শুধু তাই নয় প্রত্যেকের
জন্য আলাদা আলাদা ঘরেরও ব্যবস্থা ছিল। যেটা
কলকাতায় খুব বড় মাপের কেউ পায়।‘’
অভিনেত্রীকে একটু থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ এই যে বাংলা সিরিয়াল নিয়ে এত ট্রল
করা হয়, এই নিয়ে আপনি বলবেন?’’ সায়ন্তনী একটু হেসে জানালেন, ‘’ আমার মনে হয় যারা বেশি
সিরিয়াল দেখেন, তারাই এটা করেন। কারণ তারা এই ব্যাপারে বেশি জানেন।‘’ আবার জিজ্ঞাসা
করলাম, ‘’ বাংলা সিরিয়ালের এমন অনেকে আছেন, যারা গান গাইতে পারেন না তবুও বড় মঞ্চে
গান গায় শুধু তাই নয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলও হয়!’’ অভিনেত্রী আবার হেসে বললেন, ‘’ আসলে
তাঁরা সিরিয়ালের পরিচিত মুখ, তাই লোকে তাঁদের দেখতে যায়। এটাই পাবলিসিটি। সিরিয়াল শেষ হয়ে গেলে তাঁদের নিয়ে
ট্রলও শেষ হয়ে যাবে।‘’
অভিনয়ের বাইরে যেটুকু সময় তিনি পান, সেটা কিন্তু তিনি চুটিয়ে এনজয় করেন। তিনি ঘুরতে
খুব ভালবাসেন। আটপৌরেকে তিনি জানালেন যে এখনও তাঁর কাশ্মীর ঘোরা হয়নি, অথচ তাঁর সেটা
খুব প্রিয় জায়গা। আর গ্রীসেও তিনি যেতে চান।
প্রেম নিয়ে কথা বলতে গেলে অভিনেত্রী একটু ভাবুক হয়ে গেলেন। তিনি হাসতে হাসতে বললেন,
‘’ আসলে ঠিক প্রেম নয়। মানে ওইরকম কিছু নয়। লুকোচুরি খেলছি বলতে পারেন।‘’
অভিনেত্রী একটু থামলেন, তারপর ফোনের ওপার
থেকে শুধুই হাসির শব্দ পেলাম।
( সাক্ষাৎকার- আদিত্য ঘোষ
ছবি- সায়ন্তনী গুহঠাকুরতার থেকে সংগৃহীত)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন