শাশুড়ি এবং বউমার মধ্যে মিল নেই! ঝগড়া হয় রোজ। চুন থেকে পান খসলেই বেঁধে যায় তৃতীয়
বিশ্বযুদ্ধ। হ্যাঁ, এটা দেখে আমরা অভ্যস্ত। মধ্যবিত্ত বাঙালি বাড়িতে এটা নিত্যনৈমিত্তিক
ঘটনা। কিন্তু সব কিছুর যেমন বাজে দিক আছে , ঠিক তেমনি ভাল দিকও আছে। ‘মুখার্জিদার বউ’ এমনই গল্প বলে।
শাশুড়ি- বউমার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি। পরিচালক পৃথা
চক্রবর্তী সঙ্গে কথা বলে জানা গেল যে সিনেমাটি রিলিজ করছে আগামী ৮ মার্চ, অর্থাৎ
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন। এর আগে বাংলা সিনেমায় নারীদের নিয়ে নারীদিবসে এমন
রিলিজ যে কবে হয়েছে সেটা বলাই বাহুল্য।
পরিচালক আরও জানালেন যে, ‘’ এই সিনেমায় নারীদের আইডেন্টিটি ক্রাইসিস নিয়ে বলা
হয়েছে। বিশেষত বিয়ের পর নারীদের অমুকের বউ বলে সম্বোধন করা হয়ে থাকে। এর মাঝে সে
নিজের আসল পরিচয়টা হারিয়ে ফেলে।‘’
পৃথা চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ এখনকার দিনে বাংলা সিরিয়াল খুললেই তো
শাশুড়ি-বউমার ঝগড়া দেখা যায়। এটা তো খুব কমন। আপনি হঠাৎ এটা নিয়ে সিনেমা বানাতে
গেলেন কেন ?’’ উত্তরে পরিচালক জানালেন, ‘’
সিরিয়াল অন্য কথা বলে। সেখানে হয়ত সমস্যাগুলো দেখানো হলেও সমাধানগুলো নেই। আর
সিরিয়ালে যে পরিসরে শাশুড়ি-বউমার সম্পর্ক দেখানো হয়, এখানে তার চেয়ে অনেক বড়
পরিসরে সম্পর্কটা দেখানো হয়েছে। সিরিয়াল দেখে আমরা ওই চরিত্রগুলোর সঙ্গে নিজেদের
রিলেট করতে পারি না। কিন্তু হয়ত এই সিনেমায় আমরা রিলেট করতে পারব।‘’
(কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, অনসূয়া মুজমদার, পৃথা চক্রবর্তী)
একটু থেমে
তিনি আরও জানালেন, ‘’ আসলে সমাজ ভাবে আমরা মেয়েরা একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু ব্যাপারটা
আসলে তা নয়। পরিস্থিতি আমাদের ওই ভাবে দেখায়। আমরা যদি একে অপরের বিরুদ্ধে না
দাঁড়িয়ে, একে অন্যের হাত ধরে চলতে পারি তাহলে চলার পথ মসৃণ হয়।‘’
‘উইনডোজ’ প্রযোজিত ‘মুখার্জিদার বউ’সিনেমায়
শাশুড়ি এবং বৌমার চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনসূয়া মুজমদার ও কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এছাড়াও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, বিশ্বনাথ, অপরাজিতা আঢ্য়, বাদশা মৈত্র এবং আরও অনেকে।
পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এটা তাঁর পরিচালনার প্রথম ছবি। যদিও তিনি
এর আগে বেশ কিছু অ্যাড ফিল্ম, ডকুমেন্টারি বানিয়েছেন। তিনি সিনেমা প্রসঙ্গে আরও
জানালেন যে ‘ সাইলেন্ট ভয়েসেস’ নামে একটি
তথ্যচিত্র তিনি বানিয়েছিলেন। যার বিষয়বস্তু ছিল মেয়েদের বিয়ের পর আইডেন্টিটি
ক্রাইসিস। মূলত তাঁর মাকে নিয়ে বানানো হয় এই তথ্যচিত্র।
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় তাঁর বেশকিছু স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি দেখে তাঁকে সিনেমা
বানানোর প্রস্তাব দেন। শুধু তাই নয়, তিনি ‘ সাইলেন্ট ভয়েসেস’-এর বিষয়বস্তুকে
সিনেমার রূপ দিতে চান। সেখান থেকেই তৈরি হয় ‘মুখার্জিদার বউ’।
পরিচালক চান সিনেমাটি সবাই দেখুক। শুধু শাশুড়ি-বউমা নয়, প্রত্যেকেই এই
সিনেমাটির সঙ্গে নিজেকে রিলেট করতে পারবেন।
( সাক্ষাৎকার- আদিত্য ঘোষ)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন