শীতের কামড় শহরে পড়তেই যেমন আনন্দে মেতে উঠেছে শহরবাসী তেমনি গলা খুশখুশ থেকে পেটের সমস্যার জেরবার অনেকেই। খুশির শীতে টুকটাক অসুখ লেগেই থাকে। অনেকেই এলোপ্যাথির ওষুধ ছাড়াও ভরসা করেন হোমিওপ্যাথিতে। আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক সুস্বত দাস জানালেন, " হোমিওপ্যাথি ওষুধ অনেকটা ম্যাজিকের মতো কাজ করে। বিষেশত আমার এমন অনেক পেশেন্টকে আমি একবেলার মধ্যে সরিয়ে তুলেছি।" এই খবরের সত্যটা আটপৌরে যাচাই না করলেও তিনি আরও জানালেন যে, " হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা এখন অনেকটা ছড়িয়ে পড়েছে। আগের মতো ধ্যানধারণা এখন আর নেই। আমরা প্রেসক্রিপশনে লিখে ওষুধ দিই। ওই খামে লিখে ওষুধ দেওয়ার দিন চলে গিয়েছে। "
একটু থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, " লোকে হোমিওপ্যাথিতে কেন ভরসা করছে?" তিনি জানালেন, " হোমিওপ্যাথিতে কোনও সাইড এফেক্ট নেই। আর হোমিওপ্যাথি সব রোগকেই গোড়া থেকে নির্মূল করে। তবে না জেনে কোনও ওষুধই খাওয়া উচিত নয়।" ওনাকে আবার থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, " লোকে বলে হোমিওপ্যাথি ওষুধে কোনও রোগ সারতে অনেক সময় লাগে! আপনি এই কথাটা মানবেন?" ডাক্তারবাবু জানালেন, " একদমই নয়। আসলে এগুলো এক একটা মিথ। রোগ সারাটা সেই রোগের লক্ষণ এবং রুগীর ওপর নির্ভর করে। অন্য কোনও রোগ নির্ণায়ক পদ্ধতির সঙ্গে তুলনা করলে হবে না।" একটু থেমে আরও জানালেন, " কোভিড সময়ে কিংবা কোভিড পরবর্তী সময়ের পর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় অনেকেই ভরসা করেছেন। কারণ কোভিড পরবর্তী সময়ে অনেকেরই কিছু ক্রনিক রোগের উপসর্গ দেখা যায় এবং অনেকই এলোপ্যাথি ওষুধ ছেড়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করান। এলোপ্যাথি ওষুধের যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে সেটা হোমিওপ্যাথিতে নেই।"
বললাম," এই শীতকালে সুস্থ থাকার কিছু পরামর্শ দিন।" ডাক্তারবাবু বললেন," যতটা কম সম্ভব ঠান্ডা লাগান। একটু উষ্ণ গরম জলে গার্গেল করুন রোজ। খালি পেটে উষ্ণ গরম জল ভাল কাজ করে। পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আর যদি অল্পতেই ঠান্ডা লাগার ধাত থাকে তাহলে বাড়িতে রাখতে পারেন জাস্টিসিয়া মাদার টিনচার। এছাড়াও ওসিমাম সেনটাম মাদার টিনচার খুব ভাল কাজ করে। এগুলো দশ ফোঁটা গরম জলে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। বুকে কফ জমা কিংবা অল্প কাশিতে এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।"
জিজ্ঞাসা করলাম," শীতকালে পেট খারাপের সমস্যা তো লেগেই থাকে, সেক্ষেত্রে কোনও বিশেষ ওষুধের কথা বলবেন ?" তিনি জানালেন," হোমিওপ্যাথিতে ওইভাবে কিছু বলা যায় না। যার যেরকম লক্ষণ তাকে সেইভাবে ওষুধ দিতে হবে। খাদ্যে বিষক্রিয়া হলে আমরা সাধারণত পালসিটিলিয়া দিয়ে থাকি। তবে আমার অনেকক্ষেত্রে নাক্স ভমিকা দিয়ে থাকি। কখনও কখনও আর্সেনিক আলবাম দিয়ে থাকি। এটা এইভাবে বলা মুশকিল। তবে এইটুকু বলতে পারি শীতকালে জল ফুটিয়ে খাওয়া ভাল। বাইরের জল চেষ্টা করবেন এড়িয়ে যাওয়ার।"
সবশেষে জিজ্ঞাসা করলাম," হোমিওপ্যাথিতে কি বিপদকালীন চিকিৎসা সম্ভব?" তিনি বললেন, " সেটা এখন সম্ভব হয়নি। তবে হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেলে অনেক জটিল রোগ সেরে যায় যেগুলো বিপদকালীন অসুখ তৈরি করতে সক্ষম। তবে একটাই ব্যাপার বলব নিজে নিজে ডাক্তারি করবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হোমিওপ্যাথিকে হাল্কা ভাবে নেবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।"
আজকাল সুস্থ থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকি। ইদানীং কালে খুব কম বয়সে হৃদরোগের কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে আরও জটিল প্রাণঘাতী রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। প্রতিদিন সময়ের তালে ছুটে চলার তাগিদে আমাদের জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। আর এই কঠিন সময়ে শরীরচর্চার যে সময়টুকু পাওয়া যায়, আমরা অনেকেই জিমে গিয়ে ভারী ভারী লোহালক্কর তুলে থাকি আবার অনেকেই ভোরবেলা হেঁটে থাকেন। প্রাচীন কাল থেকে যোগঅভ্যাস আর প্রাণায়ামের সুখ্যাতি আছে। অনেকেই অভ্যাস করে থাকেন। অনেকের জীবনে বদলে দিয়েছে যোগঅভ্যাস। তবে জিম না যোগঅভ্যাস এই নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক আছে। নাকি শুধুমাত্র হাঁটলেই মিলবে অনেক রোগ থেকে মুক্তি? তর্ক চলবেই। অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক পরামর্শ দিয়েই থাকেন তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে যোগঅভ্যাসের একটা বিরাট প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশেষত একটা সময় বয়স্করা প্রতিনিয়ত যোগঅভ্যাস করে থাকলেও ইদানীং সববয়সীদের মধ্যে এই প্রচলন দেখা যাচ্ছে। যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে জানালেন যে," যোগব্যায়ামের বিকল্প কিছু নেই। প্রাণায়াম এবং যোগব্যায়াম একজন মানুষকে সম্পূর্নরূপে বদলে দিত...
Oh tai
উত্তরমুছুন