বাঙালি দর্শক তাঁকে ‘ডালি’ নামেই বেশী চেনেন। ‘ ভজগোবিন্দ’ সিরিয়ালের সেই
মেয়েটা, যে বাংলা সিরিয়ালের দর্শকদের মণিকোঠায় থেকে গিয়েছেন এখনও। তাঁর অভিনয়ের
মধ্যে একটা অন্যরকম ব্যাপার আছে। তিনি সবসময় চান একটু অন্য কিছু করতে। যেকোনও চরিত্র করুন না কেন তিনি সেই চরিত্রের
মধ্যে দিয়ে দর্শককে ছুঁতে চান। তিনি বারবার মনে করিয়ে দিতে চান, প্রত্যেকটা
চরিত্রের মধ্যে আলাদা আলাদা গুন আছে এবং সেটাই কিন্তু ওনার ইউএসপি! টলিউড ডিভা
স্বস্তিকা দত্ত তাঁর এই ছ’বছরের কেরিয়ারে ইতিমধ্যেই হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেলেছেন।
তাঁর অভিনীত ‘ পারব না আমি ছাড়তে তোকে’ ‘ হরিপদ ব্যান্ডওয়ালা’ ‘ অভিমান’
প্রত্যেকটি ছবিই কিন্তু বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করেছে। শুধু তাই নয়, এই ছবিগুলো তাঁর
কেরিয়ারের প্রথম দিকের কাজ।
এই মুহূর্তে তিনি ছোট পর্দায় কাজ করছেন। সম্প্রতি স্টার জলসায় ‘ ঠাকুমার
ঝুলিতে’ তিনি একটি ‘মাইথোলজিক্যাল’চরিত্রে অভিনয় করেছেন। যার শুটিং হয়েছে
ব্যাংককে। আটপৌরেকে তিনি জানালেন ‘’ প্রথমে এই অফারে রাজি হয়নি। আসলে আমি এই
মাইথোলজিক্যাল ক্যারেক্টার পারি না। কিন্তু পরে ভাবলাম যে আমাকে এই ‘ ডালি’ থেকে
বেরোতে হবে। সারাজীবন ওটা নিয়ে বসে থাকলে হবে না। তাই কাজটা করলাম।‘’
তিনি যখন ক্লাস টেনে পড়েন, সেই সময় থেকে মডেলিং-এর সঙ্গে যুক্ত। একটি সংবাদপত্রের জন্য প্রায় তিন বছর তিনি
মডেলিং করছেন এবং তারপর ঘটনাক্রমে সিনেমায় আসা। শুধু তাই নয় রাজ চক্রবর্তীর
পরিচালনায় কাজ করা। কেরিয়ারের শুরুতেই এমন সৌভাগ্য ক’জনের হয়েছে সেটা বলা মুশকিল।
মাস কমিউনিকেশনের ছাত্রী ছিলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত। তবে তিনি ঠিকই করে
নিয়েছিলেন যে সাংবাদিক হবেন না। তবে ক্যামেরার পিছনে কিছু ক্রিয়েটিভ কাজ করবেন।
তবে এটা ভাবেননি যে কেরিয়ারের শুরুতেই এত বড় একটা সাফল্য পাবেন।
অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসা করলাম ‘’ ইনটারভিউ দিতে ভাল লাগে নাকি ইনটারভিউ নিতে ?’’
অভিনেত্রী হাসতে হাসতে বললেন, ‘’ এখন আসলে ইনটারভিউ দিতে দিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি,
তাই নিতে আর ভাল লাগে না। ‘’ অভিনেত্রীকে একটু থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ ‘ডালি’ই
কি আপনার জীবনের টারনিং পয়েন্ট ?’’ স্বস্তিকা জানালেন , ‘’কিছুটা তো অবশ্যই। আর
আমি যা করি, চেষ্টা করি সেটা মন দিয়ে করার। আমার প্রত্যেকটা কাজের মধ্যে একটা ‘
সিগনেচার’ থাকে। তাই কোনও সিরিয়ালের হয়ে শো করতে গেলে, শো শেষে কিন্তু আমাকে
অনেকেই বলে, ‘ললনা’ গানটির কথা। মানে আমার সিনেমার কথা।‘
অভিনেত্রী আবার জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ আচ্ছা, বাংলা সিরিয়াল নিয়ে তোঁ প্রচুর ট্রল
হয়। এই নিয়ে আপনি কী বলবেন ?’’ স্বস্তিকা জানালেন, ‘’ ‘ভজগোবিন্দ’ যখন করতাম তখন
প্রচুর ট্রল হয়েছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে নিয়ে একটা বাজে ট্রল হয়েছিল। যে পেজটা
ট্রল করেছিল, তার অ্যাডমিনকে আমি মেসেজ করেছিলাম যে তারা এটা কেন করেছে। সেই
উত্তরে তারা বলেছিল, ‘ দিদি আমারা তোমাদের বিরাট ফ্যান’।
স্বস্তিকা দত্ত এমনিতে বড্ড মিশুকে এবং সোজাসাপটা। তিনি আটপৌরেকে জানালেন, ‘’
আমি কিন্তু বড্ড কুঁড়ে! এমনিতেও পার্টিতে খুবই কম যায়। আর সেটাও যদি বাড়িতে হয়
তাহলে খুব ভাল। কাজ না থাকলে ওই ঘুম, খাওয়া, জিম আবার ঘুম!’’ তিনি একটু থেমে আবার
বললেন, ‘’ ইতিমধ্যে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি তবে কাসল যাওয়ার বড্ড ইচ্ছে। দেখি
এইবছর পুজোতে যদি হয়।‘’
স্বস্তিকাকে প্রেম নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি একটু ভাবুক হয়ে গেলেন। আমি
জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ আপনি কি এখন কমিটেড?’’ তিনি হাসতে হাসতে জানালেন, ‘’ এই
কিছুদিন আগে তো কমিটেড বানানটা শিখলাম।‘’ আবার জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ কেমন পুরুষ
আপনার পছন্দ ?’’ একটু ভেবে তিনি বললেন, ‘’ সে যাই করুক, সে যেন তাঁর কাজের প্রতি
ফোকাসড হয়। আমাকে বুঝবে। আমার সঙ্গে গল্প করবে আর...’’ তারপর ফোনের ওপার থেকে শুধু
হাসির শব্দ পেলাম।
( সাক্ষাৎকার - আদিত্য ঘোষ
ছবি - স্বস্তিকা দত্ত- এর থেকে সংগৃহীত)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন