সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"আগেও অ্যাডিনো ভাইরাসে অনেকেই আক্রান্ত হতো এবং সুস্থও হয়ে উঠত।"-ডাক্তার ব্রতেশ দাস


 শহর জুড়ে অ্যাডিনো ভাইরাসের দাপাদাপিতে  অনেকের মনেই বাসা বেঁধেছে ভয়। বিশেষত দুই বছরের কম শিশুদের অভিভাবকদের মুখে চিন্তার ভাঁজ। খবরের শিরোনামে এখন অ্যাডিনো! তবে কী এই অ্যাডিনো ভাইরাস? এই ভাইরাসের থেকে বাঁচার উপায় আছে কি? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক ব্রতেশ দাস জানালেন, " এই মুহূর্তে আতঙ্কিত না হয়ে বরং ভাইরাসের মোকাবিলা করতে গেলে সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। এছাড়া এই ভাইরাস মূলত দুই বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তবে এই সময়ে অনেক বড় বাচ্চাদেরও এই ভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়ষ্কদের মধ্যেও অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন।" 


কলকাতা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ব্রতেশ দাস আরও জানালেন যে, "আগেও এই ভাইরাসে অনেকেই আক্রান্ত হতো এবং সুস্থও হয়ে উঠত। তবে এই বছরে আমরা একটু বেশীই সংক্রমণ হতে দেখছি। তাই আগেভাগে সতর্কতাও নিচ্ছি। এই ভাইরাস মূলত আমাদের শ্বাসযন্ত্রে আক্রমন করে। সাধারণ ঠান্ডা-গরমের মতো কিছু লক্ষণ থাকে। জ্বর-সর্দি-কাশি হিসেবে এই রোগের লক্ষণ সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তারপরে ধীরে ধীরে জ্বরের মাত্রা বাড়তে থাকে। অনেকের ক্ষেত্রে চোখ টকটকে লাল হয়ে যায়। অনেক শিশুর ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা যায়। তবে আমার মতে শরীরে সামান্য লক্ষণটুকু দেখা গেলেই প্রথমেই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। একেবারেই ফেলে রাখা উচিত নয়।" 


ডাক্তারবাবুকে একটু থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, " বুঝব কী করে যে কোনও শিশু অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে?" ডাক্তার দাস জানালেন, " এটা খুব জটিল ব্যাপার। প্রধানত মুখ এবং নাকের সোয়াব( swab) নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। রেস্পিরেটরি ভাইরাল প্যানেল পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যেতে পারে।" একটু থেমে ডাক্তারবাবু আরও জানালেন যে, " এই ভাইরাসের কোনও বিশেষ ওষুধ নেই। সবটাই লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কোনও শিশুর বারেবারে জ্বর আসছে। প্যারাসিটামল খেয়েও সেই জ্বর নামছে না। অনেক সময় আমরা সারা শরীরে জল দিয়ে মোছানোরও পরামর্শ দিই। তবে সতর্ক থাকতে হবে যেন আমরা একদম প্রাথমিক পর্যায়ে যেন এই রোগের চিকিৎসা শুরু করতে পারি।" 


এই মুহূর্তে অ্যাডিনো ভাইরাসে শিশু মৃত্যুর সংখ্যাটা দুই সংখ্যায় ঘরে, আক্রান্ত প্রায় পাঁচ সংখ্যার অঙ্ক ছাড়িয়েছে। এই মুহূর্তে বিশেষত বাচ্চাদের বাড়ির অভিভাবকরা চিন্তিত। তবে অভিভাবকদেরও সতর্ক থাকতে হবে। ডাক্তার ব্রতেশ দাশ বললেন, " আমরা শুধু বাচ্চাদের নিয়ে চিন্তিত থাকলেই হবে না। এই সময়টায় বড়দের অনেকেরই কাশি-সর্দি লেগে থাকে। তাই সামান্য কাশি-সর্দি হলেই মাস্ক ব্যবহার করুন। বাড়ির বাচ্চাদের থেকে দূরে থাকুন। বারেবারে হাত স্যানিটাইজ করুন।" 


সবশেষে ডাক্তারবাবু জানালেন, " যে সমস্ত বাচ্চাদের জন্ম থেকে কোনওরকম হার্ট সংক্রান্ত অসুখ, প্রিম্যাচ্যুরিটি, বা ফুসফুসের ক্রনিক অসুখ থাকে তাহলে তাদেরকে একটু সাবধানে রাখুন। কারণ এই ভাইরাসটা মূলত বুকেই সংক্রমণ তৈরী করে। আর একদম কোনও রকম টোটকা অবলম্বন না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।" 


( বক্তা- ড. ব্রতেশ দাস

এম.ডি পেডিয়াট্রিক্স

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে যুক্ত

সাক্ষাৎকার- আদিত্য ঘোষ )

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভূতে ভয় পেলেও, ‘ সেক্সি ভূত’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় পাননি সায়ন্তনী

টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ডেবিউ করে ফেললেন দক্ষিণী সিনেমায়। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি আটপৌরেকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই হোলিতে সিনেমাটি রিলিজ করার পর থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। যদিও তার কারণ, তিনি এই প্রথম একটি ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি ‘ সেক্সি’ ভূতের চরিত্রে এবং তাঁকে নিয়েই গল্পটা গড়ে উঠেছে।  সিনেমার নাম, ‘ চিকাটি গাডিলু চিঠাকোটুন্ডু’। তেলেগু সিনেমায় কাজ করে বেশ উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনী। এখানেই শেষ নয়, তেলেগু ইন্ড্রাস্টির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে । ইতিমধ্যে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গল্পটিতে দেখা যায় দুই যুগল জুটি ছুটি কাটাতে গিয়ে আটকে যায় একটি ভৌতিক বাড়িতে।  সেখানে তারা একটি সেক্সি ভূতের পাল্লায় পরে। তারপর গল্প আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেই।  সায়ন্তনী আটপৌরেকে জানালেন , ‘’ আমাকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজ করে এই সিনেমার ব্যাপারে জানিয়েছেন! তাঁদের আমার চরিত্রটাও ভাল লেগেছে।‘’ ‘’ আপনাকে কেউ যদি রিয়েল লাইকে সেক্সি বলেন, সেটা আপনি কীভাব...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

রোগ চিনে নেওয়ার বিভিন্ন উপায় বাতলে দিচ্ছেন ডাক্তার সোমনাথ বিশ্বাস

হৃদয়ঘটিত বিভিন্ন রোগের অশনিসংকেত বুঝবেন কী করে-( পর্ব ১) খাই খাই বাঙালির বুকে ব্যথা হবে না, এও কি সম্ভব? যুগে যুগে বাঙালি জাতি নিজেরাই ডাক্তারি করে মোটামুটি বুঝে নিয়েছে বুকে একটু-আধটু ব্যথা মানেই ওটা গ্যাসের সমস্যা। আসলে বাঙালি জাতি এটা মানতেই অস্বীকার করে যে বুকে ব্যথা হৃদয় ঘটিত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সেটা অনেক সময় হার্ট এট্যাক এর লক্ষণও হতে পারে। উঁহু, অযথা ভয় পাওয়ার জন্য নয় এই লেখা নয়। উপরন্তু এই লেখা শুধুমাত্র একটা প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তবে ডাক্তার বাবু বিশ্বাস মহাশয় কফি খেতে খেতে কহিলেন, " আধুনিক জীবনে আমি একটা স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করতে পারলে, বুকে হঠাৎ ব্যথা হলে একটা ইসিজি করিয়েও দেখতে পারি। আমরা যদি বুকে ব্যথা ব্যাপারটা চেপে যায় তাহলে আর কি আধুনিক হলাম, তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এত উন্নতি হয়ে লাভ কোথায়?" কফির কাপে চুমুক দিয়ে ডাক্তার বিশ্বাস আরও জানালেন যে, " আমাদের বুঝতে হবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেকটা এগিয়েছে, তার সঙ্গে আমাদেরও এগোতে হবে। বুকে ব্যথা মানেই গ্যাস এবং সঙ্গে সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ খাওয়া মানেই সমস্যার শেষ এটা ভাবা একদমই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।" একটু...