এই যুগে ফুড ব্লগিং অনেকটা কোভিডের মতো ছোঁয়াচে। তবে আমরা যারা বাড়িতে বসে এই সব ফুড ব্লগিং দেখে থাকি কিংবা যাদের জন্য এইসব ফুড ব্লগিং দেখে জিভে জল আসে, তাদেরকে কুর্নিশ। তারা অন্তত বিগত বেশ কয়েকটা বছর ধরে খাদ্য এবং খাদকে আমাদের ডাইনিং টেবিলে নিয়ে এসেছে। শুধু তাই নয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে যে সাবলীলভাবে উপায় করা যেতে পারে তার খোঁজও তাঁরা দিচ্ছে। বাংলায় এই মুহূর্তে ফুড ব্লগারদের ছড়াছড়ি। তবে এই ভিড়ে যারা একটু আলাদা তাদের মধ্যে '১০০ এন্ড এভব'-এর মাথা দীপায়ন রায় অর্থাৎ দীপ।
আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে দীপ জানালেন, " ২০১৯ সাল থেকে ফুড ব্লগিং করছি, যদিও আমার পেশা আর নেশা এক নয়। কারণ আমি প্রচন্ড ঘুরতে ভালবাসি, ট্রাভেল ব্লগ করি। খেতে ভালবাসি। তবে এইগুলো নেশা। পেশাগতভাবে আমি ইঞ্জিনিয়ার।" একটু থামিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলাম, " নেশাকেই পেশা হিসেবে বেচে নেননি কেন?" দীপ জানাল, " আসলে আমি খুব নিয়ম মেনে কাজ করতে ভালবাসি। আমি চাকরি করতে করতে সববৎ শিখেছি। আমার মনে হয় জীবনের একটা চাকরি আমাদের অনেক কিছু শেখায়। তাই জীবনের প্রাথমিক শিক্ষার পরে চাকরি করা জরুরি।" তাঁকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম," ফুড ব্লগিংয়ের শুরু কীভাবে?" দীপ জানালেন, " খুব একটা হিসেব কষে কিছু করিনি। তবে খেতে ভালবাসতাম সেটাকেই যদি দেখানো যায় এই ভেবেই শুরু। তারপরে আস্তে আস্তে আরও অনেক কিছু শিখেছি।"
দীপায়নের চ্যানেলে ঢুঁ মারলে দেখা যায় সেখানে জনসংখ্যা প্রচুর। প্রচুর প্রাপ্তি দিনশেষে। হয়ত দীপের নিজস্ব স্টাইলের জন্য। তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে তিনি জানালেন," আমি গত একবছরে ইউটিউবে অনেক কম ভিডিও আপলোড করেছি। কিন্তু তাও আমার দর্শক কিন্তু আমাকে ভুলে যাইনি। এটার কারণ কী, তা আমি জানি না। তবে লোকে আমাকে এখনও ফলো করে।"
মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে দীপ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার হলেও ঘোরা আর খাওয়ার নেশা কখনই তাঁকে দমাতে পারেনি। দীপের ইচ্ছে ছিল এইভাবেই ঘুরে বেরিয়ে জীবন কাটিয়ে দেওয়ার কিন্তু পেটের টান তাঁকে থামিয়ে দিয়েছে কিছুটা হলেও। তাঁর কথায় ," আমি অন্তত শুধুমাত্র ইউটিউব করে পেট চালানোর কথা ভাবি না। ভাবতে পারি না। তবে যারা শুধুমাত্র ইউটিউব করে পেট চালাচ্ছে, তাদের কুর্নিশ।"
জিজ্ঞাসা করলাম," তোমারা যারা ফুড ব্লগার তাদের ফিট থাকার রহস্য কী?" তিনি জানালেন, " কোনও রহস্যই নেই, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওইসব আর ঠিক থাকে না। আগে গিয়ে সব খাবার সমপরিমাণে খেয়ে দেখতাম, তবে এখন আর সেই দম নেই।"
আজকাল ফুড ব্লগারে ছেয়ে গিয়েছে। একই কন্টেন্ট তৈরি হচ্ছে। তাই দীপ জানালেন, " একই কন্টেন্ট বিভিন্ন ভাবে তৈরি হচ্ছে, তাই ভয় হয় ভবিষ্যতে কী আদেও এত জনপ্রিয়তার সঙ্গে ফুড ব্লগিং থাকবে?" হয়ত সময়ই সেই কথা বলবে। তবে খাই খাই বাঙালি কিন্তু দীপকে ফলো করেই চলবে, দীপই একমাত্র এই রাজ্যের ফুড ব্লগার যিনি কাতারপুর যাওয়ার সাহস দেখিয়েছিল। এই সাহসই আসল।
এই জন্যই তো দীপ আলাদা, দীপ ইউনিক। সবশেষ জিজ্ঞাসা করলাম, " চ্যানেলের এইরকম নাম কেন?" দীপ হাসতে হাসতে বলল, " এই জন্যই আমার ওজনটা দায়ী!"
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন