যারা এখনও খবর পাইনি- আদিত্য
“ খবর শুনেছ ?’’
‘’কী হয়েছে ?’’
‘’ পরকীয়া বৈধ হয়ে গিয়েছে!’’
‘’ তাতে কী ?’’
‘’ আরে কী মানে ? আমরা এখন থেকে বৈধ। ‘’
‘’ তুই এখনও বাচ্ছা।‘’
‘’ মানে?’’
‘’ কিছু না! নিজের কাজ কর!’’
‘’ আরে কী হয়েছে বলো তো ?’’
‘’ কিছু না!’’
‘’ তোমার চোখ অন্য কথা বলছে কিন্তু।‘’
‘’ ওসব হেঁয়ালিয় রাখ!’’
‘’ সত্যি বলো , কী হয়েছে।‘’
‘’ আরে কিছু হয়নি।‘’
‘’ বরের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে?’’
‘’ আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয় না!’’
‘’ আমাকে মিথ্যে বলছ।‘’
‘’ তোকে মিথ্যে বলে কী লাভ আমার ?’’
‘’ আর সম্পর্কের মধ্যে ঝগড়া না হলে সেই সম্পর্ক মজবুত হয় না!’’
‘’ থাক! আর
জ্ঞান দিতে হবে না।‘’
অন্যদিনের মতোই একটা ব্যস্ত সকাল! জয়ী মেয়েকে স্কুলে দিয়ে এসে হেঁসেল সামলাচ্ছে। তবে আজ প্রতিদিনের মতো জয়ী সালোয়ার
পরেনি। একটা ব্রাউন কালারের টি-শার্ট আর একটা গ্রে কালারের হট প্যান্ট
পরেছে ।
যদিও হট প্যান্ট পরলেই যে সেক্সি লাগবে তা নয়, বয়সের ছাপ স্পষ্ট। শরীরের ভাঁজগুলো আস্তে আস্তে উধাও হচ্ছে। বুকের ভাঁজে সেই গভীরতা নেই। কিন্তু তাও এমন একটা কিছু আছে, যেটা বারেবারে আমাকে টানে। আমি বুঝতে পারি না কী!
‘’ তোমার শরীরের ভাঁজগুলো দিনে দিনে উধাও হচ্ছে!’’
‘’ তাতে তোর কী?’’
‘’ তোমাকে হারাতে চাই না তাই!’’
‘’ আমাকে না আমার শরীরকে?’’
‘’ প্রেম করতে গেলে শরীর লাগে, নয়ত সেই প্রেম উবে যায়।‘’
‘’তার মানে তুই
আমার শরীর ছাড়া কিছুই ভালবাসিস না ?’’
‘’ শরীরকে ভালবাসা না দিলে তো মনকে ভালবাসা দিতে পারব না!’’
‘’ তার মানে তোর কাছে আগে শরীর!’’বেশ অভিমানের সঙ্গে বলল জয়ী। জয়ীর চোখের কোনায় একরাশ সম্ভবনা দেখতে পেলাম, যেগুলো আদেও সম্ভব কিনা কে জানে! শুধু এইটুকু বুঝতে পারলাম জয়ী রাগ করেছে। আমি জয়ীর কয়েক হাত দুরের বারান্দাতে সিগারেট টানছিলাম। সিগারেটটা নিভিয়ে এগিয়ে এসে জয়ীর হাত ধরলাম। জয়ী একমনে কিন্তু কুটনো কুটে যাচ্ছে। জয়ী আমার দিকে না তাকিয়ে বলল, ‘’ হাতটা ছাড়! সব ছেলেরাই এক।‘’
জয়ীর হাতটা আরও শক্ত করে ধরলাম। এইবারে জয়ী তাকাল। চোখের কোণে এখনও অজস্র অভিমান। বললাম, ‘’ কী হয়েছে?’’ জয়ী বলল, ‘’ কিছু না! কাজ করতে দে।‘’
‘’ তোমাকে জাপটে ধরতে ইচ্ছে করছে।‘’
‘’ বল, তোমার শরীরকে! আমাকে নয়।‘’ অভিমানের সুর আরও স্পষ্ট হচ্ছে ।
‘’ তোমাকে বড্ড ভালবাসি।‘’
‘’ বল আমার শরীরকে।‘’
এরপরে জয়ীকে আর কিছু বলার অবকাশ দিইনি। জয়ীর অব্যক্ত ঠোঁটের যে কলতান, তা এক নিঃশ্বাসে হজম করে নিয়েছি। ওকে জাপটে ধরেছি একটা বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসের মতো। যে শরীর ক্রমে ক্রমে ক্ষয়ে যাচ্ছিল, সেই শরীরকে আবার সবুজে ভরিয়ে দিয়েছি। যে বুকের ভাঁজ গভীরতা হারিয়েছিল, তাকে আরও গভীর করে দিয়েছি। নাভির ওপরে এঁকে দিয়েছি অজস্র জলপ্রপাত। একটা শিহরণ জাগানো শরীরকে আরও শিহরিত
করে তুলেছি। যে পায়ের নুপুরের আওয়াজ আমাকে ডাকত, সেই পায়ের স্পর্শ আমাকে পাগল করে দিয়েছে।
বেলা গড়িয়ে এসেছে। ঘড়িতে দুপুর একটা। জয়ীর চোখে একটা অন্য নেশা দেখতে পেলাম। জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ এখনও কী বলবে আমি তোমার শরীরকে ভালবাসি ?’’ জয়ী কিছু বলল না। শুধু আমাকে জড়িয়ে ধরল । আমিও উত্তরটা পেয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ বাদে জয়ী বলল, ‘’ এটা কিন্তু ঠিক নয়। সমাজের চোখে এখনও আমরা অবৈধ! কোর্ট যাই বলুক, আমাদের ভালবাসার কোনও ভবিষ্যৎ নেই।‘’
‘’ জানি! আমাদের চিরকাল
গোপনেই থাকতে হবে।‘’
‘’ কিন্তু এইভাবে আমাদের সম্পর্কটা বাঁচিয়ে রেখে কী লাভ ?’’
‘’ জানি না! তবে বিবাহ বহির্ভূত
প্রেম করলেই তুমি অন্য কাউকে ঠকাচ্ছ, এমনটাও নয়। সবটাই বিশ্বাস! কোনওদিন কারুর বিশ্বাস ভেঙ না। জয়ী আর কিছু বলল না! শুধু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন