সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কৌশিকের বাড়ির ছাদ থেকে যে কদম গাছটা দেখা যেত, যেখানে রাত হলেই ভিড় করত জোনাকির দল, তারাও আজ নিরুদ্দেশে।




ডিসেম্বরের চিঠি- আদিত্য

জ’এ জয়ী,

বাড়িটা এখন প্রায় খালি। সমস্ত কোলাহল উধাও হয়েছে। উধাও হয়েছে ঝগড়া। নোংরা ফেলার গাড়িটা এখনও বাঁশি বাজায় সকালে, কিন্তু কোথাও যেন হারিয়ে গেছে সেই ব্যস্ততা। পাশের বাড়ির দম্পতিও হঠাৎ চুপ হয়ে গেছে। গলিতে আর অবাঙালী ছেলেদের আড্ডা বসে না। কৌশিকের বাড়ির ছাদ থেকে যে কদম গাছটা দেখা যেত, যেখানে রাত হলেই ভিড় করত জোনাকির দল, তারাও আজ নিরুদ্দেশে। যে উঠোনে আমরা সময় পেলেই একে অন্যকে একটু ছুঁয়ে দেখতাম, সেই উঠোনও আজ শান্ত হয়ে গেছে। দুপুরে যে কাকটা এসে বারবার ডাকত, সেও আজ কোথায় পালিয়ে গেছে। 

পাল্টে গেছে আমার রোজনামচা। সাপ্তাহিক সাতকাহনে বয়স বেড়েছে সেই ছোট্ট মেয়েটার, যে আগে সারাদিন দৌড়ে বেড়াত এই উঠোনে। হ্যাঁ, এটা সেই ডিসেম্বর। এটাই সেই প্রেমের মাস। বাঙালীর সবচেয়ে প্রিয় সময়।

আগের বছরও ঠিক এই সময়ে যার জন্য মন ব্যাকুল থাকত, এখন সে এই শহর ছেড়ে পালিয়েছে। শুধু রেখে গেছে তার গন্ধ। যেটা প্রতিদিন আমাকে বলে, ‘’ভালবাসা কোনওদিন শেষ হয় না। ওটা বেঁচে থাকে অন্য কোনও ভাবে।‘’

জয়ী, আমরা কোনওদিনই কোনও অসম্ভবের দিকে এগোয়নি। আমরা একে অন্যকে পাবো না জেনেও ভালবেসেছি। এটার চেয়ে বড়ো আর কিছু হতে পারে না। আমরা তো চিরকালই আপেক্ষিক ছিলাম, লুকিয়ে ছিলাম। হয়ত এইভাবেই থাকব সারাজীবন। জয়ী, আমাদের মতো কত প্রেম এইভাবে বেঁচে থাকবে, কে জানে! কে জানে, একদিন হয়ত আমরা তাদের আদর্শ হয়ে উঠব।
জানো, তুমি যখন এড়িয়ে যাও তখন বড্ড কষ্ট হয়। তোমাকে বহুবার জিজ্ঞাসা করেও উত্তর পাইনি। তুমি আরও এড়িয়ে গেছো। কোনওদিন কোনও ভালবাসা শেষ করতে হলে, মুখের ওপর বলবে। এইভাবে এড়িয়ে যাওয়াটা কোনও সমস্যার সমাধান নয়। আর আমাকে যদি তোমার থেকে অনেক দূরে সরিয়ে দিতে চাও তাহলে বলব এমনিতেই আমরা উনিশ হাজার তিনশো বাইশ কিলোমিটার দূরে থাকি, আর কত দূরে যেতে চাও?

তোমাকে এইবার কেমন মনমরা লাগছিল, কী হয়েছে জয়ী? আমাকে কাছে পেয়ে কী করব বুঝে উঠতে পারছিলে না, নাকি অধ্যাপক হওয়ার পরীক্ষার চাপে তুমি সূক্ষ্ম হয়ে গেছো? বহুবার জিজ্ঞাসা করেছিলাম!

জানো, আইবুড়ো ভাতের দিন তোমাকে দেখে আমি কেমন যেন ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিলাম। কী করব, বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কিন্তু অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে ফেলি। শুধু তাই নয় বৌভাতের দিনও তুমি আমাকে এড়িয়ে গিয়েছিলে। আমি বহুবার তোমার কাছে আসতে চেয়েও...
তোমার বর আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল যে এই বিয়েতে তোমাদের একসঙ্গে একটাও ছবি নেই। যদিও সেটা আমার আর তোমার ছবি দেখার পর। তারপর যদিও তোমাদের ছবি তোলানোর উদ্যোগটা কিন্তু আমিই নিয়েছিলাম। তোমার বরটা বড্ড ভাল। আমার থেকে অনেক অনেক ভাল।

জয়ী, আমি যাই বলব সেটাই তোমার কাছে বোরিং লাগবে অথবা বাজে কথা বলে উড়িয়ে দেবে। এড়িয়ে যাওয়াটা কোনও সমস্যার সমাধান হতে পারে না। আমার চেয়ে দশ বছরের বড় তুমি, এটা তো তোমার বোঝা উচিত। আমিও আর ছেলেমানুষ নেই, তোমার কাছে এসে অনেকটা পরিণত হয়ে গেছি। আমিও জানি আমাদের সম্পর্কের কোনও মানে নেই, কোনও পরিণতি নেই। তাই বলে আমি তো তোমাকে এড়িয়ে যাই না। আমি চাই তুমি আমার আপন হয়ে থাক। একটু বেশি আপন। ব্যস,আর কিছু নেই। আর তুমি যে বন্ধু হওয়ার প্রস্তাব দাও,তার উত্তরে বলি, আমরা যদি বন্ধু না হতাম তাহলে একে অন্যকে ভালবাসতাম কীভাবে? জানি, তুমি এখন ব্যস্ত! তবুও একটু ভেবে দেখ, এড়িয়ে গেলে কি সমস্যার সমাধান হবে? তুমি ভাল থেকো জয়ী,বড্ড ভাল থেকো।

এই বাড়িটাও এখন মনমরা! সমস্ত কোলাহল উধাও হয়েছে। উধাও হয়েছে ঝগড়া। নোংরা ফেলার গাড়িটা এখনও বাঁশি বাজায় সকালে, কিন্তু কোথাও যেন হারিয়ে গেছে সেই ব্যস্ততা। পাশের বাড়ির দম্পতিও হঠাৎ চুপ হয়ে গেছে। গলিতে আর অবাঙালী ছেলেদের আড্ডা বসে না। 

কৌশিকের বাড়ির ছাদ থেকে যে কদম গাছটা দেখা যেত, যেখানে রাত হলেই ভিড় করত জোনাকির দল, তারাও আজ নিরুদ্দেশে। যে উঠোনে আমরা সময় পেলেই একে অন্যকে একটু ছুঁয়ে দেখতাম, সেই উঠোনও আজ শান্ত হয়ে গেছে। দুপুরে যে কাকটা এসে বারবার ডাকত, সেও আজ কোথায় পালিয়ে গেছে। পাল্টে গেছে আমার রোজনামচা। সাপ্তাহিক সাতকাহনে বয়স বেড়েছে সেই ছোট্ট মেয়েটার, যে আগে সারাদিন দৌড়ে বেড়াত এই উঠোনে। হ্যাঁ, এটা সেই ডিসেম্বর। এটাই সেই প্রেমের মাস......
                                                                                                                                   
                                                                                                                                  ইতি
                                                                                                                                  তোমার ভালবাসা      

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভূতে ভয় পেলেও, ‘ সেক্সি ভূত’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় পাননি সায়ন্তনী

টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ডেবিউ করে ফেললেন দক্ষিণী সিনেমায়। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি আটপৌরেকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই হোলিতে সিনেমাটি রিলিজ করার পর থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। যদিও তার কারণ, তিনি এই প্রথম একটি ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি ‘ সেক্সি’ ভূতের চরিত্রে এবং তাঁকে নিয়েই গল্পটা গড়ে উঠেছে।  সিনেমার নাম, ‘ চিকাটি গাডিলু চিঠাকোটুন্ডু’। তেলেগু সিনেমায় কাজ করে বেশ উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনী। এখানেই শেষ নয়, তেলেগু ইন্ড্রাস্টির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে । ইতিমধ্যে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গল্পটিতে দেখা যায় দুই যুগল জুটি ছুটি কাটাতে গিয়ে আটকে যায় একটি ভৌতিক বাড়িতে।  সেখানে তারা একটি সেক্সি ভূতের পাল্লায় পরে। তারপর গল্প আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেই।  সায়ন্তনী আটপৌরেকে জানালেন , ‘’ আমাকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজ করে এই সিনেমার ব্যাপারে জানিয়েছেন! তাঁদের আমার চরিত্রটাও ভাল লেগেছে।‘’ ‘’ আপনাকে কেউ যদি রিয়েল লাইকে সেক্সি বলেন, সেটা আপনি কীভাব...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

রোগ চিনে নেওয়ার বিভিন্ন উপায় বাতলে দিচ্ছেন ডাক্তার সোমনাথ বিশ্বাস

হৃদয়ঘটিত বিভিন্ন রোগের অশনিসংকেত বুঝবেন কী করে-( পর্ব ১) খাই খাই বাঙালির বুকে ব্যথা হবে না, এও কি সম্ভব? যুগে যুগে বাঙালি জাতি নিজেরাই ডাক্তারি করে মোটামুটি বুঝে নিয়েছে বুকে একটু-আধটু ব্যথা মানেই ওটা গ্যাসের সমস্যা। আসলে বাঙালি জাতি এটা মানতেই অস্বীকার করে যে বুকে ব্যথা হৃদয় ঘটিত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সেটা অনেক সময় হার্ট এট্যাক এর লক্ষণও হতে পারে। উঁহু, অযথা ভয় পাওয়ার জন্য নয় এই লেখা নয়। উপরন্তু এই লেখা শুধুমাত্র একটা প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তবে ডাক্তার বাবু বিশ্বাস মহাশয় কফি খেতে খেতে কহিলেন, " আধুনিক জীবনে আমি একটা স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করতে পারলে, বুকে হঠাৎ ব্যথা হলে একটা ইসিজি করিয়েও দেখতে পারি। আমরা যদি বুকে ব্যথা ব্যাপারটা চেপে যায় তাহলে আর কি আধুনিক হলাম, তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এত উন্নতি হয়ে লাভ কোথায়?" কফির কাপে চুমুক দিয়ে ডাক্তার বিশ্বাস আরও জানালেন যে, " আমাদের বুঝতে হবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেকটা এগিয়েছে, তার সঙ্গে আমাদেরও এগোতে হবে। বুকে ব্যথা মানেই গ্যাস এবং সঙ্গে সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ খাওয়া মানেই সমস্যার শেষ এটা ভাবা একদমই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।" একটু...