সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
 || লাইটার ||------dhrubo

বাস থেকে নেমে পরলাম। তখন রাত পৌনে বারোটা বেজে গেছে প্রায়। বৃষ্টি টা তখনও হয়েই চলছিল। শার্ট প্রায় ভিজে গেছে। আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে কাছে একটা দোকান দেখে শেড এর নীচে এসে আশ্রয় নিলাম। এখান থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ি প্রায় দশ মিনিট।
বৃষ্টিটা একটু থামলেই ছুটতে হবে এই ভেবে পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ধরাতে যাব, দেখি দেশলাইটা পুরো ভিজে গেছে। একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম ।
এদিকে ওদিকে তাকাতেই হঠাৎ দেখি একটা লম্বা মতন ছেলে আমার দিকেই এগিয়ে আসছে।
সামনে আসতেই আমি অবাক হয়ে বললাম,সেকি, অনিমেষ না তুই???
ও হেসে বললো চিনতে পেরেছিস তাহলে??
অনিমেষ আর আমি কলেজ ফ্রেন্ড ছিলাম। ওর আর আমার ডিপার্টমেন্ট আলাদা ছিল, তবে একদিন কলেজ ক্যান্টিনে ওর সাথে আমার প্রথম আলাপ হয়েছিল।
সিগারেট জ্বালাতে আমার লাইটার টা দিয়েছিলাম। সেই থেকে বন্ধুত্ব। ক্লাস বাঙ্ক  করে একসাথে সিনেমা দেখা, বাওয়াল দেওয়া সবই মনে পরে যাচ্ছিল তখন।  প্রায় আট বছর পেরিয়ে গিয়েছে ।
সবাই কাজে ব্যস্ত হয়ে পরায় প্রায় তিন বছর আমাদের মধ্যে কোন যোগাযোগই ছিল না।
এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ ও হেসে বলল - তুই একই রকম আছিস ভাই, একটুও বদলাশ নি।
আমি বললাম, আজকে তোকে ছাড়ছি না। সামনেই আমার ঘর, চল। ও পকেটে থেকে লাইটার টা বের করে, আমাকে একটা সিগারেট দিয়ে, আমার সিগারেট টা  ধরিয়ে দিয়ে, ওর সিগারেট টা ধরাল।
ধোঁয়া টা ছেড়ে বলল,একদিন তুই আমাকে লাইটার দিয়েছিলি, আজকে আমার পালা ছিল।
আমি হেসে বললাম ভাই এত রাতে তুই না এলে আমার আজকে সিগারেট ফোকাটাই হতো না।
তবে আজকে তোকে ছাড়ব না, দশ মিনিট এখান থেকে আমার ঘর, চল। ও আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, ভাই ঘরে ফিরতেই হবে আজকে, কাল আমার একটা মিটিং আছে, কিছু পিপিটি ফাইল বানাতে হবে, অনেক কাজ আছে রে। আজকে এইদিকে একটা কাজ ছিল, তোকে রাস্তার ওপার থেকে দেখে কথা বলতে চলে আসলাম। তবে আসব একদিন কথা দিচ্ছি।
বৃষ্টিটা ততক্ষণে কমে গেছে, একটা সাদা উবের আসতেই ও গাড়িতে উঠে যেতে যেতে ওর এখনকার ফোন নাম্বার টা দিল, আমি বললাম পৌঁছে একটা কল করিস। টাটা দেখাতেই উবের ছেড়ে দিল। আমি বাড়িতে এসে ডিনার টা সেরে, ভাবলাম অনিমেষকে একটা কল করি।
ফোন ডায়াল করলাম, বেশ কয়েক বার রিং হবার পর ওপাশ থেকে একটা বয়স্ক গলা ভেসে এল।
আমি বললাম আপনি কে? এটা অনিমেষ এর নাম্বার তো??
ওপাশ এর ভদ্রলোক বললেন, আমি অনিমেষ এর বাবা, ওর নাম্বার টা এখন আমি ইউস করি।
আমি ভদ্রলোক কে থামিয়ে দিয়ে বললাম, কাকু এত রাতে ফোন করার জন্য সরি। আসলে অনিমেষ এর সাথে একটু আগে দেখা হয়েছিল। বাড়ি পৌঁছে গেছে কিনা জানতে ফোন করলাম।
ওপাশ এর ভদ্রলোক বললেন, ভাই তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে - আমার ছেলে গত দুবছর আগে অ্যাকসিডেন্ট এ মারা গেছে। বলেই রং নাম্বার বলে কেটে দিলেন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

"যোগাসনের বিকল্প কিছু নেই" :শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায়

  আজকাল সুস্থ থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকি। ইদানীং কালে খুব কম বয়সে হৃদরোগের কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে আরও জটিল প্রাণঘাতী রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। প্রতিদিন সময়ের তালে ছুটে চলার তাগিদে আমাদের জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। আর এই কঠিন সময়ে শরীরচর্চার যে সময়টুকু পাওয়া যায়, আমরা অনেকেই জিমে গিয়ে ভারী ভারী লোহালক্কর তুলে থাকি আবার অনেকেই ভোরবেলা হেঁটে থাকেন। প্রাচীন কাল থেকে যোগঅভ্যাস আর প্রাণায়ামের সুখ্যাতি আছে। অনেকেই অভ্যাস করে থাকেন। অনেকের জীবনে   বদলে দিয়েছে যোগঅভ্যাস। তবে জিম না যোগঅভ্যাস এই নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক আছে। নাকি শুধুমাত্র হাঁটলেই মিলবে অনেক রোগ থেকে মুক্তি? তর্ক চলবেই। অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক পরামর্শ দিয়েই থাকেন তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে যোগঅভ্যাসের একটা বিরাট প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশেষত একটা সময় বয়স্করা প্রতিনিয়ত যোগঅভ্যাস করে থাকলেও ইদানীং সববয়সীদের মধ্যে এই প্রচলন দেখা যাচ্ছে। যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে জানালেন যে," যোগব্যায়ামের বিকল্প কিছু নেই। প্রাণায়াম এবং যোগব্যায়াম একজন মানুষকে সম্পূর্নরূপে বদলে দিত...

শীতের শহরে পারদ বাড়িয়ে দিলেন সায়ন্তনী, কালো পোশাকে ছড়িয়ে দিলেন মায়া

  শীতের ছুটিতে ছুটি কাটিয়ে ফিরলেন অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা। দক্ষিণ গোয়াতে জলকেলি করলেন উষ্ণতার সঙ্গে।  তাঁর কালো পোশাক পরিহিত ছবি মায়া ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। এই শীতে তাঁর উষ্ণ ছবি শহর কলকাতার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছে।  তাঁর এই গোটা ভ্রমণ স্পন্সর করেছিল ফার্ন হোটেল এবং ক্লিয়ারট্রিপ।  তাঁর ঝুলিতে একের পর এক হিট ছবির সারি। 'সমান্তরাল', 'উমা', 'এক যে ছিল রাজা'  কিংবা 'লালবাজার' মতো ওয়েব সিরিজে তাঁর সাহসী অভিনয় দর্শকদের কাছে তাঁর চাওয়া-পাওয়াটা বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু বড় পর্দায় নয়, ছোট পর্দায় 'কিরণমালা', 'জয়ী', 'সাত ভাই চম্পা'-এর মতো কাজ দর্শক আজও মনে রেখেছে। তিনি আগের চেয়ে অনেক পরিণত, অনেক বেশি কাজ নিয়ে বদ্ধপরিকর। অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা এখন শুধুমাত্র ভাল কাজের জন্য মুখিয়ে আছেন। মুখিয়ে আছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে সুপারহিট কাজ দিতে। শুধু বাংলা কেন, বাংলা ছাড়াও বাকি ইন্ডাস্ট্রি যেমন হিন্দি কিংবা সাউথ ইন্ডাস্ট্রিতেও ভাল চরিত্রে কাজ করতে  তিনি প্রস্তুত। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে মায়া - এর মতো হিট বাংলা ছবি।  ত্রিভুজ রিলিজ করতে চলেছে আর কিছু...

রোগ চিনে নেওয়ার বিভিন্ন উপায় বাতলে দিচ্ছেন ডাক্তার সোমনাথ বিশ্বাস

হৃদয়ঘটিত বিভিন্ন রোগের অশনিসংকেত বুঝবেন কী করে-( পর্ব ১) খাই খাই বাঙালির বুকে ব্যথা হবে না, এও কি সম্ভব? যুগে যুগে বাঙালি জাতি নিজেরাই ডাক্তারি করে মোটামুটি বুঝে নিয়েছে বুকে একটু-আধটু ব্যথা মানেই ওটা গ্যাসের সমস্যা। আসলে বাঙালি জাতি এটা মানতেই অস্বীকার করে যে বুকে ব্যথা হৃদয় ঘটিত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সেটা অনেক সময় হার্ট এট্যাক এর লক্ষণও হতে পারে। উঁহু, অযথা ভয় পাওয়ার জন্য নয় এই লেখা নয়। উপরন্তু এই লেখা শুধুমাত্র একটা প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তবে ডাক্তার বাবু বিশ্বাস মহাশয় কফি খেতে খেতে কহিলেন, " আধুনিক জীবনে আমি একটা স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করতে পারলে, বুকে হঠাৎ ব্যথা হলে একটা ইসিজি করিয়েও দেখতে পারি। আমরা যদি বুকে ব্যথা ব্যাপারটা চেপে যায় তাহলে আর কি আধুনিক হলাম, তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এত উন্নতি হয়ে লাভ কোথায়?" কফির কাপে চুমুক দিয়ে ডাক্তার বিশ্বাস আরও জানালেন যে, " আমাদের বুঝতে হবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেকটা এগিয়েছে, তার সঙ্গে আমাদেরও এগোতে হবে। বুকে ব্যথা মানেই গ্যাস এবং সঙ্গে সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ খাওয়া মানেই সমস্যার শেষ এটা ভাবা একদমই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।" একটু...