সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

এ হৃদয় তো মানুষের পাশে থাকার জন্যই চিরকালীন, আর কিছু নেই তো।


 ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চে তাঁর বক্তব্য ছাপ ফেলে দিয়েছে। মিডিয়া হুমড়ি খেয়ে পড়েছে তাঁর দিকে। তিনি কে? কে এই নবাগতা? তাঁর ভাষণে সবাই অন্তত একবার তাঁর দিকে চেয়ে থেকেছে। অন্তত একবার হলেও ফেসবুকে খুঁজতে চেয়েছে তাঁর নাম। প্রেসিডেন্সির এই প্রাক্তনী এখন লাইম লাইটে। হয়ত রাজনৈতিক জীবনের প্রথম ম্যাটিনি শো'-এর গুড ফ্রাইডে। তেইশের একুশের জুলাই কেটে গিয়েছে, সপ্তাহ পার হয়ে গিয়েছে। তবুও তাঁকে নিয়ে চর্চা থামছে না। রাজন্যা হালদার এখন তৃণমূলের নবাগতাদের মধ্যে অন্যতম। বতর্মানে তিনি দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতির দায়িত্বে আছেন। যদিও এত কথা বলার আগে একটা কথা জানিয়ে রাখা ভাল, এর আগেও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আন্দোলনে তিনি লাইম লাইটে এসেছিলেন। যদিও তখন তাঁকে এত নেগেটিভ পাবলিসিটি পেতে হয়নি। 


"জুলমি জব জব জুলুম করেগা, সত্যা কি...'' এই স্লোগান যখন একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে রাজন্যা গলা ছেড়ে বলছে তখন লাখ লাখ মানুষ মুগ্ধ হয়ে শুনছে। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে এমনটা করার সৌভাগ্য সবার জোটে না। রাজন্যা হয়ত সোনার কাঠি ছুঁয়েই এসেছে! বিশে জুলাই যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিকেলে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ পরিদর্শনে এলেন তখন একদল যুবক যুবতী তাঁকে সামনে গোল করে বসেছিলেন। সেই দলেই ছিলেন রাজন্যা এবং তখনই নাকি তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন আগামীকালে বক্তব্য রাখতে। তাঁর কথায়, " আমি তাঁর আগে অবধি কিছুই জানতাম না। তিনি সেদিন বিকেলে আমাকে বললেন যে আগামীকাল মঞ্চে আমাকে বক্তব্য রাখতে!" 

অনেক বিরোধী দলের নেতানেত্রীরাই রাজন্যার এই বক্তব্য নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন। অনেকেই মিডিয়ার সামনে বলেছেন, এটি চুরি করা স্লোগান। অনেক মিম পেজ এটি শেয়ার করে অনেক কথা লিখেছে। এই নিয়ে রাজন্যা কে জিজ্ঞাসা করাতে তিনি বললেন, " স্লোগাম কখনও কারুর একার নয়। এটি স্বাধীনতার স্লোগান। সেটিকে আমি আমার মতো করে ব্যবহার করেছি। ক্ষতি কী?" লাভ-ক্ষতির অঙ্ক আমি এখানে করতে বসব না। তবে যাই হোক একটা কথা তো মানতে হবে, সবাই এই বিষয়টা নিয়ে চর্চা করছে। এটাই বা কম কী? হোক না নেগেটিভ, তাতেও তো কোনও অসুবিধে নেই। অন্তত নব প্রজন্ম তো দেখছে। দেখছে তাদের মতো কেউ একটি রাজনৈতিক মঞ্চে তেড়ে বক্তৃতা দিচ্ছে। 


রাজনৈতিক পরিবারের মেয়ে রাজন্যা ছোট থেকে রাজনীতি দেখে বড় হয়েছে। তাই রাজনীতির আঙ্গিনায় তার নতুন করে পা রাখার কিছু নেই। তবুও ২০১৭ সাল থেকে তিনি ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। প্রেসিডেন্সিতে প্রথমবার নির্দল হয়ে দাঁড়ানো এবং জয়ী হয়ে আসা। তবে তাঁর কথায়, " আমি নির্দল হয়ে দাঁড়ালেও তৃণমূল সমর্থিত ছিলাম।" তার জন্য হয়ত রাজনীতিতে আসা সহজ ছিল, তবে আজকালকার যুব সমাজ কতটা মানুষের পাশে থাকার জন্য রাজনীতিতে আসে বা আসার কথা ভাবে সেটা নিয়ে একটা বিস্তর তর্ক হতে পারে কিংবা রাজন্যার কথায়, " মানুষের পাশে থাকার জন্য রাজনীতি করি, আরও একটা ভাল সমাজ গড়ার জন্য রাজনীতি করি।" পাল্টা জিজ্ঞাসা করলাম, " তোমার রাজনীতি করার লক্ষ্য কি ক্ষমতার আশেপাশে থাকা নাকি অন্যকিছু?" রাজন্যা হেসে উত্তর দিলেন, " ক্ষমতা ? আমি ঠিক বুঝলাম না। আমি তো মানুষের পাশে থাকার জন্য রাজনীতি করি।" মনে হলো সেই ছোটবেলায় শিখিয়ে দেওয়া গুরুমশাইয়ের বুলি আওড়াচ্ছে রাজন্যা। 


কথা যত এগোচ্ছে, বুঝতে পারছি রাজন্যা প্রচন্ড ব্যস্ত। আগামী আগস্ট মাসের কিছু কর্মসূচি নিয়ে অনলাইনেই মিটিং সারছে। শুধু তাই নয়, রাজন্যা বড্ড পরিণত। মেপে কথা বলছে। যেন লক্ষণরেখা পার না করে ফেলে। শুনে মনে হবে যেন কেউ রেকর্ড প্লেয়ার বাজাচ্ছে। তবুও শ্রেয়। যে ক্রাইইসি কাটিয়ে শাসক দল আবার ছন্দে ফিরছে, সেখানে হয়ত এটাই ওপর মহলের নির্দেশ! কে জানে গোপন কথা, তবে রাজন্যার শিক্ষকতা করার ইচ্ছে থাকলেও তিনি রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চান না। তার কথায়, " আগামীকাল কী হবে জানি না।শিক্ষাকতা করব নাকি রাজনীতি সেটা সময়ই বলবে।"  


জিজ্ঞাসা করলাম, " প্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়?" তিনি সপাটে বললেন, " অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এই প্রশ্নটা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।" আবারও মেপে কথা। একদম লাইন বাই লাইন যাওয়া। 

দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার মেয়ে রাজন্যা কিছুদিন আগেই এনগেজমেন্ট সেরেছেন। মিছিলে মিছিলে প্রেম এবং সেখান থেকেই গল্প গড়িয়েছে বহুদূর। ঠিক যেরকম সিনেমায় দেখে থাকি। আগামী বছর লোকসভা ভোট। সেই ভোট নিয়েও তিনি বেশ আশাবাদী। তাঁর কথায়, " আগামী লোকসভা ভোটে আমরা একটি অভূতপূর্ব ফলাফল করব। দিদির নেতৃত্বে আবার পরিবর্তন আসবে।"

(সাক্ষাৎকার- আদিত্য ঘোষ

ছবি- রাজন্যা হালদারের থেকে সংগৃহীত)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

"যোগাসনের বিকল্প কিছু নেই" :শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায়

  আজকাল সুস্থ থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকি। ইদানীং কালে খুব কম বয়সে হৃদরোগের কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে আরও জটিল প্রাণঘাতী রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। প্রতিদিন সময়ের তালে ছুটে চলার তাগিদে আমাদের জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। আর এই কঠিন সময়ে শরীরচর্চার যে সময়টুকু পাওয়া যায়, আমরা অনেকেই জিমে গিয়ে ভারী ভারী লোহালক্কর তুলে থাকি আবার অনেকেই ভোরবেলা হেঁটে থাকেন। প্রাচীন কাল থেকে যোগঅভ্যাস আর প্রাণায়ামের সুখ্যাতি আছে। অনেকেই অভ্যাস করে থাকেন। অনেকের জীবনে   বদলে দিয়েছে যোগঅভ্যাস। তবে জিম না যোগঅভ্যাস এই নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক আছে। নাকি শুধুমাত্র হাঁটলেই মিলবে অনেক রোগ থেকে মুক্তি? তর্ক চলবেই। অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক পরামর্শ দিয়েই থাকেন তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে যোগঅভ্যাসের একটা বিরাট প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশেষত একটা সময় বয়স্করা প্রতিনিয়ত যোগঅভ্যাস করে থাকলেও ইদানীং সববয়সীদের মধ্যে এই প্রচলন দেখা যাচ্ছে। যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে জানালেন যে," যোগব্যায়ামের বিকল্প কিছু নেই। প্রাণায়াম এবং যোগব্যায়াম একজন মানুষকে সম্পূর্নরূপে বদলে দিত...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

শীতের শহরে পারদ বাড়িয়ে দিলেন সায়ন্তনী, কালো পোশাকে ছড়িয়ে দিলেন মায়া

  শীতের ছুটিতে ছুটি কাটিয়ে ফিরলেন অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা। দক্ষিণ গোয়াতে জলকেলি করলেন উষ্ণতার সঙ্গে।  তাঁর কালো পোশাক পরিহিত ছবি মায়া ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। এই শীতে তাঁর উষ্ণ ছবি শহর কলকাতার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছে।  তাঁর এই গোটা ভ্রমণ স্পন্সর করেছিল ফার্ন হোটেল এবং ক্লিয়ারট্রিপ।  তাঁর ঝুলিতে একের পর এক হিট ছবির সারি। 'সমান্তরাল', 'উমা', 'এক যে ছিল রাজা'  কিংবা 'লালবাজার' মতো ওয়েব সিরিজে তাঁর সাহসী অভিনয় দর্শকদের কাছে তাঁর চাওয়া-পাওয়াটা বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু বড় পর্দায় নয়, ছোট পর্দায় 'কিরণমালা', 'জয়ী', 'সাত ভাই চম্পা'-এর মতো কাজ দর্শক আজও মনে রেখেছে। তিনি আগের চেয়ে অনেক পরিণত, অনেক বেশি কাজ নিয়ে বদ্ধপরিকর। অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা এখন শুধুমাত্র ভাল কাজের জন্য মুখিয়ে আছেন। মুখিয়ে আছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে সুপারহিট কাজ দিতে। শুধু বাংলা কেন, বাংলা ছাড়াও বাকি ইন্ডাস্ট্রি যেমন হিন্দি কিংবা সাউথ ইন্ডাস্ট্রিতেও ভাল চরিত্রে কাজ করতে  তিনি প্রস্তুত। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে মায়া - এর মতো হিট বাংলা ছবি।  ত্রিভুজ রিলিজ করতে চলেছে আর কিছু...