সিলভার স্ক্রিনে তাঁর হাতেখড়ি সদ্য। অগ্নিমন্থন সিনেমা তাঁর স্বপ্নের উড়ানের প্রথম সিঁড়ি, তবুও নির্ভিক অশ্নি। নিজের লক্ষ্যে অবিচল, ভাল কাজ করে যাওয়ার তাগিদ তাঁর সর্বাঙ্গে। ইদানীং একটি বাংলা ধারাবাহিকে কাজ করছেন অভিনেত্রী অশ্নি দাস। ধারাবাহিকের নাম নায়িকা নম্বর ১। চরিত্রের নাম মনিকা। অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসা করলাম," কেরিয়ারের প্রথম ধারাবাহিক, কেমন অভিজ্ঞতা?" তিনি জানালেন," অভিজ্ঞতা বেশ ভালই। এই ইউনিটে আমিই সবচেয়ে জুনিয়র, তাই অনেককিছু শিখতে পারছি।" কয়েক মাস আগেই মুক্তি পেয়েছে অশ্নি দাস অভিনীত ছবি অগ্নিমন্থন। প্রবীর রায় পরিচালিত ছবি অগ্নিমন্থন সমাজের বুকে কতটা দাগ কাটতে পেরেছে, সেটা নয় দর্শকেরা ঠিক করবে তবে অশ্নির যে অভিনয়ের প্রতি প্রেম এবং ভালবাসা সেটা কিন্তু এই অগ্নিমন্থন থেকেই। তিনি নির্দ্বিধায় বললেন, " এর আগে আমার ক্যামেরা বা অভিনয়ে সঙ্গে কোনও যোগ ছিল না। তবে এই সিনেমাটা করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। প্রতিনিয়ত ওয়ার্ক শপ করতে গিয়ে, অভিনয়ের প্রতি টানটা এসে গিয়েছে।"
জিজ্ঞাসা করলাম, " ধারাবাহিক করার চেয়ে কি সিনেমা করা সোজা?" অভিনেত্রী হাসতে হাসতে বললেন, " কোনওটাই সোজা নয়। আসলে সাফল্যের সিঁড়িটা সবসময় কঠিন। আর আমি নিজেকে তৈরি রাখি যে কোনও অভিনয় মাধ্যমে কাজ করার জন্য। সেটা সিরিয়াল হতে পারে, সিনেমা হতে পারে কিংবা ওয়েব সিরিজ হতে পারে। শুধু তাই নয় বিজ্ঞাপনের ছবিতেও কাজ করতে চাই।"
কিছুদিনের মধ্যেই অভিনেত্রীর অভিনীত দ্বিতীয় সিনেমা 'মাস্টারমশাই আপনি কিছু দেখেননি' রিলিজের মুখে। শিলাদিত্য মৌলিকের পরিচালিত এই সিনেমার মূল বিষয় কলেজ জীবন এবং ছাত্র রাজনীতি নিয়ে। এই সিনেমায় তিথি নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ওনার চরিত্র সম্বন্ধে জানতে চাইলে তিনি বললেন, " মূলত কলেজ জীবনের ছাত্র রাজনীতির ওপর তৈরি হয়েছে এই সিনেমাটি। সিনেমাটা করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।" একটু থেমে তিনি আরও জানালেন, " প্রতিটা নতুন চরিত্র আমার কাছে প্রতিদিন নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়, সেটা সফলভাবে ফুটিয়ে তোলাই আমার লক্ষ্য।"
অভিনেত্রীকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, " কলকাতার বাইরে কি কাজ করতে ইচ্ছুক?" অশ্নি জানালেন, " নিশ্চয়। আমি যে কোনও ভাষাতে, যে কোনও চরিত্রে কাজ করতে ইচ্ছুক। আসল কথাটা হলো কাজ করে যাওয়া।" আবারও জিজ্ঞাসা করলাম, " শোনা যায় কলকাতায় নাকি কাজ করতে গেলে অনেক পলিটিক্স সহ্য করতে হয়, অনেকে বলে কলকাতায় নাকি প্রচুর লবি, কী বলবে?" অশ্নি হাসতে হাসতে বললেন, " তাই বুঝি? আমি যদিও ওইসবের তোয়াক্কা করি না। ভাল কাজ করলে তোমাকে কোনও কিছুর ওপর নির্ভর করতে হবে না।"
প্রত্যেকটা প্রশ্ন যেন একদম স্ট্রেট ড্রাইভের মতো বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে রশ্নি একটা তৃপ্তির হাসি হাসল। মনে হলো প্রতি শুক্রবার যেন লাইম লাইটের নীচে তিনিই থাকবেন। প্রতিটা পোস্টারে শুধু তারই জৌলুস, তারই সুগন্ধ ছড়িয়ে থাকবে মাল্টিপ্লেক্স জুড়ে। স্বপ্ন দেখতে কে না ভালবাসে, আর স্বপ্ন না দেখলে কেউই তো সেই স্বপ্নকে ধরতে পাওয়ার চেষ্টা করবে না। তাই অস্নির মতো বিমানসেবিকা না হয়েও আকাশে উড়ার স্বপ্ন যে অভিনেত্রী হয়ে দেখা যায় সেটাই এখন উজ্জ্বল।
জিজ্ঞাসা করলাম, " অভিনয়ে চরিত্রের প্রয়োজনে বোল্ড হতে পারবে?" অশ্নি জানালেন, " হ্যাঁ, চরিত্রের প্রয়োজনে আমি অন্তরঙ্গ দৃশ্য করতেও রাজি।" আবারও জিজ্ঞাসা করলাম, " শরীর নিয়ে কোনও ছুঁটমার্গ নেই?" তিনি বললেন, " একদম নেই। অভিনয়ের প্রয়োজনে আমি সবটুকু এক্সপ্লোর করতে প্রস্তুত।" একটু ভেবে তিনি আরও জানালেন যে, " অবশ্যই সেই দৃশ্যটা যেন গল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকে।" অশ্নির মতো সোজাসাপটা এবং ভাল কাজ করে যাওয়ার তাগিদ খুব স্পট ভাবেই বুঝিয়ে দেয় যে একদিন তিনি ঠিক লাইম লাইটের নীচে আসবেন। এখন শুধু অপেক্ষা ভাল কাজ পাওয়ার।
(সাক্ষাৎকার- আদিত্য ঘোষ
ছবি- সংগৃহীত)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন