সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"আসলে ইচ্ছেটাই সব। "


ইচ্ছে থাকলে সব হয়। হ্যাঁ এই ছোট্ট কথাটাই যাঁরা নিজের জীবনের মন্ত্র করে নিয়েছেন, তাঁদের কেউ আটকাতে পারিনি। ফটোগ্রাফার তথাগত ঘোষ সেই ইচ্ছে শক্তির জলন্ত উদাহরণ। এই মুহূর্তে কলকাতার অন্যতম সেলিব্রিটি ফটোগ্রাফার তথাগত। ফ্যাশন ফটোগ্রাফির জগতে এই মুহূর্তে তিনি ইয়ং জেনারেশনের মাইলস্টোন। একটুকুও বাড়িয়ে বলছি না। কলকাতার আনাচে-কানাচে একটু কান পাতলে তথাগত ঘোষের সুনাম ঠিক পেয়ে যাবেন। 

যদিও চিত্রগ্রাহক ঘোষ বাবু এইসব নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবিত নন। তাঁর কথায়," এখন অনেক কাজ বাকি। আরও আরও কাজ করে যেতে হবে। আর ভাল-খারাপের ব্যাপারটা তো আমার কাজই বলবে।" 

এই মুহূর্তে কলকাতার এহেন কেউ নেই যিনি ফ্যাশন ফটোগ্রাফিতে তথাগত ঘোষের নাম শোনেনি। যদিও এই জার্নিটা সহজ ছিল না। তথাগত আটপৌরেকে জানালেন যে," আমি খুব ছোট থেকেই ক্যামেরা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতাম। একটা খিদে ছিল যে ছবি তোলাটা শিখতে হবে। শিখতেই হবে। পুরো ব্যাপারটা জানতে হবে। যখনই সময় পেয়েছি, তখনই ছবি তোলা নিয়ে মেতে থাকতাম। নিজের মতো ব্যাপারগুলোকে ভাবতাম।"


তথাগত ঘোষ আজ পর্যন্ত বহু নামীদামী কোম্পানির সঙ্গে কাজ করেছেন। দেশি-বিদেশি বহু বিজ্ঞাপন, ফ্যাশন ফটোগ্রাফি, এমনকি নিজের এক্সিবিশনও করেছেন। ২০১৯ সালে তাঁর একটি ফটোগ্রাফি সিরিজ, 'এওয়েটিং' বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। প্রচুর মানুষের প্রশংসার পাত্র হয়েছিলেন তিনি। তবে তাঁর কথায় এই জার্নিটার পিছনে রয়েছে প্রচুর পরিশ্রম, " আমি তখন ব্যাঙ্গালোরে ইঞ্জিয়ারিং পড়ছি। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে তরুণ সালঙ্কির থেকে ফটোগ্রাফির কাজও শিখছি। মাঝে মাঝে প্রচুর রাত অবধি কাজ করে আবার সকালে উঠে কলেজও গিয়েছি। শহরের একপ্রান্তে কলেজ আর অপর প্রান্তে আমার কাজ শেখার জায়গা। কখনও কখনও কাজ শুরুর আগেই পৌঁছে যেতাম। আমি খুব ভালভাবে লক্ষ্য করতাম তরুণ স্যার কীভাবে পুরো ব্যাপারটা ডিল করেন। খুব কাছ থেকে লক্ষ্য করতাম সবকিছু। এমনকি কখনও কখনও বাগানে জলও দিতাম আরও একটু সময় থাকার জন্য।"


জিজ্ঞাসা করলাম, " কখনও মনে হয়নি যে পড়াশুনা শেষ করে একটা আইটি ফার্মে চাকরি করলে আরও নিরাপদ একটা জীবন পেতে?" তিনি হাসতে হাসতো উত্তর দিলেন, " আসলে ইচ্ছেটাই সব। আমি একটা সময় ভেবেই নিয়েছিলাম যে ফটোগ্রাফিটাই করতে হবে এবং সেটাই করেছি। আর সবকিছুতেই তো ইনসিকিউরিটি আছে। তবে হ্যাঁ আমার ফ্যামিলি সবসময় আমাকে ফুল সাপোর্ট করেছে।" আবারও জিজ্ঞাসা করলাম, " কখনও মনে হয়নি যে ফটোগ্রাফি আর নয়! এবার অন্যকিছু? তিনি আবারও বললেন ," অনেক সময় লোকে এমনও বলেছে তুমি কাজটা কি করো? তাও আমি তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে ছবি তোলাটাই আমার নেশা এবং পেশা। তবুও আমি পিছু হটিনি।"




তথাগত ঘোষের কলকাতার সঙ্গে একটা অমোঘ টান আছে। ব্রাজিল ভক্ত এই ছেলেটি সবসময় মনে করে বাংলা কিছু থেকে পিছিয়ে নেয়। এখানেও ভাল কাজ হয়। এখানেও ভাল কাজের দাম আছে। তবে তাঁর কথায়, " ফটোগ্রাফি নিয়ে আরও সেচতন হতে হবে। এটাও যে একজন মানুষের প্রফেশন হতে পারে সেটাও বুঝতে হবে। তবে তাঁর আগে দরকার ফটোগ্রাফি ভাল করে জানার। একটা গভীর পড়াশুনার প্রয়োজন।"


জিজ্ঞাসা করলাম, " কোনওদিন সিনেমা বানানোর ইচ্ছে নেই।" একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে তথাগত বাবু জানালেন, " আছে। তবে তার আগে দরকার একটা ঠিকঠাক প্ল্যানিং-এর।" সবশেষে জিজ্ঞাসা করলাম, "এত সেলিব্রিটিদের ছবি তুলেছেন, তাঁদের মধ্যে আপনার কার ছবি তুললে সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে?" তিনি হাসতে হাসতে বললেন, " সব উত্তর আজকে দিয়ে দিলে পরবর্তী সাক্ষাৎকারের জন্য তো কিছুই থাকবে না।"

( সাক্ষাৎকার-আদিত্য ঘোষ

ছবি- সংগৃহীত)

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

"যোগাসনের বিকল্প কিছু নেই" :শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায়

  আজকাল সুস্থ থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকি। ইদানীং কালে খুব কম বয়সে হৃদরোগের কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে আরও জটিল প্রাণঘাতী রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। প্রতিদিন সময়ের তালে ছুটে চলার তাগিদে আমাদের জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। আর এই কঠিন সময়ে শরীরচর্চার যে সময়টুকু পাওয়া যায়, আমরা অনেকেই জিমে গিয়ে ভারী ভারী লোহালক্কর তুলে থাকি আবার অনেকেই ভোরবেলা হেঁটে থাকেন। প্রাচীন কাল থেকে যোগঅভ্যাস আর প্রাণায়ামের সুখ্যাতি আছে। অনেকেই অভ্যাস করে থাকেন। অনেকের জীবনে   বদলে দিয়েছে যোগঅভ্যাস। তবে জিম না যোগঅভ্যাস এই নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক আছে। নাকি শুধুমাত্র হাঁটলেই মিলবে অনেক রোগ থেকে মুক্তি? তর্ক চলবেই। অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক পরামর্শ দিয়েই থাকেন তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে যোগঅভ্যাসের একটা বিরাট প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশেষত একটা সময় বয়স্করা প্রতিনিয়ত যোগঅভ্যাস করে থাকলেও ইদানীং সববয়সীদের মধ্যে এই প্রচলন দেখা যাচ্ছে। যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ শিবগঙ্গা টিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায় আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে জানালেন যে," যোগব্যায়ামের বিকল্প কিছু নেই। প্রাণায়াম এবং যোগব্যায়াম একজন মানুষকে সম্পূর্নরূপে বদলে দিত...

শীতের শহরে পারদ বাড়িয়ে দিলেন সায়ন্তনী, কালো পোশাকে ছড়িয়ে দিলেন মায়া

  শীতের ছুটিতে ছুটি কাটিয়ে ফিরলেন অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা। দক্ষিণ গোয়াতে জলকেলি করলেন উষ্ণতার সঙ্গে।  তাঁর কালো পোশাক পরিহিত ছবি মায়া ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। এই শীতে তাঁর উষ্ণ ছবি শহর কলকাতার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছে।  তাঁর এই গোটা ভ্রমণ স্পন্সর করেছিল ফার্ন হোটেল এবং ক্লিয়ারট্রিপ।  তাঁর ঝুলিতে একের পর এক হিট ছবির সারি। 'সমান্তরাল', 'উমা', 'এক যে ছিল রাজা'  কিংবা 'লালবাজার' মতো ওয়েব সিরিজে তাঁর সাহসী অভিনয় দর্শকদের কাছে তাঁর চাওয়া-পাওয়াটা বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু বড় পর্দায় নয়, ছোট পর্দায় 'কিরণমালা', 'জয়ী', 'সাত ভাই চম্পা'-এর মতো কাজ দর্শক আজও মনে রেখেছে। তিনি আগের চেয়ে অনেক পরিণত, অনেক বেশি কাজ নিয়ে বদ্ধপরিকর। অভিনেত্রী সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা এখন শুধুমাত্র ভাল কাজের জন্য মুখিয়ে আছেন। মুখিয়ে আছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে সুপারহিট কাজ দিতে। শুধু বাংলা কেন, বাংলা ছাড়াও বাকি ইন্ডাস্ট্রি যেমন হিন্দি কিংবা সাউথ ইন্ডাস্ট্রিতেও ভাল চরিত্রে কাজ করতে  তিনি প্রস্তুত। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে মায়া - এর মতো হিট বাংলা ছবি।  ত্রিভুজ রিলিজ করতে চলেছে আর কিছু...

রোগ চিনে নেওয়ার বিভিন্ন উপায় বাতলে দিচ্ছেন ডাক্তার সোমনাথ বিশ্বাস

হৃদয়ঘটিত বিভিন্ন রোগের অশনিসংকেত বুঝবেন কী করে-( পর্ব ১) খাই খাই বাঙালির বুকে ব্যথা হবে না, এও কি সম্ভব? যুগে যুগে বাঙালি জাতি নিজেরাই ডাক্তারি করে মোটামুটি বুঝে নিয়েছে বুকে একটু-আধটু ব্যথা মানেই ওটা গ্যাসের সমস্যা। আসলে বাঙালি জাতি এটা মানতেই অস্বীকার করে যে বুকে ব্যথা হৃদয় ঘটিত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সেটা অনেক সময় হার্ট এট্যাক এর লক্ষণও হতে পারে। উঁহু, অযথা ভয় পাওয়ার জন্য নয় এই লেখা নয়। উপরন্তু এই লেখা শুধুমাত্র একটা প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তবে ডাক্তার বাবু বিশ্বাস মহাশয় কফি খেতে খেতে কহিলেন, " আধুনিক জীবনে আমি একটা স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করতে পারলে, বুকে হঠাৎ ব্যথা হলে একটা ইসিজি করিয়েও দেখতে পারি। আমরা যদি বুকে ব্যথা ব্যাপারটা চেপে যায় তাহলে আর কি আধুনিক হলাম, তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এত উন্নতি হয়ে লাভ কোথায়?" কফির কাপে চুমুক দিয়ে ডাক্তার বিশ্বাস আরও জানালেন যে, " আমাদের বুঝতে হবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেকটা এগিয়েছে, তার সঙ্গে আমাদেরও এগোতে হবে। বুকে ব্যথা মানেই গ্যাস এবং সঙ্গে সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ খাওয়া মানেই সমস্যার শেষ এটা ভাবা একদমই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।" একটু...