সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমি ফেমাস হতে আসেনি : দেবালয় ভট্টাচার্য্য


 দেবালয় ভট্টাচার্য্য থেকে স্যার দেবালয় ভট্টাচার্য্য হওয়ার জার্নিটা কিন্তু বেশ কঠিন। শুধু কঠিন বললে বলা ভুল হবে, একটা মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলা যে কতটা কঠিন হতে পারে সেটা যিনি পেরেছেন, তিনিই জানেন। 


একটা ছোট্ট ঘটনা বলি, গত পরশু গঙ্গার ধারে আমরা কয়েকজন বসে আড্ডা দিতে দিতে একজন বলল, ' 'আজ একটা দারুন গান শুনেছি। তোদেরও শোনায়।'' গানটির নাম ' শুভ রাত্রি প্রিয়তমা'। সম্প্রতি ' ড্রাকুলা স্যার' সিনেমায় এই গানটি ব্যবহৃত হয়েছে।  যদিও আমি আগেই শুনেছিলাম তবে বন্ধুদের সঙ্গে শোনার মজা আলাদা। তবে শুধু আলাদাই নয়, এই গানের প্রতিটা কথা, প্রতিটা লাইনের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করে দিতে দিতে যেন কোথায় একটা হারিয়ে গেলাম। একজন তো গানটা শুনতে শুনতে কেঁদেই ফেলল। আর একজন অতি উৎসাহে বলল, '' ভাই সিনেমাটা দেখতে যাবি? গানটা কিন্তু হেব্বি করেছে।''


এই সময়ে দাঁড়িয়ে ঠিক কতজন দর্শক বাংলা সিনেমার গান শুনে সেই সিনেমা দেখতে গিয়েছে, এমনটি কি এই ঘোর কলিযুগে ঘটেছে? না না, একদম মজা করছি না। সত্যি বলছি। এমনটা বহুকাল আগে হত, এখন খুব একটা কিন্তু হয় না। একটা গানের কথা শুনে দর্শক হলে গিয়ে সিনেমা দেখবে, এটা যেমন সম্ভব ঠিক তেমন সেই সিনেমাটি যিনি বানিয়েছেন তিনিও কিন্তু একটা অসাধ্য সাধন করেছেন। বাংলা সিনেমাকে আবার একটা অন্য মাপকাঠি দিয়েছেন। তিনি আবার এই করোনাকালে দর্শকে হলমুখী করেছেন। তিনি হলেন পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য। যদিও তিনি শুধুই পরিচালক নন, বরং বাংলা সিনেমার ইতিহাসে পটপরিবর্তনের অন্যতম কারিগর। এতটুকুও বাড়িয়ে বলছি না। তিনি বরাবরই একটু বাঁধ ভাঙতে ভালবাসেন। আর ভালবাসেন বলেই 'ড্রাকুলা স্যার'-এর মতো সিনেমা তিনি বানাতে পারেন। 



শুধু ড্রাকুলা স্যার কেন, আপনাদের 'অভিশপ্ত নাইটি' খেয়াল আছে ? সেই ডার্ক কমিডি। কিংবা 'রোগা হওয়ার সহজ উপায়'। আর একটু ভেবে যদি বলি, ' বিদায় ব্যোমকেশ'। আবার যদি ওয়েব সিরিজে চরিত্রহীন ১ এবং ২ অথবা 'হলি ফাক' কিংবা 'দুপুর ঠাকুরপো' কিংবা 'মন্টু পাইলট' কিংবা ' পবিত্র পাপিস'। আর কত শুনবেন। তবে চুপিসারে বলে রাখি সামনের মাসেই চরিত্রহীন ৩ আসতে চলেছে। ইতিমধ্যেই টিজার বেরিয়ে গিয়েছে এবং হইচইতে হইচই শুরু হতে চলেছে। 


দেবালয় ভট্টাচার্য্যকে প্রথমেই জিজ্ঞাসা করলাম, ' ড্রাকুলা স্যার নিয়ে কি এতটা আশা করেছিলেন? এই করোনাকালে তো হল হাউসফুল।" তিনি বললেন, " না এতটা আশা করিনি। তবে অবশ্যই একটা তো আশা ছিলই। আমি সবসময় কন্টেন্ট নিয়ে ভাবি। ভাল কাজ হওয়াটা দরকার।" আবার জিজ্ঞাসা করলাম, " এই সিনেমার জন্য কি অনির্বান ভট্টাচার্যকেই ভেবেছিলেন?" তিনি জানালেন, " এই স্ক্রিপটা অনেক বছর ধরেই আমার কাছে ছিল। গত দুবছর আগে যখন এই স্ক্রিপটা ঘষামজা করছিলাম তখনই ওর কথা মাথায় আসে। অনির্বান একজন ভার্সেটাইল অভিনেতা।" একটু থেমে তিনি আরও জানালেন যে, " অনির্বানকে নিয়ে এত কাজ হয়েছে কিন্তু কোথাও ওকে কেউ কেন সিঙ্গেল হিরো হিসেবে যে ভাবিনি সেটাই বুঝতে পারলাম না।"

"আপনার প্রত্যেকটা সিনেমার গান খুব হিট, এটার কারণ কি?" পরিচালক হাসতে হাসতে বললেন যে, " আমি এককালে গ্রামাফোনে খুব গান শুনলাম। প্রত্যেকটা কথা অনুভব করতাম। সেই থেকেই গানের প্রতি একটা ন্যাক তো ছিলই। বলতে পারিস গানটা আমার কাছে আত্মার টান। গান ছাড়া আমি অপারগ। " একটু থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, " আপনার কাছে কি সিনেমার কন্টেন্টই সব? " তিনি হাসতে হাসতে বললেন, " অবশ্যই।ওটাই আসল। ভাল কাজ করতে গেলে কন্টেন্ট তো স্ট্রং হতেই হবে।"  " বাংলায় কি ভাল কাজ হচ্ছে?" পরিচালক একটু থেমে বললেন, " নিশ্চয় হচ্ছে। আর হচ্ছে বলেই তো এখন একটার পর একটা কাজ করে যেতে পারছি। আমি ফেমাস হতে আসেনি, ভাল কাজ করতে এসেছি। আমি যাদের দেখে বড় হয়েছি, তারা চুপচাপ নিজের কাজটা করে চলে এসেছে। আমিও তাই করতে চাই।"


জিজ্ঞাসা করলাম, " চরিত্রহীন ৩ নাকি ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলে দিয়েছে? পরিচালক বললেন, " সবুর করো। এই ডিসেম্বরে আরও হইচই হতে পারে।"

( সাক্ষাৎকার - আদিত্য ঘোষ

ছবি - সংগৃহীত) 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভূতে ভয় পেলেও, ‘ সেক্সি ভূত’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় পাননি সায়ন্তনী

টলিউড ডিভা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ডেবিউ করে ফেললেন দক্ষিণী সিনেমায়। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি আটপৌরেকে সে ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই হোলিতে সিনেমাটি রিলিজ করার পর থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। যদিও তার কারণ, তিনি এই প্রথম একটি ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি ‘ সেক্সি’ ভূতের চরিত্রে এবং তাঁকে নিয়েই গল্পটা গড়ে উঠেছে।  সিনেমার নাম, ‘ চিকাটি গাডিলু চিঠাকোটুন্ডু’। তেলেগু সিনেমায় কাজ করে বেশ উচ্ছ্বসিত সায়ন্তনী। এখানেই শেষ নয়, তেলেগু ইন্ড্রাস্টির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে । ইতিমধ্যে আরও একটি দক্ষিণী সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গল্পটিতে দেখা যায় দুই যুগল জুটি ছুটি কাটাতে গিয়ে আটকে যায় একটি ভৌতিক বাড়িতে।  সেখানে তারা একটি সেক্সি ভূতের পাল্লায় পরে। তারপর গল্প আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেই।  সায়ন্তনী আটপৌরেকে জানালেন , ‘’ আমাকে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজ করে এই সিনেমার ব্যাপারে জানিয়েছেন! তাঁদের আমার চরিত্রটাও ভাল লেগেছে।‘’ ‘’ আপনাকে কেউ যদি রিয়েল লাইকে সেক্সি বলেন, সেটা আপনি কীভাব...

হেমন্তের উষ্ণ পরশ মিশিয়ে তালমায় ফিরল রোমিও জুলিয়েট, ঠোঁটে ঠোঁটে ' ফুল বডি রিলাক্স'

  আদিত্য ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলার রোমিও জুলিয়েটরা দর্শককে রাত জাগিয়ে ওয়েব সিরিজের প্রতিটা পর্ব দেখতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, দুই নবাগত অভিনেতা অভিনেত্রী  বাংলা সিরিজের মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে। বাংলা বাজারে ভাল সিনেমা বা ওয়েবের কদর আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছে পরিচালক অর্পণ গড়াই। ক্যামেরার পিছনে এবং সামনে আরও একবার উজ্জ্বল ভূমিকার অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলা সিনেমার  'ডন' অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবুও তালমার রোমিও এবং জুলিয়েট যথাক্রমে দেবদত্ত এবং হিয়া বাঙালি দর্শক মননে মিষ্টি প্রেমের উপাখ্যান হয়ে থেকে যাবে চিরকাল। যেখানে একটা সহজ সরল প্রেমকে স্রেফ টুকে দেওয়া হয়েছে সিনেমার পর্দায়। কোনও বাড়তি অলঙ্করণ নেই। কোনও উপমা-উপঢৌকন নেই। স্রেফ জীবনকে পর্দায় দেখালে যেমন মনে হয় ঠিক সেইরকম।  অভিনেতা দেবদত্ত রাহার হাতেখড়ি থিয়েটারের অভিনয় দিয়ে। তবে এই মুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বহুদূরে। তিনি আটপৌরেকে ফোনে জানালেন যে, ' থিয়েটার ছেড়েছি প্রায় তিন বছর, এখন বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। বেশ কিছু সিরিয়ালের প্রস্তাব পেলেও এই মুহূর্তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের জন্যই ফোকাস করছি।' মফঃস...

রোগ চিনে নেওয়ার বিভিন্ন উপায় বাতলে দিচ্ছেন ডাক্তার সোমনাথ বিশ্বাস

হৃদয়ঘটিত বিভিন্ন রোগের অশনিসংকেত বুঝবেন কী করে-( পর্ব ১) খাই খাই বাঙালির বুকে ব্যথা হবে না, এও কি সম্ভব? যুগে যুগে বাঙালি জাতি নিজেরাই ডাক্তারি করে মোটামুটি বুঝে নিয়েছে বুকে একটু-আধটু ব্যথা মানেই ওটা গ্যাসের সমস্যা। আসলে বাঙালি জাতি এটা মানতেই অস্বীকার করে যে বুকে ব্যথা হৃদয় ঘটিত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সেটা অনেক সময় হার্ট এট্যাক এর লক্ষণও হতে পারে। উঁহু, অযথা ভয় পাওয়ার জন্য নয় এই লেখা নয়। উপরন্তু এই লেখা শুধুমাত্র একটা প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তবে ডাক্তার বাবু বিশ্বাস মহাশয় কফি খেতে খেতে কহিলেন, " আধুনিক জীবনে আমি একটা স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করতে পারলে, বুকে হঠাৎ ব্যথা হলে একটা ইসিজি করিয়েও দেখতে পারি। আমরা যদি বুকে ব্যথা ব্যাপারটা চেপে যায় তাহলে আর কি আধুনিক হলাম, তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এত উন্নতি হয়ে লাভ কোথায়?" কফির কাপে চুমুক দিয়ে ডাক্তার বিশ্বাস আরও জানালেন যে, " আমাদের বুঝতে হবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেকটা এগিয়েছে, তার সঙ্গে আমাদেরও এগোতে হবে। বুকে ব্যথা মানেই গ্যাস এবং সঙ্গে সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ খাওয়া মানেই সমস্যার শেষ এটা ভাবা একদমই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।" একটু...