তাঁর গল্পটা ফিরে আসার গল্প! শুধুই কি গল্প ? না, এই গল্পগাঁথাটা হয়ত অনেকের কাছেই
অনুপ্রেরনা হয়ে যাবে! বাঙালি মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে অনেক স্বপ্ন থাকলেও
বিভিন্ন কারণবশত সেই স্বপ্ন পূরণ হয়ে ওঠে না।
কিন্তু কেউ কেউ সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য লড়ে যায়, কেউ কেউ সেই লড়াইয়ে জয়ী হয়ে
ওঠে আবার কেউবা মাঝপথেই সেই লড়াই ছেড়ে চলে যায়।
আলোলিকা সারিদে (আরায়না) সেই জয়ী
মুখগুলোর মধ্যে একজন। তাঁর সোজাসাপটা ভাবভঙ্গিই বলে দেয় যে তিনি লড়াই করতে এসেছেন।
তিনি কোনও মতেই হার স্বীকার করতে প্রস্তুত নয়। কোনও ভাবেই তিনি তাঁর স্বপ্নের সঙ্গে কমপ্রমাইজ করতে
প্রস্তুত নয়। তিনি হয়ত অনেকের কাছেই এখন আদর্শ, তবে তাঁর এই সাফল্যে তিনি
বিন্দুমাত্র আবেগতাড়িত নয়। বরং তিনি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চান। আরও আরও পথ
পেরিয়ে একদম স্পটলাইটের নীচে এসে দেখিয়ে দিতে চান, আমিও পারি।
কী ভাবছেন ? কার এত প্রশংসা করছি। তাহলে একটু ভেঙে বলি। মিসেস ইন্ডিয়া প্রাইড
অফ নেশন উইনার ফেস অফ ইস্ট ২০১৯ হলেন আলোলিকা সারিদে। শুধু তাই নয়, বোল্ড অ্যান্ড
বিউটিফুল সাব টাইটেলরও উইনার হয়েছেন আলোলিকা। সম্প্রীতি গুরগাও আয়োজিত বিবাহিত
নারীদের সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। প্রায় সারা
দেশের মধ্যে সাত হাজার প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে তিনি জিতে নিয়েছেন সেরার শিরোপা। তিনি তাঁর স্বপ্নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে
গিয়েছেন।
ছোট থেকেই তাঁর ইচ্ছে ছিল অভিনয় করার। কোনও বিখ্যাত ব্রান্ডের মডেল হওয়ার। কিন্তু আলিপুরদুয়ারের
মেয়ে আলোলিকা আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত বাঙালি মেয়ের মতোই তাঁর সেই সাধারন স্বপ্নকে
সেদিন অসাধারণ করতে পারেনি। তাই বলে যে লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তাও
না। চাকরি সূত্রে কলকাতায় আসা একজন ‘টি- টেস্টার’ হিসেবে অর্থাৎ একজন চায়ের স্বাদ
পরীক্ষক হিসেবে তিনি তাঁর পেশা শুরু করেন। তবে তাঁর নেশা তো অভিনয়। সেটা কী করে
ভুলতে পারেন। অভিনেতা চন্দন সেনের সঙ্গে শুরু করেন গ্রুপ থিয়েটার। প্রায় বছর ছয়েক
টানা থিয়েটারে থাকার পর সাময়িক কিছুটা বিরতি। যদিও সেটা সংসার করার তাগিদে।
কথায় আছে, যিনি রাঁধেন তিনি চুলও বাঁধেন। ঠিক সেই কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে
দিয়েছেন তিনি। তিনি করে দেখিয়েছেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল বিখ্যাত একজন হয়ে ওঠা, সেই পথে
তিনি প্রথম ধাপ অতিক্রম করে গিয়েছেন। তাও তাঁর মধ্যে সেই অহংকারের বিন্দুমাত্র
লেশটুকু নেই। সংসার সামলে তিনি আবার থিয়েটারে ফিরেছেন। আবার মডেলিং করার কথা
ভেবেছেন এবং বাকিটা তো আপনারা জেনে গিয়েছেন।
একটি ওয়েব সিরিজ এবং একটি বাংলা ধারাবাহিকে অভিনয় করলেও তিনি সেটা প্রকাশ করতে
চান না। কারণ তিনি মনে করেন এখনও তেমন কিছু করা হয়নি। এখনও মডেলিং-এর অনেক কিছু
বাকি। এখনও অভিনয় করার রসদ বাকি। তবে তিনি পুরোটা ভাঙতে না চাইলেও, এইটুকু বললেন
যে ভাল খবর আসছে! শুধু তাই নয়, অভিনয়ের প্রয়োজনে তিনি যেকোনও চরিত্র করতে রাজি।
তিনি
কোনও ন্যাকামির ধার ধারেন না। তাঁর ওই চাঁচাছোলা ভঙ্গিটাই একদম একটা বাঊন্সার বলকে
মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিতে পারে।সবশেষে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘’ বাংলা ইন্ড্রাস্টির প্রিয় পুরুষ কে ?’’ তিনি একটা
লম্বা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললেন, ‘’ যীশু সেনগুপ্ত!’’
( সাক্ষাৎকার- আদিত্য ঘোষ
ছবি- সংগৃহীত)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন