একের পর এক স্ট্রেট ড্রাইভ। বিগত কয়েক বছর ধরে শুধু কাজ আর কাজ। এর বাইরে তিনি কিছু ভাবেননি এবং আজও ভাবতে চাইছেন না। কাজের প্রতি তাঁর কোনও ক্লান্তি নেই। একসঙ্গে দুই তিনটে ছবির কাজও করতে হলে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। শুধুমাত্র প্রোমোশনে যাওয়া নিয়ে তাঁর একটু আলস্য। আটপৌরের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানালেন, ‘ কাজের জন্য আমি দিনরাতের ক্লান্তিকেও দূরে ঠেলে দিতে পারি তবে প্রমোশনে যেতে আমার একটু আলস্য লাগে কিন্তু যেতে তো হয়, ওটাও আমার কাজের মধ্যে পড়ে।‘’ হিসেব কষলে দেখা যাবে গত ছয়মাসে অন্তত তাঁর পাঁচটি কাজ ওয়েব এবং বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছে এবং আরও আট থেকে দশটি কাজ মুক্তির অপেক্ষায়। প্রসঙ্গত তিনি বেশ কয়েকবার ভেবে জানালেন যে তাঁর কোন কোন কাজ এই বছর আসতে চলেছে। যে অভিনেতা ভেবে বলেছেন যে তাঁর কাজের সংখ্যা কত, সেই অভিনেতা কি ‘সুপারস্টার’ বলার যোগ্য? তবে অনির্বাণ চক্রবর্তী ওইসব তমকায় গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। তিনি অভিনয়ের জন্য আজও পরিশ্রম করে যেতে চান এবং আগামী দিনেও ভাল কাজের জন্য পরিশ্রমকেই গুরুত্ব দিতে চান।
গত বছরের শেষের দিকে শাস্ত্রী, খাদান, চালচিত্র এবং অপরিচিত ইতিমধ্যেই বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছে। ওয়েব প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে ফেলুদায় গোয়েন্দাগিরি এবং মিসিং লিঙ্ক। এখানেই শেষ নয় এই বছরের শুরুতে মুক্তি পেয়েছে সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই। এছাড়া ওয়েবে মুক্তি পেয়েছে একেন বাবুর পরবর্তী অধ্যায়। এতকিছুর পরে তিনি অত্যন্ত বিনয়ী হয়ে বললেন, ‘ আমার কোনও পিআর নেই। আমি নিজের কাজটা নিজেই করি।‘ তাঁকে পাল্টা জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ পরপর এতগুলো কাজ, এতগুলো চরিত্র! কখন নিজের জীবনটা গুলিয়ে যায় না?’ তিনি হাসলেন। তারপরে জানালেন, ‘ অভিনয়টা তো আমার পেশা। সেটাকে জীবনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেললে হবে।‘ এক সময়ে একেন বাবু তাঁকে লাইম লাইটের নীচে এনেছে তবুও তিনি বাস্তব জীবনে একেন বাবুকে অনির্বাণের উপর উঠতে দেননি। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ এখনও কি বেছে কাজ করার ধারা বজায় রেখেছেন?’ তিনি বললেন, ‘ হ্যাঁ। ওটা রাখব। আমি বরাবর একটু বেছে কাজ করতে ভালবাসি। চরিত্রটা কতটা ছোট বা বড় সেটা আমি দেখি না, বরং দেখি সেই চরিত্রের গুরুত্ব কতটা।‘
এই বছর মুক্তির অপেক্ষায় তাঁর অভিনীত চন্দ্রবিন্দু, সান্তা, স্বার্থপর, মৃগয়া, মহানগর, রাস। এছাড়া আরও বেশ কিছু ছবি সহ ওয়েব সিরিজের কাজ। একের পর এক ছবি। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ তাঁর কি গোল্ডেন টাইম চলছে?’ তিনি হাসতে হাসতে বললেন, ‘ এত কিছু জানি না। ভাবিওনি। কাজ করার তাগিদে সবটুকু করে যাচ্ছি।‘ জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ বাংলা ভাষার পাশাপাশি কি বাইরে গিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা আছে ?’ তিনি জানালেন, ‘ ভাল চরিত্র পেলে নিশ্চয় করব। তবে একটা আক্ষেপ আছে যে একটা কাজ বেশ পছন্দ হয়েছিল কিন্তু সময়ের ম্যাচিং করতে পারিনি বলে আর হয়ে ওঠেনি।‘ তাঁকে আবার প্রশ্ন করলাম, ‘ কখন যদি সুযোগ আসে পাকাপাকি ভাবে বাইরে গিয়ে কাজ করবেন ?’ তিনি জানালেন, ‘ মাতৃভাষায় কাজ করার সুযোগ হারাতে পারব না।‘
ঘুরতে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, ‘ একটু দূরে কোনও পাহাড়ে যেতে ইচ্ছে করছে। সবুজ পাহাড় হবে। সেখানে দেখার মতো বিশেষ কিছু না থাকলেও হবে। চুপচাপ বসে থাকব। পাহাড় আমার বরাবরই খুব প্রিয়। তবে এখন আর ভিড় পছন্দ হয় না। নির্জনতা ভাল লাগে।‘
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন