বাংলা ওয়েব সিরিজের মাইলস্টোন 'একেন বাবু' এই পুজোয় পাঁচে পা দিতে চলছে। আর আমাদের প্রিয় একেন বাবু আবারও উজ্জ্বল হয়ে দর্শকদের মনের মণিকোঠায় আসতে চলেছেন। সদা হাস্য একেন বাবু সবাইকে স্যার বলে সম্বোধন করলেও তাঁকে আমার স্যার বলেই ডাকতে ইচ্ছে করছিল। কেন জানি না বারবার মনে হচ্ছিল এই মানুষটা হয়ত একেবারেই গল্পের মতো। যিনি সবসময় মজা করতে ভালবাসেন, ভালবাসেন রহস্যের জট খুলতে। একেন বাবু ওরফে অনির্বান চক্রবর্তী যদিও বাস্তব জীবনে অনেকটা আলাদা। তিনি হাসতে হাসতে আটপৌরকে জানালেন যে, " আমি একদমই গল্পের চরিত্রের মতো নয়। আসলে চরিত্রের প্রয়োজনে কিছু নিজস্ব স্বত্বা চলেই আসে। কিন্তু আমি বাস্তব জীবনে ঠিক একেন বাবুর মতো নয়!" শুধু তাই নয় একেন বাবুর এই বিরাট সাফল্য অনির্বান-এর একদমই প্রত্যাশিত ছিল না। তিনি জানালেন যে, " আমি সবসময়ই যে কোনও কাজই মন দিয়ে করি। ঠিক সেভাবেই একেন বাবুর কাজ শুরু করেছিলাম। তারপর দর্শকেরা যে এইভাবে একেন বাবুর ভক্ত হয়ে যাবে সেটা আশা করিনি।"
তিনি ছোট বয়স থেকেই মঞ্চে অভিনয় করেন। মফঃস্বলে বড় হয়ে উঠেছেন, কিন্তু কোনওদিনই ভাবেননি যে অভিনয়কেই তিনি পেশা হিসেবে বেছে নেবেন। প্রায় চোদ্দ বছর শিক্ষকতা করেছেন। তাঁর অধ্যাপনার বিষয় ছিল ইনফরমেশন টেকনোলজি। বেসরকারী ইঞ্জিনিয়ার কলেজে পড়িয়েছেন, পড়িয়েছেন ম্যানেজমেন্ট কলেজেও। শুধু তাই নয়, শিক্ষক হিসেবেও বেশ জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। কিন্তু এমন একটা সময় এলো যখন তিনি মনে করলেই এইবার নেশাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিতে হবে। সেই সময় থেকে তিনি আর পিছনে ফিরে তাকাননি।
'মাঙ্গলিক', ' চেতনা' , মুখোমুখি', সনসৃতি , মতো নাট্যদলে কাজ করেছেন তিনি। ' গোপাল অতি সুবোধ বালক', 'মেফিস্টো', 'আর্ট', 'ঘটক বিদায়', 'তুঘলক', -এর মতো নাটকে অভিনয় করেছেন। তার প্রথম বাংলা ছবি ' ফড়িং'। কাজ করেছেন হিন্দি ছবি, ' মেরি পিয়ারী বিন্দু'তেও। শুধু তাই নয় তার ঝুড়িতে রয়েছে ,' মিনতি মাসি', 'মুখোশ', 'লাভ আজ কাল পরশু', 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন' এর মতো ছবি। পুজোয় আসতে চলেছে , 'এফ.আয়. আর'। এখানেই শেষ নয় , ' ফেলুদা ফেরত' তাঁকে দর্শকেরা নতুন জটায়ু নামে চিনে ফেলছেন। 'রবীন্দ্রনাথ এখানে খেতে আসেনি', 'লালবাজার' এর মতো ওয়েব সিরিজে তাঁর কাজ সবার মনে দাগ কেটে ফেলেছে। তবে চুপিচুপি এই খবরও দিয়ে রাখি শুধু বাংলায় নন একেন বাবু এবার হিন্দি ওয়েব সিরিজেও দেখা যাবে তাঁকে। যদিও তাঁর কথায়, " আমি ওইসব কোনওদিন ভাবিনি। অভিনয়টা করে যেতে চাই শুধু।" একটু থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, " কমার্শিয়াল এবং আর্ট ফিল্ম দুই ধরনের সিনেমাতেই আপনাকে দেখা গিয়েছে, আপনি তো বেশ ফ্লেক্সিবেল!" তিনি হাসতে হাসতে বললেন, " আসলে এখন সময়টা বদলেছে। দুই ধরনের সিনেমায় অবাধ যাতায়াত। এখন অতো বাধবিচার নেই। আর আমি অভিনেতা মাত্র, অত বাধবিচার করলে চলবে? অভিনয়টা করে যেতে হবে।"
জিজ্ঞাসা করলাম, "প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র কি?" তিনি একবাক্যে বললেন," ফেলুদা!" একটু থমকে বললাম," আর একেন বাবু?" ফোনের ওপার থেকে শুধু হাসির শব্দ পেলাম..
(সাক্ষাৎকার-আদিত্য ঘোষ
ছবি- সংগৃহীত)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন